|
২৬টি হামলার নেতৃত্বদানকারী শীর্ষ মাওবাদী কমান্ডার হিদমা নিহত!
নতুন সময় ডেস্ক
|
![]() ২৬টি হামলার নেতৃত্বদানকারী শীর্ষ মাওবাদী কমান্ডার হিদমা নিহত! শনিবার ভোরে রাজ্যটির আল্লুরি সীতারামারাজু জেলায় এক বন্দুক লড়াইয়ে হিদমা নিহত হন। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, এদিন অন্ধ্র প্রদেশ, ছত্তিশগড় ও তেলেঙ্গানা, এই তিন রাজ্যের সীমান্তের কাছে মাড়েডুমিল্লি অরণ্যে পুলিশের সঙ্গে মাওবাদী বিদ্রোহীদের সংঘর্ষে তার মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থলে অন্তত ছয়জন বিদ্রোহীর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। অন্ধ্র প্রদেশের পুলিশ মহাপরিদর্শক হরিশ কুমার গুপ্ত জানান, স্থানীয় সময় সকাল ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে ঘটে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষটি শুরু হয়। “গুলিবিনিময়ে ছয় মাওবাদী নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে একজন শীর্ষ মাওবাদী নেতা আছেন। সেখানে ব্যাপক চিরুনি অভিযান চালানো হচ্ছে,” বলেন তিনি। ১৯৮১ সালে তৎকালীন মধ্যপ্রদেশের সুকমায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন হিদমা। অল্প বয়সেই তিনি পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মির (পিএলজিএ) একটি ব্যাটালিয়নের নেতৃত্বে উঠে আসেন এবং নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির (মাওবাদী)-র কেন্দ্রীয় কমিটির সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হন। পিএলজিএ ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির (মাওবাদী) বা সিপিআই (এম) এর সশস্ত্র শাখা। ছত্তিশগড় রাজ্যের জেলা বস্তার অঞ্চল থেকে সিপিআই (এম) এর কেন্দ্রীয় কমিটির একমাত্র আদিবাসী সদস্য ছিলেন তিনি। তাকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ রুপি পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল ভারত সরকার। এই বন্দুকযুদ্ধে তার স্ত্রী রাজে ওরফে রাজাক্কাও নিহত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। মাওবাদীদের বেশ কয়েকটি বড় হামলায় নিজের ভূমিকার জন্য পরিচিতি পান হিদমা। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, ২০১০ সালের দান্তেওয়াড়ায় এক হামলায় ভারতের আধাসামরিক বাহিনী সিআরপিএফের ৭৬ জওয়ানের মৃত্যু, ২০১৩ সালে ঝিরাম ঘাটিতে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতাসহ ২৭ জনকে হত্যা আর ২০২১ সালের সুকমা-বিজাপুর আক্রমণে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে ২২ নিরাপত্তা সদস্য হত্যার ঘটনায়ও তার গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা ছিল। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর অভিযানের মুখে মাওবাদীরা যখন চাপে, তখন হিদমার মৃত্যু তাদের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা। এনডিটিভি বিশ্ব সম্মেলনে গত মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, “২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৩০০-র বেশি মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছে। গত ৫০-৫৫ বছরে মাওবাদী সন্ত্রাস হাজারো মানুষকে হত্যা করেছে। তারা স্কুল-হাসপাতাল নির্মাণে বাধা দিয়েছে, চিকিৎসকদের ঢুকতে দেয়নি, প্রতিষ্ঠান উড়িয়ে দিয়েছে।” সম্প্রতি আত্মসমর্পণ করা মাওবাদীদের মধ্যে অন্যতম শীর্ষ নেতা মল্লোজুলা ভেনুগোপাল রাও ওরফে ভূপতি। ১৪ অক্টোবর আত্মসমর্পণের পর তিনি সক্রিয় সহযোদ্ধাদের অস্ত্র ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। তার ভাষায়, দীর্ঘদিন সশস্ত্র লড়াই চালাতে গিয়ে তারা মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে গেছেন, এটাই তাদের ব্যর্থতা। “সক্রিয় মাওবাদীদের সহিংসতার পথ ছেড়ে আত্মসমর্পণ করে মূলধারায় ফিরে এসে মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত,” আত্মসমর্পণের পর বলেন তিনি।
|
| পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |
