|
একটি রক্ত পরীক্ষা দিয়েই ৫০ রকম ক্যানসার শনাক্ত সম্ভব!
নতুন সময় ডেস্ক
|
![]() একটি রক্ত পরীক্ষা দিয়েই ৫০ রকম ক্যানসার শনাক্ত সম্ভব! এই পরীক্ষার নাম ‘গ্যালারি টেস্ট’। এটি তৈরি করেছে আমেরিকার একটি ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান গ্রেইল (Grail)। গ্যালারি টেস্ট কীভাবে কাজ করে? এই পরীক্ষায় রক্তে ক্যানসার আক্রান্ত কোষ থেকে ভেঙে আসা ডিএনএ খুঁজে বের করা হয়। এই ডিএনএ আসলে ক্যানসার কোষের একটা সিগন্যাল, যেটা শরীরে টিউমার তৈরি হলে রক্তে ছড়িয়ে পড়ে। গবেষকরা ২৫ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের উপর এই টেস্ট চালান, এবং প্রতি ১০০ জনে ১ জনের ফল পজিটিভ আসে। তাদের মধ্যে ৬২% মানুষ আসলেই ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন—যা একে অনেকটাই নির্ভরযোগ্য করে তোলে। কী ধরনের ক্যানসার ধরা পড়েছে? সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয় হলো, এই পরীক্ষায় ধরা পড়া ক্যানসারের ৩ ভাগের ২ ভাগ এমন ধরনের, যেগুলোর জন্য এখনো কোনো নিয়মিত স্ক্রিনিং বা পরীক্ষাই নেই। যেমন: - ডিম্বাশয়ের ক্যানসার - লিভারের ক্যানসার - অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার - পাকস্থলীর ক্যানসার - মূত্রথলির ক্যানসার এ ছাড়া স্তন, অন্ত্র, ফুসফুস ও জরায়ুমুখ ক্যানসার শনাক্তের সম্ভাবনাও ৭ গুণ বেড়েছে। গবেষকরা কী বলছেন? গবেষণার প্রধান, যুক্তরাষ্ট্রের ডা. নিমা নবাবিজাদেহ বলেন, ‘এই টেস্ট আগেভাগে ক্যানসার শনাক্ত করতে সাহায্য করতে পারে, যেখানে চিকিৎসা সবচেয়ে বেশি কার্যকর হয়।’ এদিকে, গ্রেইল-এর প্রেসিডেন্ট স্যার হারপাল কুমার বলেন, অনেক মানুষ ক্যানসারে মারা যান কেবল এজন্য যে, তা অনেক দেরিতে ধরা পড়ে। আমাদের লক্ষ্য হলো আগেই শনাক্ত করা, যাতে চিকিৎসা করা সহজ হয়। তবে কিছু সতর্কতাও আছে। সবই কি এতটা সহজ? বিজ্ঞানীরা বলছেন—এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে না। যুক্তরাজ্যের ক্যান্সার গবেষণা প্রতিষ্ঠান (Cancer Research UK)-এর গবেষক নাসের তুরাবি মনে করেন, ‘আরও গবেষণা দরকার। কারণ অনেক সময় ‘অতিরিক্ত ফল’ (false positive) আসতে পারে, যা রোগীকে অযথা ভয় পাইয়ে দিতে পারে।’ ন্যাশনাল স্ক্রিনিং কমিটি এসব পরীক্ষা কতটা গ্রহণযোগ্য তা মূল্যায়ন করবে। আরও গবেষণা চলছে এই টেস্টের আরও বড় পরিসরের ট্রায়াল এখন চলছে যুক্তরাজ্যে। সেখানে ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষের ওপর গবেষণা চালানো হচ্ছে। এর ফলাফল ২০২৬ সালে প্রকাশিত হওয়ার কথা। ফল ভালো হলে ১০ লাখ মানুষের ওপর পরীক্ষাটি প্রয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও এখনো গবেষণা চলছে, তবে প্রাথমিক ফলাফলগুলো বেশ আশাব্যঞ্জক। একটি সাধারণ রক্ত পরীক্ষা দিয়ে যদি এত ধরনের ক্যানসার আগেই ধরা যায়, তাহলে ভবিষ্যতে এটি হতে পারে ক্যানসার চিকিৎসায় একটি বিপ্লবী পরিবর্তন। |
| পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |
