|
ব্রাজিলের এই মডেলকে কেন খুঁজছেন রাহুল গান্ধী
নতুন সময় ডেস্ক
|
![]() ব্রাজিলের এই মডেলকে কেন খুঁজছেন রাহুল গান্ধী কিছুসময় পর জানান, এই নারী ব্রাজিলিয়ান একজন মডেল, নাম ম্যাথিউস ফেররিরো। কিন্তু, এই ব্রাজিলিয়ান মডেলকে কেন খুঁজে বেড়াচ্ছেন রাহুল? এর কারণটাও তিনিই জানালেন। বললেন, এই নারী ২০২৪ সালে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ১০টি বুথে ২২ বার ভোট দিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, একেকটি ভোটার কার্ডে তার নামও একেক রকম—কোথাও সীমা, কোথাও সুইটি, স্বরস্বতী, রেশমী, সুনীতা বা বিমলা। পর্দায় এসব 'প্রমাণ' তুলে ধরে রাহুল গান্ধী প্রশ্ন রাখেন, হরিয়ানার ভোটার তালিকায় 'এই ব্রাজিলিয়ান নারী কী করছেন?' তালিকায় 'ভোটার চুরি'র অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারকে দায়ী করে রাহুল দাবি করেন, 'এটি একটি কেন্দ্রীয় অপারেশন', অর্থাৎ এটা করা হচ্ছে নয়াদিল্লি থেকেই। নিজের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে গতকাল বুধবার প্রকাশিত ৩৮ মিনিটের বেশি দীর্ঘ একটি ভিডিওতে রাহুল গান্ধী এসব তথ্য তুলে ধরেন। তার অভিযোগ, হরিয়ানার ওই নির্বাচনে ২৫ লাখের বেশি ভোট 'চুরি' করা হয়েছে। রাহুল গান্ধীর দাবি, পাঁচটি উপায়ে এই ভোট চুরি করা হয়েছে—একই ব্যক্তিকে একাধিকবার ভোটার বানানো, ভুয়া ঠিকানায় ভোটার তৈরি, একই বাসার ঠিকানায় অস্বাভাবিক বেশি সংখ্যক ভোটার দেখানো, নতুন ভোটার তৈরি এবং তালিকা থেকে ভোটার বাদ দেওয়া। তিনি দাবি করেন, ২৫ লাখ ৪১ হাজার ১৪৪টি ভোট জালিয়াতির 'ক্রিস্টাল ক্লিয়ার' প্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে। সেই হিসাবে, রাজ্যটির প্রায় ২ কোটি ভোটারের প্রতি ৮ জনের একজন ভুয়া। মঞ্চে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি কিছু নথি দেখিয়ে সেখানে থাকা 'অনিয়ম' তুলে ধরেন। একই নারীর ছবি ব্যবহার করে অন্তত ১০০টি ভোটার কার্ড তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া, পুরুষের নামের পাশে নারীর ছবি এবং ৭০ বছরের বেশি বয়সী ভোটারের পাশে শিশুর ছবি ব্যবহারের মতো অসংগতিও দেখানো হয়। এমনকি, একই নাম ও ছবির ভোটারের বয়স ও ঠিকানা ভিন্ন ভিন্ন উল্লেখ করে আলাদা ভোটার হিসেবে দেখানো হয়েছে। রাহুলের অভিযোগ, নথিতে থাকা লক্ষাধিক ভোটারের নামের পাশে যে ছবি আছে তা অস্পষ্ট। এই ছবি দেখে কাউকে শনাক্ত করা সম্ভব নয়। ২০২৪ সালে হরিয়ানার বিধানসভা নির্বাচনের তথ্য তুলে ধরে রাহুল বলেন, তার দল নির্বাচন কমিশনের কাছে ভোটার তালিকা ও সিসিটিভি ফুটেজ চাইলেও কমিশন তা দেয়নি। পরবর্তী সময়ে তথ্য অধিকার আইনে (আরটিআই) আবেদন করে ভোটার তালিকা পেলেও সেটির 'সফট কপি' না দিয়ে দুই কোটি ভোটারের বিশাল তালিকার প্রিন্ট কপি দেওয়া হয়। নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া কাগজের একটি বিশাল স্তূপ দেখান তিনি। তবে, ভোটার তালিকা পেলেও সিসিটিভি ফুটেজ কখনোই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন রাহুল। তিনি আরও বলেন, একই ব্যক্তি উত্তর প্রদেশ ও হরিয়ানায় বিজেপিকে ভোট দিচ্ছে, এমন হাজারো ভোটারের অস্তিত্ব তারা খুঁজে পেয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিহার রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। তার ঠিক আগের দিন রাহুলের এমন 'ভোট চুরি'র অভিযোগ এই নির্বাচনেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। রাহুল গান্ধী মূলত দাবি করেছেন, এই কারচুপি ও ভুয়া ভোটের মাধ্যমেই হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি জিতেছে এবং ভারতের নির্বাচন কমিশন (ইসি) বিজেপির সঙ্গে যোগসাজশ করে তাদের জিতিয়ে এনেছে। নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাহুলের এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর কংগ্রেস এসব নিয়ে কোনো আপিল বা আপত্তি জানায়নি। ইসি রাহুলের এসব অভিযোগকে 'ভিত্তিহীন' বলে উড়িয়ে দিয়েছে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়া চলাকালীন এ নিয়ে কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। নির্বাচন কমিশনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রশ্ন তুলে বলেন, 'কংগ্রেসের পোলিং এজেন্টরা ভোটকেন্দ্রের ভিতরে কী করছিলেন? কোনো ভোটার একবার ভোট দেওয়ার পর আবার দিতে এলে বা তাদের পরিচয় নিয়ে সন্দেহ থাকলে পোলিং এজেন্টদেরই আপত্তি জানানোর কথা।' এমনকি এই প্রশ্নও তোলা হয়েছে যে, রাহুল গান্ধী কীভাবে জানেন যে এই কথিত ভুয়া ভোটাররা কাকে ভোট দিয়েছেন? |
| পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |
