ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
শুক্রবার ৭ নভেম্বর ২০২৫ ২১ কার্তিক ১৪৩২
বাজারের ৬০ শতাংশ মোবাইল অবৈধ!
নতুন সময় প্রতিবেদক
প্রকাশ: Thursday, 6 November, 2025, 9:43 PM
সর্বশেষ আপডেট: Thursday, 6 November, 2025, 9:52 PM

বাজারের ৬০ শতাংশ মোবাইল অবৈধ!

বাজারের ৬০ শতাংশ মোবাইল অবৈধ!

বাংলাদেশের মোবাইল ফোন উৎপাদন শিল্পে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) বাস্তবায়নের মাধ্যমে। অবৈধ ও নিবন্ধনবিহীন হ্যান্ডসেট ব্যবহার বন্ধ করতে আগামী ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে এই কার্যক্রম চালু করবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে মোবাইল ইম্পোর্টার্স অব বাংলাদেশ (এমআইওবি)।

বুধবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর রাওয়া ক্লাবের একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা বলেন, এনইআইআর চালুর মাধ্যমে বাজারে শৃঙ্খলা ফিরবে, সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে এবং গ্রাহক সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন এমআইওবি সভাপতি জাকারিয়া শাহিদ। তিনি জানান, ‘দেশের মোবাইল বাজারের প্রায় ৬০ শতাংশ এখন অবৈধ বা ‘গ্রে’ হ্যান্ডসেটের দখলে। এতে বৈধ উদ্যোক্তাদের হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ ঝুঁকিতে পড়েছে এবং সরকার বছরে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। পাশাপাশি এসব ফোনের মাধ্যমে আর্থিক প্রতারণা ও নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।’


তিনি আরও বলেন, ‘এইআইআর চালু হলে সরকারের হাজার কোটি টাকার রাজস্ব নিশ্চিত হবে, বাজারে শৃঙ্খলা ফিরবে এবং গ্রাহক সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। এটি দেশের মোবাইল শিল্পে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।’

জাকারিয়া শাহিদ জানান, দেশে বর্তমানে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ১৭টি মোবাইল ফোন কারখানা সক্রিয়ভাবে উৎপাদন করছে। এসব কারখানায় প্রায় ২,৫০০ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ হয়েছে এবং ১ লাখেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া মোবাইল সম্পর্কিত ব্যাটারি, চার্জার, কেবল, প্যাকেজিং ও প্রিন্টিং শিল্পে আরও প্রায় ১,৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে, যেখানে ৫০ থেকে ৬০ হাজার মানুষ কর্মরত।

দেশজুড়ে প্রায় ২০ হাজার অনুমোদিত বিক্রেতা ও ৮০ হাজার কর্মী সরাসরি যুক্ত। উৎপাদন ও বিতরণ পর্যায়ে মোট ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত। ফলে প্রায় ৮ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই খাতের ওপর নির্ভরশীল।


তিনি অভিযোগ করেন, কিছু অসাধু গোষ্ঠী এনইআইআর নিয়ে ভয় ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। এরা ‘লাগেজ পার্টি’ নামে পরিচিত—যারা ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে নিম্নমানের ও রিফার্বিশড ফোন আমদানি করে জনগণকে প্রতারিত করছে।

এমআইওবি সভাপতি বলেন, ‘দেশীয় উৎপাদনকে উৎসাহ দিতে সরকার কিছু ভ্যাট ও কর ছাড় দিয়েছে, যা কোনো বৈষম্য নয় বরং উন্নয়নশীল দেশগুলোর সাধারণ শিল্পনীতি। তবে আমদানিকৃত বৈধ ফোন ও স্থানীয় উৎপাদনের ট্যাক্স পার্থক্য আরও কমানো যেতে পারে, যাতে দুই খাতই ভারসাম্যপূর্ণভাবে টিকে থাকতে পারে।’

তিনি আরও জানান, দেশে উৎপাদিত ফোনের দাম তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী। ডলার ও উপকরণের দাম ৬০% বেড়েও স্থানীয় উৎপাদকরা দাম বাড়াননি। অন্যদিকে ‘গ্রে’ ফোনের দাম কম কারণ তারা ট্যাক্স ফাঁকি দেয় এবং নিম্নমানের পণ্য বিক্রি করে।

এনইআইআর চালু হলে গ্রাহক সহজেই জানতে পারবেন তাদের ফোন বৈধভাবে আমদানি বা উৎপাদিত কিনা। এতে মিলবে অফিসিয়াল ওয়ারেন্টি, সফটওয়্যার আপডেট, নিরাপদ নেটওয়ার্ক ব্যবহারের নিশ্চয়তা এবং হারানো ফোন ট্র্যাক বা বন্ধ করার সুবিধা।

এমআইওবি সহ-সভাপতি রেদওয়ানুল হক বলেন, ‘একটি ব্র্যান্ড ছাড়া বাকি সব বৈশ্বিক ব্র্যান্ড এখন বাংলাদেশে উৎপাদন করছে। দেশের ৯০% চাহিদা স্থানীয় উৎপাদনেই পূরণ হচ্ছে। শতভাগ সক্ষমতা থাকলেও মাত্র ৪০% ব্যবহার করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেরিতে হলেও এনইআইআর চালু হওয়া স্বস্তির খবর। সফটওয়্যারগত কিছু সমস্যা প্রথমে থাকলেও তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। যেকোনো পরিস্থিতিতেই যেন এটি আর কখনও বন্ধ না হয়।’

তিনি জানান, বর্তমানে দেশের মোবাইল ফোন বাজারের আয়তন প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। এনইআইআর সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে বাজারে আরও ১৫ হাজার কোটি টাকার প্রবৃদ্ধি যুক্ত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অনার ব্র্যান্ডের স্থানীয় উৎপাদক জহিরুল ইসলাম, স্যামসাং বাংলাদেশের অনুমোদিত পরিবেশক এক্সেল টেলিকমের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সাইফুদ্দিন টিপু, ভিভো বাংলাদেশের প্রতিনিধি ও এমআইওবি অর্থ সম্পাদক ইমাম উদ্দীন, এমআইওবি প্রধান নির্বাহী মনিরুল ইসলাম, বিডিএমএ মহাসচিব আব্দুল্লাহ হারুন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক দেব প্রসাদ কপুরিয়া রাহুল।

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status