ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫ ৪ চৈত্র ১৪৩১
কাবিন ফাঁদে নিঃস্ব একাধিক পুরুষ, বিয়ের নিখুঁত অভিনয়ে বাজিমাৎ সুন্দরী টুম্পা
জাবের বিন রহমান আরজু, চট্টগ্রাম
প্রকাশ: Monday, 22 April, 2024, 12:13 PM
সর্বশেষ আপডেট: Monday, 22 April, 2024, 12:29 PM

কাবিন ফাঁদে নিঃস্ব একাধিক পুরুষ, বিয়ের নিখুঁত অভিনয়ে বাজিমাৎ সুন্দরী টুম্পা

কাবিন ফাঁদে নিঃস্ব একাধিক পুরুষ, বিয়ের নিখুঁত অভিনয়ে বাজিমাৎ সুন্দরী টুম্পা

"পুরুষেরা মেয়েদের খেলার সামগ্রী আর মেয়েরা শয়তানের খেলার সামগ্রী" ! নেপোলিয়নের নারীদের নিয়ে এই বিশেষ উক্তির ষোলকলা পূর্ণ করতেই যেনো ব্যস্ত চট্টগ্রামের কাবিন ব্যবসায়ী তাহমিনা আক্তার টুম্পা। বিয়ের নামে নিখুঁত অভিনয়ের মাধ্যমে তার খেলার সামগ্রী হয়ে নিঃস্ব হয়েছেন একাধিক পুরুষ। অভিনয় করে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে স্ট্যাম্প, চেক ও প্রায় নগদ ২০লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া সহ টুম্পার বিরুদ্ধে একাধিক বিয়ের মাধ্যমে কাবিন ব্যবসা, প্রতারনার অভিযোগ এনে  চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে সংবাদ সম্মেলন করেন রমিজ আহম্মদ (৫৮) নামের এক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী। এছাড়া প্রতারক টুম্পার নামে চট্টগ্রাম আদালতে প্রতারনাসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে বলেও জানান ভুক্তভোগী। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আসক ফাউন্ডেশন চট্টগ্রামের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মানবাধিকার কর্মী জান্নাতুল আরেফা চৌধুরী মিথিলা।

লিখিত অভিযোগে জানা যায়, সুন্দরী টুম্পার কাবিন নাটকের শুরু হয় ২০০৪/৫ সালের আলমগীর নামে এক ব্যক্তির সাথে তার প্রথম বিয়ের মাধ্যমে। কিছুদিন যেতে না যেতেই কাবিনের টাকা আদায় করে আলমগীর থেকে সরে আসে টুম্পা। এরপর ২০০৮ সালে খালাতো ভাই আমির হোসেনকে বিয়ে করে  কিছুদিন পর তাকে তালাক দিয়ে কাবিনের টাকা আদায় করে রাস্তা পরিষ্কার করে টুম্পা। এবার টার্গেট এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্র! ২০১৩ সালে মেহেরাব হোসেন নামে এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্রকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে নিজেকে কুমারী পরিচয় দিয়ে ৩০ লক্ষ টাকা কাবিন দেখিয়ে সংসার শুরু করে টুম্পা। মেহেরাব হোসেনের ঘরে টুম্পার ৯ বছরের একটি কন্যা সন্তান ও রয়েছে। গত ১৬/১১/২০২৩ ইং মেহরাব হোসেনের সাথেও টুম্পার তালাক কার্যকর হয়। এর মধ্যে ৩০ লক্ষ টাকা কাবিন বাবদ মেহেরাব হোসেন থেকে ২৩ লক্ষ টাকা কাবিন আদায় করেছে টুম্পা। এই প্রতারণার পিছনে রয়েছে একটি সঙ্ঘবদ্ধ দল। যারা বিভিন্ন চরিত্রের অভিনয়ের মাধ্যমে প্রতারণা করে থাকে। টুম্পার সাথে রয়েছে কথিত খালাতো ভাই আবসার (৪৬), বাবা আব্দুল কাইয়ুম সরকার প্রকাশ বদি (৬২), মাতা কহিনুর বেগম (৫৮), ভাই সাখাওয়াত হোসেন (৩২) প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যের অভিযোগের মাধ্যমে জানা যায়, ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী রমিজ আহমদ (৫৮) সহজ-সরল ও বোকা প্রকৃতির হওয়ায়  দীর্ঘদিন যাবৎ তাকে কেউ বিয়ে করেন নি। বিভিন্ন মারফত খবর নিয়ে আবসারের কাছ থেকে খালাতো বোন পরিচয়ে তাহনিমা আক্তার টুম্পার খোঁজ পাই।  টুম্পাকে দেখে পছন্দ হওয়ার এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে। টুম্পা রমিজ আহমদের সরলতাকে পুঁজি করে বিভিন্ন সময় নিজের জন্য শপিং, বাড়ির জন্য ফার্নিচার, বাবার চিকিৎসার কথা বলে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। নগদ টাকার পাশাপাশি একটি এনজিও থেকে টাকা নেওয়ার কথা বলে গ্যারান্টি হিসেবে রমিজ আহমদের চ্যাক ও সাক্ষর সম্বলিত অলিখিত স্ট্যাম্প  ব্যবহার করে। যা বর্তমানে রমিজের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসবের এক পর্যায়ে রমিজ আহমদ তার নিজ বাসায় বিয়ের কথা জানাতে চাইলে কথিত খালাতো ভাই আবসার ও টুম্পা তাকে নিষেধ করে এবং বিয়ের দিন কাজি অফিসে তার পরিচিত কাউকে না আনতে বলে। পরবর্তীতে বিয়ের দিন আগ্রাবাদ কাজি অফিসে যাওয়ার কথা বলে সন্ধ্যার আগ মূহুর্তে কোর্ট বিল্ডিং অপরিচিত এলাকায় একটি রুমে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই কথিত খালাতো ভাই, কাজী সহ আরো বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।  একটা সময় দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা কাবিনের কথা থাকলেও জোরজবরদস্তি করে ৩০ লক্ষ টাকার কাবিন নামায় স্বাক্ষর করে নেয় টুম্পা গংরা।

তাহমিনা আক্তার টুম্পা শুধু একজন প্রতারক আর কাবিন ব্যবসায়ী নারীই নয়, সে একজন টাউটও বটে। বিগত- সালে টুম্পার কথিত সিনিয়র কোর্টের আশ্রয় প্রশ্রয়দাতা এডভোকেট মাসকুর রহমান মাসুকের (লাল বিল্ডিং) জুনিয়র উকিল পরিচয় দিয়ে অনেক সাধারণ লোকের কাছ থেকে মামলা করার নাম করে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়েছে। ফাহিমা আক্তার নামে এক ভুক্তভোগী টুম্পা ও তার কথিত সিনিয়র এডভোকেটের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে  আইনজীবী সমিতির শালিশে এডভোকেট মাসুক ও প্রতারক টুম্পা ভুক্তভোগীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং মামলা করার নামে যে টাকা নিয়েছিলো সে টাকা ফেরৎ দিতে বাধ্য হয়। আইনজীবী সমিতির কাছে টুম্পা আইনজীবী পরিচয় দেয়ায় তাকে “টাউট” হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। পরবর্তীতে তাহমিনা আক্তার টুম্পা আর কখনো আদালত প্রাঙ্গনে আসবেনা বলে অঙ্গিকার করে।

প্রতারক তাহমিনা আক্তার টুম্পার বিরুদ্ধে বর্তমানে চট্টগ্রাম আদালতে অপর ৪৫৬/২৩ সিআর- ২৪৯৩/২৩ (ধারা- ৪০৬/৪২০/৪৯৫/৩৮৬/৫০৬/৩৪ দঃ বিঃ), সিআর- ১৬৬/২০ ধারা- ১৩৮ NI ACT) চলমান রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তাহমিনা আক্তার টুম্পার বিরুদ্ধে একাধিক ভুক্তভোগী মামলা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাহমিনা আক্তার টুম্পার বর্তমান চট্টগ্রামের ১৫৮৮ হামজার বাগ, কুয়ার পাড়, হামজার বাগ কলোনীতে বসবাস করছে। প্রতারণার স্বীকার হওয়া রমিজ আহম্মদ (৫৮) এর দাবী প্রতারক তাহমিনা আক্তার টুম্পাসহ তার সহযোগীদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা হোক।

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status