|
কুড়িগ্রামের উলিপুরে সরকারি যাতায়তের রাস্তা বন্ধ করে দেয়ায় সংঘর্ষে জীবনহানির আশংকা
আহম্মেদুল কবির, কুড়িগ্রাম
|
![]() কুড়িগ্রামের উলিপুরে সরকারি যাতায়তের রাস্তা বন্ধ করে দেয়ায় সংঘর্ষে জীবনহানির আশংকা গতকাল ২সেপ্টেম্বর দুপুরে সরে জমিন গিয়ে জানা জায় উল্লিখিত রাস্তাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট মামলায় হাজিরা দিতে বাদী- বিবাদী দু'পক্ষই গেছে আদালতে। গত ১ সেপ্টেম্বর লাকাবাসীর পক্ষে উল্লিখিত যাতায়াতের রাস্তার গর্ত পূরন করে উত্তোলিত ঘর উচ্ছেদের জন্য মৃত সাহেব আলীর পুত্র মোজাম্মেল হক মানিক নামের একজন আদালতে পূনঃরায় উচ্ছেদ মামলা দায়ের করেছেন। ৩১ আগস্ট একই ঘটনায় উলিপুর থানায় একটি জিডি ও একটি প্রোসিউশন মামলা দায়ের করা হয়েছে। উক্ত রাস্তা দিয়ে যাতায়ত করতে না পারায় ভুক্তভোগী এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা আশ্চর্য হচ্ছি সরকারি যাতায়তের রাস্তায় গর্তখুঁড়ে নির্মান সামগ্রী তুলে নিয়ে যাওয়া এবং একই সঙ্গে রাস্তা বন্ধ করে দেয়ার বিষয়টি সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে বারবার অভিযোগ করা হলেও কেউই এগিয়ে আসছে না বিষয়টি সমাধানের জন্য। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অপর এক গ্রামবাসি বলছেন, সরকারি যাতায়াতের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি কারির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ থাকলেও কার্যত কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে না। উল্লিখিত যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দেয়ার বিষয়ে উলিপুর থানা, পৌর প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারসহ একাধিক সরকারি দপ্তরে এলাকাবাসির পক্ষে দায়েরকৃত একাধিক অভিযোগ থেকে জানা যায়, কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌরসভা এলাকার রামদাস ধনিরাম মৌজার উলিপুর- থেতরাই রাস্তা হতে মাঝিপাড়া পোদ্দার পাড়া হয়ে জুম্মারহাট রাস্তার চড়ুয়া পাড়া পর্যন্ত ব্রিটিশ আমলের একটি সরকারি রাস্তা যা উলিপুর পৌরসভার আওতায় পাকা করণের কাজ করা হয়েছে। ওই এলাকার একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সাথে মৃত সাহেব আলীর পুত্র মোজাম্মেল হক মানিক পরিবারের পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বিরোধ চলে আসছে। এরই প্রেক্ষিতি সন্ত্রাসী ওই গ্রুপটি মানিক মিয়া ও তার পরিবারের লোকজনকে নিজ বাড়িতে প্রেবেশ প্রতিহত করতে গিয়ে উল্লিখিত সরকারি রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়ার পরিকল্পনা করে রাস্তার ইট, বালু ও খোয়া তুলে নিয়ে গিয়ে নিজেটাই একটি বিকল্প রাস্তা তৈরী করে এবং একই সাথে সরকারি রাস্তাটির দুই প্রান্তে দুটি ঘর তুলে রাস্তাটি সংকুচিত করে দখল করে নেয়। এসংক্রান্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির ইতোপূর্বে উল্লিখিত রাস্তাটির জবর দখল মুক্ত করতে উলিপুরের সহকারী কমিশনার ( ভুমি) বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করেন। কিন্তু এযাবৎ দখলমুক্ত করা হয়নি। বিষয়টির সমাধান চেয়ে ভুক্তভোগী গ্রামবাসীর পক্ষে মৃত সাহেব আলীর পুত্র মোজাম্মেল হক মানিক প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করলেও প্রশাসনের কেউই সমাধানে এগিয়ে আসেনি। ফলে বিষয়টি নিয়ে একাধিক মামলা ও মিথ্যা মামলারও উদ্বোভ হয়েছে এবং এলাকাবাসী আশংকা করে বলেছে সৃষ্ট ঘটনায় যে কোন মহুর্ত্বে জীবন নাশেরও আশংকা রয়েছে। সর্বশেষ গত ২৮ আগস্ট/২৫ বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হওয়ায় ওই সন্ত্রাসী গ্রুপের প্রোরচনায় ৫ জন নারী সন্ত্রাসী এলাকার মৃত: জয়নাল আবেদিন (মন্টু ডিলার)'র স্ত্রী জাহানারা বেওয়া, আ: মান্নানের স্ত্রী রেবা বেগম, জাকির হোসেন (বড়বাবু)'র স্ত্রী গোলাপি বেগম, আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী শারমিন বেগম ও জয়নাল আবেদিনের কন্যা হিরা বেগম দলবদ্ধ হয়ে উক্ত যাতায়াতের রাস্তাটির মধ্যখানে গর্ত খুঁড়ে গ্রামের মানুষের স্বাভাবিক যাতায়ত একেবেই বন্ধ করে দেয়ায় ওই ৫ নারী সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে উলিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগকারী মোজাম্মেল হক মানিক অভিযোগ করে এও জানান, ওই ৫ নারী এতোটাই ঝগরাটে এবং বে- পরোয়া যে আমরা গ্রামবাসী যে কেউ রাস্তায় উঠলেই হাতে ধারলো দা- কুড়াল ও কাঁচি নিয়ে ধাওয়া করে। বাঁধা দিতে গেলে নিজের গলায় নিজেরাই ছুড়ি ধরে, আরও বিপদজনক ঘটনা ঘটায়। তিনি এও বলেন, রাস্তা বন্ধ থাকায় আমরা সকল গ্রামবাসী এক প্রকার গৃহবন্দী হয়ে পড়েছি। সমাধানের জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে বারবার অভিযোগ করছি। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। প্রশাসনের ভাব দেখে মনে হচ্ছে যতক্ষণ পর্যন্ত গ্রামে দু- চারটে মার্ডার হয়নি ততোক্ষণ পর্যন্ত তাদের টনক নড়বে না। সমাধানের জন্য যখনই থানায় যাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, এটা আমার কাজ নয়-পৌরসভার। পৌর প্রশাসক বলেন- এটা ইউএনও'র। ইউএনও বলছেন, এটা থানার। ভুক্তভোগী গ্রামবাসী কার কাছ থেকে আইনগত সুবিধা পাবো এ নিয়ে পড়ছি বিপাকে। আর এদিকে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সর্বশেষ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্তের জন্য থানার এস আই মাদুদ সাহেবকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। |
| পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |
