সেন্টমার্টিন সাগর থেকে ২ ট্রলারাহ ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি
রফিক মাহমুদ, কক্সবাজার
প্রকাশ: Thursday, 27 November, 2025, 5:14 PM
সেন্টমার্টিন সাগর থেকে ২ ট্রলারাহ ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি
বঙ্গোপসাগরের অদূরে মাছ শিকারে যাওয়া টেকনাফ সেন্টমার্টিনের দুটি ট্রলারসহ ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ভোরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের ছেড়াদিয়ার উপকূলের পূর্বে বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে গেলে এ ঘটনা ঘটে। ট্রলার দুটি মালিক সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা মো. ইলিয়াস ও নুর মোহাম্মদ বলে জানা গেছে।
আরাকান আর্মির হাতে ট্রলারসহ জেলে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রলার মালিক সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ।
তিনি জানান, 'গতকাল কবির মাঝির নেতৃত্বে ছয়জন জেলেকে নিয়ে আমার ট্রলারটি বঙ্গোপসাগরের অদূরে সেন্টমার্টিনের ছেঁড়াদিয়ার এলাকায় মাছ শিকারে যায়। এসময় বোটের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। পরে আজ বৃহস্পতিবার ভোরে ছেঁড়াদিয়ার কাছাকাছি এলাকা থেকে ছয় জেলেকে ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মির সদস্যরা। এ ঘটনায় মাছ ধরার ট্রলার মালিক ও জেলেরা আতঙ্কের মধ্য রয়েছে।'
মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল আরাকান নেটওয়ার্ক জানায়, গত ২৮ অক্টোবর আরাকান আর্মির উপকূলীয় নিরাপত্তা ইউনিট সমুদ্রপথে টহল জোরদার করে। টহলের সময় আরাকান রাজ্যের জলসীমা অতিক্রম করে মাছ ধরতে থাকা কয়েকটি বাংলাদেশি ট্রলার শনাক্ত করা হয়। সেখানে তারা চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ১৮৮ জন বাংলাদেশি জেলে ও ৩০টি নৌকা আটক করে পরবর্তীতে মুক্তি দেওয়া হয়।
এছাড়া বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারী দুটি ট্রলারসহ ১২ জন জেলেকে আটকের বিষয়টি ছবি সহকারে প্রকাশ করেন।
সেন্টমার্টিন ফিশিং ট্রলার মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি আজিম উদ্দিন প্রতিবেদককে বলেন, 'বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে যাওয়া আমার ঘাটের দুটি ট্রলারসহ ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় জেলেদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে মাছ শিকারে যাওয়া সাগর থেকে দেড় শতাধিক জেলেকে আটক করেছিল আরাকান আর্মি। এসব জেলে এখনো তাদের হেফাজতে রয়েছে।'
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহেসান উদ্দিন বলেন, 'আরাকান আর্মি দুটি ট্রলারসহ ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেদের বিষয়ে কোস্ট গার্ড ও বিজিবিসহ স্থানীয় আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে।’
এর আগে গত ১৮ নভেম্বর মিয়ানমার জলসীমায় অনুপ্রবেশের অভিযোগে বঙ্গোপসাগর থেকে তিনটি মাছ ধরার ট্রলারসহ ১৬ জন রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে যায় মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি।
গত নয় মাসে নাফ নদী ও সেন্টমার্টিন উপকূল সংলগ্ন জলসীমা থেকে কমপক্ষে ৩৫৮ জেলেকে অপহরণ করেছে সশস্ত্র গোষ্ঠী। বিজিবির সহায়তায় মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ২০০ জেলে ফেরত দেওয়া হয়। তবে, এখনো ১৫৮ জন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।