|
বিশ্বের বৃহত্তম পরিবেশ পুরষ্কার ‘দ্য আর্থশট-২০২৫’ জিতলো ফ্রেন্ডশিপ এনজিও
নতুন সময় ডেস্ক
|
![]() বিশ্বের বৃহত্তম পরিবেশ পুরষ্কার ‘দ্য আর্থশট-২০২৫’ জিতলো ফ্রেন্ডশিপ এনজিও যুক্তরাজ্যের মহামান্য প্রিন্স উইলিয়াম-এর পক্ষ থেকে এই পুরষ্কার প্রদান করা হয়। ফ্রেন্ডশিপ-এর পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন প্রতিষ্ঠাতা রুনা খান। মহামান্য প্রিন্স উইলিয়াম বলেন, “২০২০ সালে দি আর্থশট প্রাইজ প্রতিষ্ঠা করার সময় আমাদের লক্ষ্য ছিল আগামী দশ বছরকে এমন এক দশকে পরিণত করা, যখন আমরা পৃথিবীকে আরও ভালো কিছুর দিকে রূপান্তরিত করব। এই মিশনকে এগিয়ে নিয়েছে সেই অসাধারণ আশাবাদ, যা আমরা বিজয়ীদের মধ্যেও অনুভব করেছি। তাদের কাজ প্রমাণ করে যে, অগ্রগতি সম্ভব আর তারাই আসলে বিশ্বের সত্যিকারের ‘অ্যাকশন হিরো’। পুরষ্কার গ্রহণ করে ফ্রেন্ডশিপ-এর প্রতিষ্ঠাতা রুনা খান বলেন, “দ্য আর্থশট প্রাইজ প্রাপ্তি আমাদের জন্য এক বিরাট সম্মান। এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দৃঢ়তা ও উদ্ভাবনকে তুলে ধরে। এই অর্জন সবার, বিশেষ করে জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্থ জনগোষ্ঠী এবং যাদের সাথে এবং যাদের জন্য আমরা কাজ করি। এই পুরস্কার আমাদের অঙ্গীকার ও দায়িত্বকে আরও শক্তিশালী করেছে এবং আমরা আগামীতে আরও নিবেদিতভাবে কাজ চালিয়ে যাব। ফ্রেন্ডশিপ তাদের চার অঙ্গীকার; জীবন রক্ষায় প্রচেষ্টা, দারিদ্র্য বিমোচন, জলবায়ু অভিযোজন এবং সক্ষমতাবৃদ্ধি। এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জলবায়ু কর্ম, অন্তর্ভুক্তিমূলক নাগরিকত্ব, টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন, এবং সাংস্কৃতিক সংরক্ষণ—এই ছয়টি পারস্পরিক সংযুক্ত খাতে একীভূত সেবা দিয়ে একটি টেকসই ও পুন:ব্যবহারযোগ্য উন্নয়ন মডেল বাস্তবায়ন করে, যা সার্বিকভাবে স্থানীয় জনযোগষ্ঠীর উন্নয়নে অবদান রাখে। এর আগে, ৫ অক্টোবর তারিখে যুক্তরাজ্যভিত্তিক অলাভজনক আর্থশট ফাউন্ডেশন ২০২৫ সালের ফাইনালিস্টদের তালিকা ঘোষণা করেছিল। ফিক্স আওয়ার ক্লাইমেট ক্যাটাগরিতে, ফ্রেন্ডশিপের ম্যানগ্রোভ বনায়ন প্রকল্পে দক্ষিণাঞ্চলে সুন্দরবনের নিকটে ২০০ হেক্টরেরও বেশি এলাকায় ৬ লক্ষ ৫০ হাজারের বেশি ম্যানগ্রোভ চারা রোপণ করা হয়েছে, যেখানে মোট ৬২ কিলোমিটারের বেশি বাঁধ/প্রাকৃতিক প্রতিরোধ-বেষ্টনী গড়ে উঠেছে। এই ম্যানগ্রোভ বন প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অভিঘাত থেকে উপকূলীয় গ্রামগুলোকে রক্ষা করছে এবং এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২৫ হাজারের বেশি মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। একই সঙ্গে এটি কার্বন সিঙ্ক হিসেবে বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ ও সংরক্ষণ করে ব্লু কার্বন বাস্তুতন্ত্রকে শক্তিশালী করছে—যা নীল অর্থনীতি ভিত্তিক টেকসই ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যত গঠনে সহায়ক। শুধু আর্থিক সহায়তাই নয়—এই পুরস্কার জয়ের ফলে আগামী এক বছরে ফ্রেন্ডশিপের উদ্যোগসমূহ বৈশ্বিক গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে উপস্থাপিত হবে; পূর্ববর্তী বিজয়ী ও বিশ্বজুড়ে সমমনা সংস্থা, দাতা, একাডেমিয়া, গবেষক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও অন্যান্য অংশীদারদের সাথে একটি বৈশ্বিক নেটওয়ার্কে যোগসূত্র গড়ে উঠবে। এতে জলবায়ু ও পরিবেশ-সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সংস্থাটির দৃশ্যতা ও সম্পৃক্ততা আরও বৃদ্ধি পাবে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশ; ঘনঘন ঘূর্ণিঝড়, নদীভাঙন ও উপকূলীয় দুর্যোগ লাখো মানুষের জীবন-জীবিকাকে হুমকির মুখে ফেলছে। ২০১৪–২০২৩ সময়ে জলবায়ুজনিত ঘটনায় ১ কোটি ৪৭ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচক (CRI) অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আক্রান্ত হওয়ার সপ্তম সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ দেশ বাংলাদেশ।
|
| পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |
