ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
শুক্রবার ৭ নভেম্বর ২০২৫ ২২ কার্তিক ১৪৩২
চীন, রাশিয়া ও ভারত: নতুন বিশ্ব ব্যবস্থা গঠনের ইঙ্গিত?
নতুন সময় ডেস্ক
প্রকাশ: Wednesday, 3 September, 2025, 2:44 PM

চীন, রাশিয়া ও ভারত: নতুন বিশ্ব ব্যবস্থা গঠনের ইঙ্গিত?

চীন, রাশিয়া ও ভারত: নতুন বিশ্ব ব্যবস্থা গঠনের ইঙ্গিত?

দীর্ঘ দিনের বিরোধ ভুলে অবশেষে কাছাকাছি এসেছে দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরাশক্তি ভারত ও চীন। পাশে ছিলো দুজনেরই বন্ধু রাশিয়া। উপলক্ষ্য চীনের সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের সম্মেলন। আর বিশ্বরাজনীতিতে তোলপাড় আনা এই বন্ধুত্ব ঘটিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কট্টর পররাষ্ট্রনীতি। সম্মেলনে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি কৌশলগত অংশীদারিত্বের বার্তা দিয়েছেন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা। এখান থেকেই নতুন মোড় নিতে পারে বিশ্ব রাজনীতি।

কাজাখস্তানে অনুষ্ঠিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-এর সম্মেলনে চীন, রাশিয়া ও ভারতের শীর্ষ নেতাদের বিরল এই বৈঠক বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতে নতুন সমীকরণের আভাস দিয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, এ উদ্যোগ পশ্চিমা আধিপত্যকে খুব ভালোভাবেই চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, একসময়ের আঞ্চলিক নিরাপত্তাভিত্তিক জোট এসসিও এখন ক্রমশ পশ্চিমা জোটগুলোর বিকল্প শক্তি হিসেবে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করছে। এ প্রেক্ষাপটে চীন ও রাশিয়া সক্রিয়ভাবে সমান্তরাল সহযোগিতার কাঠামো গড়ে তুলতে চাইছে, আর ভারত এখানে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরির ভূমিকা রাখছে।

ভারত-রাশিয়া-চীনের এই বন্ধুত্বের কারণে দারুণ বিপদে পড়তে পারেন ট্রাম্প। ভারত জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা থাকা স্বত্তেও তারা রাশিয়া থেকে গ্যাস কেনা অব্যাহত রাখবে। এমনকি মার্কিন মিলিটারি সরঞ্জাম কেনা থেকেও সরে আসবে ভারত। ফলে মার্কিন মুলুক থেকে ভারত যে এফ-৩৭ জেট কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা আর বাস্তবায়িত হচ্ছে না।

রাশিয়া জানিয়েছে, ভারতের পণ্য যদি মার্কিন বাজারে উচ্চ শুল্কের শিকার হয়, তবে রাশিয়া ভারতের জন্য তার দেশের বাজার উন্মুক্ত করে দেবে। ওষুধশিল্প থেকে শুরু করে কৃষি, পোশাকশিল্পে রাশিয়া অংশীদার হতে ইচ্ছুক।

শুধু তাই নয়, রাশিয়ার সঙ্গে ভবিষ্যৎ বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারত এখন থেকে মার্কিন ডলারের বদলে চাইনিজ মুদ্রা ইউয়ান ব্যবহার করবে বলে জানা গেছে। ভারতের এমন সিদ্ধান্ত বৈশ্বিক বাণিজ্যে নতুন অধ্যায়ের সৃষ্টি করবে বলেই ধারণা করছেন বিশ্লেষকগণ।

তবে, এখনই চীনের ওপর ভরসা না করতে পরামর্শ দিচ্ছে ভারতীয় গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ। তারা বলছে, চীন-ভারতেরে যে সীমান্ত সমস্যা রয়েছে, তা এখনো সুরাহা হয়নি। চীন এখনও ভারতের বিভিন্ন প্রদেশকে নিজের বলে দাবি করে। চীন পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরকেও সমর্থনকরে। পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের বন্ধুত্বও ভারতের আমলে নেওয়া উচিৎ বলে মনে করছেন ভারতীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ। কারণ পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে যে ফাইটার জেট, অস্ত্র, মিসাইল ও ড্রোন ব্যবহার করে, তা চীনের তৈরি।

আরও একটি বিষয়ে চীনের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলছে বিশ্লেষকগণ, আর তা হলো বাণিজ্য ভারসাম্য। ভারতের বাজার চীনা পণ্য ও প্রযুক্তিতে সয়লাব। ভারত খুবই গভীরভাবে চীনা ওষুধ, টেলিকম ও সোলার প্যানেলের ওপর নির্ভরশীল। তাই দুই দেশের বাণিজ্য যদি সমান অংশীদারিত্ব না পায়, তবে তা ভারতের জন্য ব্যাকফায়ার হতে পারে বলেও মনে করছেন ভারতীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ।

এর পরও শি জিনপিং, ভ্লাদিমির পুতিন ও নরেন্দ্র মোদির এই যৌথ উপস্থিতি ভূ-রাজনীতির পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। যখন পশ্চিমা বিশ্ব মুদ্রাস্ফীতি, রাজনৈতিক বিভাজন এবং যুদ্ধ ক্লান্তিতে জর্জরিত, তখন বিকল্প শক্তির কেন্দ্রগুলো ক্রমশ নিজেদেরকে নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার স্থপতি হিসেবে উপস্থাপন করছে।

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status