জরাজীর্ণ ভবনে ৭ যুগ পার, উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে
আব্দুল্লাহ আল ফরহাদ, কক্সবাজার
|
![]() জরাজীর্ণ ভবনে ৭ যুগ পার, উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে # অরিক্ষিত অস্ত্রগার # নষ্ট হতে পারে সরকারি নথি কক্সবাজার রামু উপজেলার গর্জনিয়া ও কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হয়েছে রামু থানার আরেকটি ইউনিট গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ি। যদি একটু পেছনের দিকে দেখি তবে রামু থানার গর্জনিয়ায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ১৯৩৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ি। দীর্ঘ ৮০ বছরের পুরাতন ফাঁড়িটি এটি। সেই ৮০ বছর পুরানো ঘরে এখনো চলছে গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ি। যদিও বা ইনর্চাজ এর জন্য ছোট একটি পাকা দালান হয়েছে তবে অন্যান্য অফিসারদের বসার জন্য তেমন কোন সুবিধা নেই। অরক্ষিত অস্ত্রাগার, জনবল সংকট, কনস্টেবল ব্যারেক ভবন থাকার উপযুক্ত নয়। রান্নার ঘর ভেঙ্গে গেছে, মসজিদ ভবনে বৃষ্টির পানি পড়ে, সবকিছু মিলিয়ে ভাল নেই গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ি। জানা যায়, প্রতিষ্ঠার পর রামুর এক পুলিশ সদস্য ফাঁড়ির দায়িত্ব পালন করতেন। পরে কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ এর পদমর্যাদায় দায়িত্ব পালন করতেন হাবিলদার। পরবর্তীতে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় আসলে ফাঁড়িতে আইসি পদমর্যাদায় থাকতেন এ এস আই। তাঁর সাথে থাকতেন এক হাবিলদার। ![]() জরাজীর্ণ ভবনে ৭ যুগ পার, উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে এখন এই দুই ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষের নিরাপত্তায় ১৭ জন জনবল নিয়ে কাজ করছে গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শাহজাহান মনির। অবশ্য জনবল থাকার কথা একজন ইনচার্জ, দুইজন সাব ইন্সপেক্টর , দুইজন এসেসটেন্ট সাব ইন্সপেক্টর, ও ১৭ জন কনস্টেবল। ২২ জন কর্মকর্তা কর্মচারি থাকার কথা থাকলেও এখন এই ১৭জন কর্মকর্তা কর্মচারি দিয়ে অফিস পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। সিমান্ত এলাকা হওয়ার কারণে এই এলাকায় চোরাচালান, পণ্য পাচারসহ বেশ বড় ধরনের অপরাধ বিগত দিনে ঘটলেও এখন তা কমিয়ে এসেছে বলে জানা গেছে। কয়েকমাস আগেও প্রতিদিন শত শত ইয়াবা,গরু,সুপারিসহ অন্যান্য সামগ্রী মায়ানমান থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করলেও এখন তা অনেকাংশে কমেছে বলে মনে করছেন এলাকাবাসি। এই পুরানো পুলিশ ফাঁড়ি নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ বেশ মন্তব্য করে বলেন , সেই স্বাধীনতার আগে করা পুরানো ভবনে থেকে দুই ইউনিয়নের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের সেবা দিয়ে আসছে গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ি। তাদের সাধুবাদ জানানো দরকার। যদিওবা বিগত দিনে অনেক ইনচার্জ অনেকটা বির্তকিত হয়েছে তবে বর্তমান ইনচার্জ শাহজাহান মনির আসার পর চোরাকারবারিরা সুবিধা করতে না পেরে অনেকটা তাকে সরানোর চিন্তা করছে। ![]() জরাজীর্ণ ভবনে ৭ যুগ পার, উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ( বিএনপি) কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের সভাপতি মোহম্মদ ছৈয়দ জানান, ৮০ বছর আগের ভবনে বসে পুলিশ সদস্যগণ এলাকার মানুষের সেবা দিয়ে আসছে। সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিয়ে আসছে। কিন্তু তাদেও পুলিশ ফাঁড়িতে তেমন সুবিধা পাচ্ছে না। থাকার ব্যবস্থা বেশ নাজুক। বৃষ্টি হলেই নদীতে পানি আসলে পুলিশ ফাঁড়িতে পানি ডুকে পড়ে যার কারণে তাদেও অনে সমস্যায় পড়তে হয়। এ থেকে সমাধান পাওয়া উচিৎ। তাদের যদি সেল্টার হোমের মতো একটু উচু করে ভবন করে দেওয়া হয় তবে তারা সুরক্ষিত থাকবে। কারণ আমাদের এলাকা নিচু। গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শাহজাহান মনির জানান, আমি এসেছি বেশিদিন না হলেও অতীতের কথা শুনেছি। এই এলাকা বাঁকখালি মোহনায় হওয়ার কারণে একটু বৃষ্টি হলে পুলিশ ফাঁড়িতে পানি ডুকে পড়ে যার কারণে সরকারি অনেক নথিপত্র নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অস্ত্রাগারে পানি গেলে অস্ত্র নষ্ট হয়ে যেতে পারে। শুনেছি বিগত দিনে পানি উঠার কারণে সব জিনিস পত্র নিয়ে পাশের ২য়তলা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল। এটি আমাদের পুলিশের জন্য নিরাপদ নয়। কারণ আমাদেও অস্ত্রসহ বেশ গুরুত্বপূর্ণ নথি থাকে। তা যদি হারিয়ে যায় তবে আমাদের অনেক সমস্যায় পড়তে হবে। এটি যেহেতু নিচু এলাকা তাই একটু উচু করে যদি সরকার আমাদের জন্য একটি ভবন করে দেন তবে অনেক উপকারে আসবে এবং সরকারি মালামাল নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফ হোসাইন জানান, এই গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ি হাজারো মানুষের নিরাপত্তায় কাজ করছে। যেসব সমস্যা রয়েছে তা পূরণ করার চেষ্টা করবো। |
পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |