|
‘কনসিভ করার পর জানতে পারি স্বামী অন্য মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছে’
নতুন সময় ডেস্ক
|
![]() ‘কনসিভ করার পর জানতে পারি স্বামী অন্য মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছে’ প্রশ্ন: আমার বয়স ২৭ বছর। কনসিভ করার পর জানতে পারি স্বামী অন্য মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছে। স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছি, সে জানিয়ে দিয়েছে সে ওই মেয়েকেই বিয়ে করবে। আমার পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না। ফলে তারা চাইলেও আমাকে সাপোর্ট করতে পারবে না। প্রচণ্ড মানসিক চাপে আমি অসুস্থ হয়ে গেছি। কী করবো? উত্তর: ১. ডাক্তারের সাথে কথা বলুন: অবিলম্বে একজন গাইনি ডাক্তারের সাথে দেখা করুন। আপনার মানসিক চাপের কারণে শারীরিক যে অসুস্থতা দেখা দিয়েছে, সে সম্পর্কে ডাক্তারকে জানান। গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপ মা ও শিশু দুজনের জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। ডাক্তার আপনাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও ঔষধ দিতে পারবেন। ২. মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সাহায্য নিন: একজন কাউন্সেলর বা থেরাপিস্টের সাথে কথা বলতে পারলে তা আপনার জন্য খুব উপকারী হবে। তারা আপনাকে এই মানসিক আঘাত সামলে উঠতে এবং ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ভাবতে সাহায্য করবে। যদি আর্থিক সমস্যা থাকে, অনেক সংস্থা বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে থাকে। ৩. বিশ্বস্ত কারো সাথে কথা বলুন: পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না হলেও তাদের মানসিক সমর্থনের প্রয়োজন আপনার আছে। আপনার বাবা-মা বা এমন কোনও বন্ধু বা আত্মীয়ের সাথে কথা বলুন যিনি আপনাকে বুঝবেন এবং মানসিক জোর দেবেন। নিজের কষ্ট ভেতরে চেপে রাখবেন না। ৪. আপনার আইনগত অধিকার সম্পর্কে জানুন: দেনমোহর আপনার আর্থিক এবং আইনগত রক্ষাকবচ। আপনার স্বামী আপনাকে দেনমোহর পরিশোধ করতে আইনত বাধ্য, সে আপনাকে ডিভোর্স দিক বা দ্বিতীয় বিয়ে করুক। আইন অনুযায়ী আপনার স্বামী আপনার এবং আপনার গর্ভের সন্তানের ভরণপোষণ দিতে বাধ্য। ডিভোর্স হলেও, ইদ্দতকালীন (সাধারণত ৩ মাস) ভরণপোষণ এবং সন্তানের ভরণপোষণ দেওয়ার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে তার। সন্তানের বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত (মেয়ের ক্ষেত্রে বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত) তার পড়াশোনা ও অন্যান্য খরচ বহন করা বাবার আইনগত দায়িত্ব। আপনার গর্ভের সন্তান আইনত আপনার স্বামীর সন্তান হিসেবেই পরিচিতি পাবে এবং তার সম্পত্তিতেও তার অধিকার থাকবে। ৫. আইনি সহায়তা নিন: আপনার যেহেতু আর্থিক সীমাবদ্ধতা আছে, তাই বিনামূল্যে আইনি পরামর্শ ও সহায়তার জন্য নিচের সংস্থাগুলোর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন: জেলা লিগ্যাল এইড অফিস (District Legal Aid Office) (প্রতিটি জেলা জজ আদালতে সরকারি খরচে আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য এই অফিস রয়েছে), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (BLAST), আইন ও সালিশ কেন্দ্র (ASK)। ৬. স্বামীর সাথে শেষবারের মতো কথা বলুন (যদি সম্ভব হয়): যদি মনে করেন সুস্থভাবে কথা বলা সম্ভব, তাহলে তৃতীয় কোনো নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে (যেমন পরিবারের কোনো গুরুজন) সাথে নিয়ে স্বামীর সাথে বসতে পারেন। সন্তানের দায়িত্ব ও আপনার আইনগত পাওনা সম্পর্কে তাকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিন। তার সিদ্ধান্তের কারণে আপনার এবং সন্তানের ভবিষ্যৎ যেন অনিশ্চিত না হয়, সেটা নিশ্চিত করা আপনার অধিকার। ৭. আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার কথা ভাবুন: যদিও এই মুহূর্তে এটা ভাবা কঠিন, তবুও ধীরে ধীরে নিজেকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার একটি পথ খুঁজে বের করতে হবে। আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা বা অন্য কোনো দক্ষতা থাকলে, সেটিকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় তা নিয়ে ভাবুন। এই মুহূর্তে ছোট কোনও কাজ দিয়ে শুরু করলেও তা আপনাকে আত্মবিশ্বাস দেবে।
|
| পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |
