|
ফেনী: নদীর সংকীর্ণ পথ, মানুষের দুর্ভোগ
রহিম আলী জাবেদ, ফেনী
|
![]() ফেনী: নদীর সংকীর্ণ পথ, মানুষের দুর্ভোগ ফেনীর উজান থেকে নেমে আসা সীমান্তবর্তী তিন নদী—মুহুরী, কহুয়া এবং সিলোনিয়া—বর্ষায় ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। নদীগুলোর প্রশস্ততা কমে যাওয়ায় পানি দ্রুত প্রবাহিত হতে পারে না, ফলে বানভাসি হয় লাখো মানুষ। উদাহরণস্বরূপ, মুহুরী নদীর ভারতের অংশের প্রশস্ততা প্রায় ২৫০ মিটার হলেও বাংলাদেশের ফুলগাজী অংশে তা মাত্র ৩০ মিটারে দাঁড়ায়। গত ৯ বছরে ফেনীর বড় তিনটি নদীর ১২২ কিলোমিটার গা ঘেঁষা বাঁধের ২১৪টি স্থান ভেঙেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সরকার প্রায় ৮ হাজার ৮০৭ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছে নদী সংস্কার ও বাঁধ মেরামতের জন্য। স্থানীয়রা মনে করেন, এই প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন হলে নদীর প্রশস্ততা ও গভীরতা ফিরে পাবে এবং বন্যার প্রবণতা কমবে। অপরিকল্পিত ব্রিজ নির্মাণ এবং প্রশাসনের কিছু অপ্রয়োজনীয় কাজও নদীর প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি সঠিক সময়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিত, তবে গত বছরের মতো পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হতো। শুধু বর্ষায় নয়, শুষ্ক মৌসুমেও নদী পাড়ের মানুষ পানির সংকটের মুখোমুখি হন। উজান থেকে পানি না আসায় কৃষির ক্ষতি হয় এবং আর্থিক দুরবস্থা সৃষ্টি হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহ বলেন, “ফেনী অঞ্চলের নদীগুলো মূলত ভারত ও আসামের জলাশয় থেকে আসে। পানি প্রবাহের চ্যানেলগুলো ধীরে ধীরে সরু হয়ে গেছে, যা বন্যার প্রধান কারণ।” ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আকতার হোসেন জানান, “৭ হাজার ৩৪০ কোটি টাকার প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য নদী খনন করে পর্যাপ্ত পানি নির্গমের ব্যবস্থা করা। ছোট ছোট ব্রিজগুলোর জন্য যে বাধা সৃষ্টি হয়, তার রিপোর্ট করা হবে।” বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নদীর সঠিক ব্যবস্থাপনা, টেকসই পরিকল্পনা এবং বাংলাদেশ-ভারত সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এই দুর্যোগ চক্র থামানো সম্ভব নয়। নদীর গতিপথ ফিরিয়ে দিলে এবং পানি প্রবাহের বাধা দূর করলে বন্যার ভয় থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। |
| পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |
