|
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির জনক কে?
নতুন সময় ডেস্ক
|
![]() ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির জনক কে? ১৯৮০-এর দশকে ইরাক-ইরান যুদ্ধ চলাকালীন তেহরানি মোকাদ্দাম ইরানের নিজস্ব ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা গড়ে তোলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বহু মহাকাশ কমান্ডারকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন, যারা তার মৃত্যুর পরও এই অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। তেহরানি মোকাদ্দাম ১৯৫৯ সালে তেহরানের সারচেশমেহ এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৭ সালে তিনি উচ্চ বিদ্যালয় সমাপন করেন এবং ১৯৭৯ সালে শরীফ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হন। দুই বছর পর তিনি খাজে নাসির আল-দীন তুসি ইউনিভার্সিটি থেকে শিল্প প্রকৌশলে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কোর (আইআরজিসি) প্রতিষ্ঠার সময় মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি আইআরজিসির উত্তর ইরানের তৃতীয় অঞ্চলের গোয়েন্দা বিভাগে যোগদান করেন। ১৯৮১ সালে সামেন-ওল-আইমেহ অভিযানের সফলতার পর তিনি আইআরজিসি আর্টিলারি কোর এবং গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন এবং এর বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। তিনি ১৫৫ মিমি ও ১৩০ মিমি ট্র্যাকশন শেল এবং পর্তুগিজ ১০৫ মিমি শেল ব্যবহার করে আইআরজিসি আর্টিলারি স্থাপনে নেতৃত্ব দেন। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ইরাকের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে সীমিত বিদেশী সহায়তার মাধ্যমে ইরানের প্রতিরক্ষা শক্তি উন্নয়নে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তেহরানি মোকাদ্দামের নেতৃত্বে ইরানের প্রথম দেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি শুরু হয় এবং ১৯৮৫ সালে ইরাকি শহর কিরকু্কে প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হয়। পরবর্তীতে বাগদাদে একাধিক সফল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা পরিচালনা করা হয়। ১৯৮৬ সালে তিনি আইআরজিসি বিমান বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র বিভাগের কমান্ডার নিযুক্ত হন এবং লেবাননের হিজবুল্লাহকে প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিট প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেন। যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে তিনি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র শিল্পের অগ্রগতিতে নেতৃত্ব দেন। তার প্রচেষ্টায় শাহাব ও জেলজাল ক্ষেপণাস্ত্র সিরিজের জন্ম হয়। ১৯৮০-এর দশকে ইরানের কাছে ৪৫ কিমি পাল্লার ওঘাব এবং ১০০ কিমি পাল্লার নাজিয়াত ক্ষেপণাস্ত্র ছিল, যা পরবর্তীতে মধ্য-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং আশুরা ও সেজ্জিলের মতো নতুন মডেলের ভিত্তি গড়ে। ২০১১ সালের ১২ নভেম্বর, মালার্দে আমির আল-মু’মিনিন গ্যারিসনে তেহরানি মোকাদ্দাম ১৬ জন কমরেডসহ শাহাদাত বরণ করেন। তাকে এবং সহকর্মীদের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মানে তেহরানের বেহেশত-এ জাহরা কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। তিনি নিজেই বলেছিলেন, যখন আমি মারা যাব, আমার কবরে লেখা থাকবে-এখানে সেই ব্যক্তি শায়িত আছেন যিনি ইসরায়েলকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন। আজকের দিনে তার উত্তরাধিকার আইআরজিসি অ্যারোস্পেস বিভাগের মাধ্যমে ইরানের শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র ও মহাকাশ কর্মসূচিতে স্পষ্ট। তার কর্মসূচি বিশ্বের অন্যতম সেরা, যা এই মহান কমান্ডারের অসাধারণ উত্তরাধিকারের প্রমাণ। |
| পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |
