আইনি ঝামেলার পরও যে কারণে প্রেসিডেন্ট হতে পারেন ট্রাম্প
নতুন সময় ডেস্ক
|
![]() আইনি ঝামেলার পরও যে কারণে প্রেসিডেন্ট হতে পারেন ট্রাম্প ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ তার সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে মুখ না খুলতে ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দিয়ে সাবেক পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়েছিলেন ট্রাম্পের তৎকালীন আইনজীবী মাইকেল কোহেন। তাছাড়া এই অর্থ দেওয়ার বিষয়টি গোপন রাখতে ট্রাম্প তার ব্যবসায়িক রেকর্ডেও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছিলেন। ট্রাম্পই প্রথম কোনও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি ফৌজদারি মামলায় বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের মধ্যেই এ মামলায় ট্রাম্পের বিচার চলবে। ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হলে যদি কোনও সাজা হয় সেটি কী হবে বা বিচারক কি সাজা দিতে পারেন তা এখনও জানা নেই। ব্যবসায়িক রেকর্ডে জালিয়াতির বিষয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মোট ৩৪টি অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব অভিযোগেই ট্রাম্প দোষ অস্বীকার করেছেন। এই অভিযোগগুলোতে দোষী সাব্যস্ত হলে ট্রাম্পের সর্বোচ্চ ১ বছর চার মাস থেকে ৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। কিন্তু ক্ষেত্রবিশেষে জেলে থাকার সময়টুকু ধরে আসামিদেরকে সাধারনত একবছর কিংবা তার কম সময় সাজা দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু ট্রাম্প প্রথমবারের মতো অহিংস অপরাধে আসামি হয়েছেন। আর কোনও অপরাধের ইতিহাস নেই এমন একজন মানুষ যিনি কেবল ব্যবসায়িক রেকর্ডে জালিয়াতিতে অভিযুক্ত হয়েছেন তার নিউ ইয়র্কে জেলের সাজা হওয়াটা বিরল। সেক্ষেত্রে জরিমানা কিংবা প্রবেশন (শাস্তি স্থগিত রাখা কিংবা কারাবন্দি না রাখা) হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি। জরিমানার চেয়ে বেশি সাজা যদি ট্রাম্পের হয় তাহলে তাকে হয়ত জেল না দিয়ে বরং বাড়িতে বন্দি করে রাখা হতে পারে কিংবা চলাফেরায় কড়াকড়ি আরোপ করা হতে পারে। তাছাড়া দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিরুদ্ধে আপিল করলে ট্রাম্প আবার জামিনেও মুক্তি পেতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান বলছে প্রেসিডেন্ট হতে হলে কেবল বয়স অন্তত ৩৫ বছর হওয়া এবং ১৪ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বাস করা নাগরিক হতে হয়। ফলে ফৌজদারি মামলায় ট্রাম্প দোষী সাব্যস্তই হোন বা তার কারাদণ্ডই হোক না কেন- তাতে তার প্রেসিডেন্ট পদের যোগ্যতায় কোনও প্রভাব পড়বে না। বরং ট্রাম্প জেলে থেকে কিংবা গৃহবন্দি থেকেও প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নিতে পারবেন যদি দোষী সাব্যস্ত হওয়া কিংবা সাজা পাওয়ার পরও তিনি নির্বাচনে জয় পান। তবে ট্রাম্প ফৌজদারি মামলায় নিজের জন্য প্রেসিডেন্সিয়াল ক্ষমা মঞ্জুর করতে পারবেন না। যেহেতুু তিনি রাজ্যে অভিযুক্ত হয়েছেন কেন্দ্রীয় পর্যায়ে নয়। প্রেসিডেন্টের ক্ষমা কেবল ফেডারেল বা কেন্দ্রীয়ভাবে অভিযুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে মঞ্জুর করা যায়। ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া চারটি অপরাধ মামলাকে তার নির্বাচনী তহবিল জোগাড়ের সুবিধার জন্য কাজে লাগিয়েছেন। তিনি এসব মামলাকে তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে প্রচার করেছেন। ট্রাম্প এসব মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর গতবছর বরং তার প্রচার শিবিরে অনুদান বাড়তে দেখা গেছে। তবে ফেব্রুয়ারিতে রয়টার্স/ইপসোস পরিচালিত একটি জরিপে দেখা গেছে রিপাবলিকানদের কেবলমাত্র অর্ধেক বলেছেন জুরি ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করলে তারা তাকে ভোট দেবেন। আবার এ মাসে রয়টার্স/ইপসোস পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে অনেক বেশি সংখ্যক ভোটার নিউ ইয়র্কে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া ফৌজদারি অভিযোগকে গুরুতর হিসাবেই দেখছে। এপ্রিলে পরিচালিত জরিপে অংশ নেওয়া রিপাবলিকানদের প্রায় এক চতুর্থাংশই বলেছেন জুরি ট্রাম্পকে এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করলে তারা তাকে ভোট দেবেন না। ২০২০ সালের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের কাছে হারার পর নির্বাচনের ফল উল্টে দেওয়ার চেষ্টা এবং প্রেসিডেন্ট পদ ছেড়ে যাওয়ার সময় ফ্লোরিডার বাসায় গোপন নথি রাখার অভিযোগে জর্জিয়া এবং ওয়াশিংটনে অভিযুক্ত হয়েছেন ট্রাম্প। এবছর ৫ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এই মামলাগুলোর কোনটির বিচারকাজ চলবে কিনা সেটি স্পষ্ট নয়। কারণ ওয়াশিংটন এবং ফ্লোরিডার মামলা ফেডারেল আদালতে নেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প নির্বাচনে জিতলে অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগ করে এ মামলার অবসান ঘটাতে পারেন। আবার প্রেসিডেন্টের ক্ষমার আওতায় তিনি নিজেকে ক্ষমাও করতে পারেন। ওদিকে জর্জিয়া এবং নিউ ইয়র্কের মামলা দুটোই রাজ্য আদালতে নেওয়া হয়েছে। ফলে ট্রাম্প নিজেকে ক্ষমাও করতে পারবেন না কিংবা যে কৌঁসুলিরা রাজ্য আদালতে মামলা নিয়েছেন তাদেরকে বরখাস্ত করে মামলার সমাপ্তিও টানতে পারবেন না। |
পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |