১১ কোটি টাকা আত্মসাৎ : ইবিএল চেয়ারম্যানসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নতুন সময় প্রতিবেদক
|
![]() ১১ কোটি টাকা আত্মসাৎ : ইবিএল চেয়ারম্যানসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ারের আদালতে মামলাটি করেন মুর্তুজা আলী নামে এক ব্যবসায়ী। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হেলাল বিন মঞ্জুর তামিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ব্যবসায়ী মুর্তুজা আলী ইস্টার্ন ব্যাংক সঞ্চয়ী অ্যাকাউন্টসহ এফডি (ফিক্সড ডিপোজিট) অ্যাকাউন্ট খোলেন। ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এখন পর্যন্ত ব্যবসায়ী মুর্তুজা আলীর সম্ভাব্য পাওনার পরিমাণ ১১ কোটি টাকা। এই ১১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ মোট ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়। আদালত মামলার আবেদন গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’ মামলার আরজিতে ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসিকে প্রথম ও ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. শওকত আলি চৌধুরীকে দ্বিতীয় আসামি করেছেন ব্যবসায়ী মুর্তুজা আলী। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসির পরিচালক এম গাজিউল হক, সেলিনা আলি, আনিস আহমেদ, মুফাক্কারুল ইসলাম খসরু, গাজী মো. সাখাওয়াত হোসাইন, কে জে এস বানু, জারা নামরীন, ড. তাওফিক আহমেদ চৌধুরী, রুসলান নাসির, কে এম তানজিব উল হক, খন্দকার আতিক-ই রাব্বানী, মাহরীন নাসির। এছাড়াও ব্যাংকটির ব্যস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ শাহীন, সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহেদী জামান, রিয়াদ মাহমুদ চৌধুরী, এম খোরশেদ আনোয়ার, মাহমুদুন নবী চৌধুরী, এম খোরশেদ আলম, মহিউদ্দিন আহমদ, ইউনিট হেড কর্পোরেট ব্যাংকিং মো. ওবাইদুল ইসলাম, মাহদিয়ার রহমান, মো. মাইনুল হাসান ফয়সাল, ট্রানজেকশন ব্যাংকিং হেড মো. জাবেদুল আলম ও হেড অব কর্পোরেট বিজনেস সঞ্জয় দাশ। হেড অব প্ল্যানিং আশরাফ উজ জামান, চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার মাসুদুল হক সরদার, হেড অব ট্রেড অপারেশন মো. মোকাদ্দাস, হেড অব ব্যাকিং মো. জাহিদ হোসাইন, হেড অব বিজনেস সৈয়দ জুলকার নাইন, হেড অব ডিজিটাল ফিন্যান্স আহসান উল্ল্যাহ চৌধুরী, চিফ টেকনোলজি অফিসার জাহিদুল হক, অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. আবদুস সালাম, হেড অব কমিউনিকেশন জিয়াউল করিম, হিউম্যান রিসোর্সের প্রধান মনিরুল ইসলাম, হেড অব বিজনেস ইনফরমেশন মাসকুর রেজা, হেড অব ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট মোস্তফা সরওয়ার, কম্পানি সেক্রেটারি মো. আবদুল্লাহ আল মামুনকে। এছাড়াও মামলায় আসামি করা হয়েছে, চান্দগাঁও শাখার ব্যবস্থাপক পারভেজ আলম, নিজাম উদ্দিন, ওআর নিজাম রোড শাখার ব্যবস্থাপক গোলাম মাইনুদ্দিন, কর্পোরেট এরিয়া হেড ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক চৌধুরী এম এ কিউ সরওয়ার এবং সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও অডিট প্রধান মো. রেজাউল ইসলামকে। মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাদী মো. মুর্তুজা আলী একজন ব্যবসায়ী এবং ভাইয়া গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক। ২০১৭ সালে তিনি ইস্টার্ন ব্যাংক ও আর নিজাম শাখায় স্থায়ী আমানত করার উদ্দেশে চার কোটি ১২ লাখ টাকা সঞ্চয়ী হিসেবে জমা করেন। কিন্তু ব্যাংক স্থায়ী আমানতের সুদের হার ৭ শতাংশ নিয়ে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। পরবর্তীতে ব্যাংকে থাকা অর্থের পরিমাণ মুনাফাসহ ৬ কোটি ১০ লাখ টাকা দাঁড়ালে মর্তুজা আলী সেই অর্থ ইস্টার্ন ব্যাংকের চান্দগাঁও শাখায় স্থানান্তর করেন। আর এই টাকা স্থানান্তর করার মাধ্যমে সংঘবদ্ধ জালিয়াতি ও প্রতারণার স্বীকার হন। ২০১৭ ও ১৮ সালে মর্তুজা আলী ইস্টার্ন ব্যাংকের চান্দগাঁও শাখায় ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার ছয়টি স্থায়ী আমানত খোলেন এবং এর বিপরীতে একটি এসওডি (সিকিউরড ওভারড্রাফট) ঋণের জন্য আবেদন করেন। ২০১৯ সালের আগষ্ট মাসে মামলার বাদী বিদেশে থাকার সময় তিনি ব্যাংকটির চান্দগাঁও শাখায় তার নামে দুটি জাল সঞ্চয়ী হিসাব ও চারটি জাল ঋণ হিসাব সনাক্ত করেন। মুতুর্জার স্বাক্ষর জাল ও ভুল তথ্য দিয়ে যে সঞ্চয়ী হিসাব ও জাল ঋণ জিসাব চালু করা হয়েছে তাতে ৯ কোটি ৭৭ লাখ ৩২ হাজার ৮৬৭ টাকা লেনদেন করে জাল ঋণের পাঁচ কোটি ৪৪ লাখ ৯৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এই অর্থ আত্মসাতের সময় মুর্তুজা আলী বিদেশ ছিলেন। বাদী তার হিসাব সমূহে সম্পাদিত সমস্ত প্রতারণা মূলক কার্যকালাপের কথা উল্লেখ করে পাওনা পরিশোধ করার জন্য ইস্টার্ন ব্যাংক বরাবর চিঠি, রিমাইন্ডার লেটার ও দুইটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয় বিভিন্ন সময়। তবে ইস্টার্ন ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ আইনি নোটিশের উত্তরে মুর্তুজার সকল পাওনা পরিশোধ করতে অস্বীকার করেন। এছাড়া তার হিসাবের সকল কাগজাদি সরবরাহ করার জন্য অনুরোধ করলেও ব্যাংক কর্তপক্ষ কোন কাগজ সরবরাহ করেনি বলে মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে,২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মো. মুর্তুজা আলীর ইস্টার্ন ব্যাংক থেকে সম্ভাব্য পাওনার পরিমাণ ১১ কোটি টাকা। |
পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |