বাবা সিদ্দিকি হত্যার দায় স্বীকার, নেপথ্যে সালমানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা!
নতুন সময় ডেস্ক
|
ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী বাবা সিদ্দিকিকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার দুজন নিজেদের মুম্বাইয়ের লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্য বলে জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে এই হত্যার দায়ও স্বীকার করে নিয়েছে গ্যাংটি। শনিবার (১২ অক্টোবর) রাতে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এসসিপি) নেতা এবং মহারাষ্ট্রের তিনবারের বিধায়ক বাবা সিদ্দিকি। পুলিশের বরাতে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে জানানো হয়, শনিবার রাতে মুম্বাইয়ের বান্দ্রা পূর্ব এলাকার নির্মল নগরে কোলগেট মাঠের কাছে ছেলে জিশান সিদ্দিকের অফিস থেকে বের হন বাবা সিদ্দিকি। গাড়িতে উঠতে যাবেন এমন সময়ে তাকে লক্ষ্য করে ছয়টি গুলি করে একদল সন্ত্রাসী। এর মধ্যে চারটি গুলি লাগে তার গায়ে। হামলাকারীরা স্থান ত্যাগ করার পর দ্রুত বাবা সিদ্দিকিকে স্থানীয় লীলাবতী হাসপাতালে নেওয়া হলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এদিকে ঘটনাটি তদন্তের জন্য পুলিশের চারটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বাবা সিদ্দিকিকে গুলি করার সঙ্গে তিন ব্যক্তি জড়িত। এরই মধ্যে হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশ থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে মুম্বাই পুলিশ। তৃতীয় ব্যক্তি পালিয়ে গেছেন। গ্রেপ্তার দুজনের নাম গুরমেল সিং (২০) এবং ধরমরাজ কাশ্যপ (২০)। এরই মধ্যে রোববার (১৩ অক্টোবর) লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং সদস্যের একটি ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, বলিউড অভিনেতা সালমান খানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং দাউদ ইব্রাহিমের মতো আন্ডারওয়ার্ল্ড ডনের সঙ্গে যোগযোগ রাখার কারণে বাবা সিদ্দিককে টার্গেট করা হয়েছে। পোস্টে লিখা হয়েছে, ‘ওম, জয় শ্রী রাম, জয় ভারত। আমি জীবনের সারমর্ম বুঝি এবং সম্পদ এবং শরীরকে ধূলিকণা মনে করি। আমি কেবলমাত্র কর্তব্যকে সম্মান জানিয়ে যা সঠিক তা করেছি। সালমান খান, আমরা এই যুদ্ধ চাইনি। কিন্তু আপনার কারণেই ভাইকে প্রাণ দিতে হলো। আজ বাবা সিদ্দিকির ভদ্রতার মুখোশ বন্ধ হয়ে গেছে। এক সময় তিনি দাউদের সঙ্গে (মহারাষ্ট্র কন্ট্রোল অফ অর্গানাইজড ক্রাইম) এর অধীনে ছিলেন। তার মৃত্যুর কারণ বলিউড, রাজনীতি এবং সম্পত্তির লেনদেনে দাউদ এবং অনুজ থাপনের সঙ্গে সম্পর্ক।’ পোস্টে আরও লেখা হয়েছে, ‘কারও সঙ্গে আমাদের কোনও ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। তবে সালমান খান বা দাউদ গ্যাংকে যারা সাহায্য করবে, তাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে। যদি কেউ আমাদের কোনও ভাইকে হত্যা করে, আমরা জবাব দেব। আমরা কখনই প্রথম হামলা করি না। জয় শ্রী রাম, জয় ভারত, শহীদদের প্রতি স্যালুট।’ পুলিশ বলছে, খুনের মূল পরিকল্পনাকারীকে খুঁজে বের করেছে তারা। তদন্তে জানা গেছে, এই হত্যা পূর্বপরিকল্পিত। অভিযুক্তদের অগ্রীম টাকা দেওয়া হয়েছিল কয়েকদিন আগে। এরপর তাদের অস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছিল। সিদ্দিকির একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে জানায়, তিনি ১৫ দিন আগে হত্যার হুমকি পেয়েছিলেন এবং তাকে ‘ওয়াই’ ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। উল্লেখ্য, লরেন্স বিষ্ণোই বর্তমানে গুজরাটের একটি কারাগারে বন্দি আছেন। তবে, তার গ্যাং প্রায়শই ব্যবসায়ীদের থেকে মুক্তিপণ আদায় করে বলে অভিযোগ আছে। ১৯৯৮ সালে দুই কৃষ্ণ হরিণ শিকার মামলার কারণে সালমান খানের ওপর ক্ষুব্ধ তিনি। কারণ, এই কৃষ্ণ হরিণকে বিষ্ণোই সম্প্রদায় পবিত্র বলে মনে করে।
|
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |