ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
শনিবার ৮ নভেম্বর ২০২৫ ২৩ কার্তিক ১৪৩২
বঞ্চনার পথ পেরিয়ে রাঙামাটির প্রার্থী: দীপেন দেওয়ান প্রমাণ করলেন, নেতা এক দিনে হয় না
নতুন সময় প্রতিনিধি
প্রকাশ: Saturday, 8 November, 2025, 3:53 PM

বঞ্চনার পথ পেরিয়ে রাঙামাটির প্রার্থী: দীপেন দেওয়ান প্রমাণ করলেন, নেতা এক দিনে হয় না

বঞ্চনার পথ পেরিয়ে রাঙামাটির প্রার্থী: দীপেন দেওয়ান প্রমাণ করলেন, নেতা এক দিনে হয় না

রাজনীতিতে ত্যাগ, আদর্শের প্রতি অবিচল আস্থা এবং নিরলস সংগ্রাম শেষ পর্যন্ত ফল দেয় রাঙামাটি আসনের বিএনপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান যেন তারই এক জীবন্ত উদাহরণ। নির্বাচনে জয়-পরাজয় যা-ই হোক না কেন, দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় ধরে দলীয় সমীকরণের নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তিনি যে 'রাজনৈতিক বিজয়' অর্জন করেছেন, তা এখন টক অব দ্য পলিটিক্স। সরকারি চাকরিতে থাকা স্থিতিশীল জীবন ছেড়ে এসেছিলেন রাজনীতির অনিশ্চিত পথে। বিএনপি'র প্রতি আদর্শিক আনুগত্য থেকেই শুরু হয়েছিল পথচলা। কিন্তু এই পথ মসৃণ ছিল না।

​হোঁচট বারবার, তবুও লক্ষ্য অবিচল ​২০০৮ সালের নির্বাচন থেকেই শুরু হয় দীপেন দেওয়ানের 'বঞ্চনার অধ্যায়'। নির্বাচন করার প্রবল অভিলাষ থাকা সত্ত্বেও দলীয় মনোনয়ন পাননি। এরপর ২০১৮ সালেও দল তাঁকে ফিরিয়ে দেয়। এই সময়ে দলের অভ্যন্তরেও তাঁকে সইতে হয়েছে চরম বৈষম্য। দলের একাংশের কাছে ছিলেন রীতিমতো 'অচ্ছুত'। নিজ দলের একটি পক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে মানববন্ধন পর্যন্ত করেছে।

​কর্মসূচিতে অংশ নিতেও তাঁকে সুযোগ দিতে চাইত না একদল নেতা। একাকী সংগ্রাম: অনেক সময়ই তাঁকে একাকী বা গুটিকয়েক অনুসারী নিয়ে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে। শরীর অসুস্থ, বয়স হয়েছে তবুও সমাবেশ, গণসংযোগ থেকে শুরু করে ঝুঁকিপূর্ণ পিকেটিং কোনো কিছুতেই পিছপা হননি তিনি। ভয়কে জয় করা সেই দুঃসাহসিক মুহূর্ত দলীয় আদর্শের প্রতি তাঁর অগাধ বিশ্বাস সবচেয়ে বেশি প্রমাণিত হয় চরম দুঃসময়ে। যখন দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার সাহস পেতেন না অন্য কোনো নেতা-কর্মী, তখন এই দীপেন দেওয়ান একাই কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে সরকারের বিরুদ্ধে করেছেন দুঃসাহসিক প্রতিবাদ।

​সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উত্থান-পতনের পরও তাঁকে বঞ্চনা সইতে হয়েছে। সরকারি বা দলীয় মিটিংয়ে একসময়ের জুনিয়র নেতারাও চেয়ার ছেড়ে দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি; তাঁকে দেখেও সালাম বা নমস্কার জানানোর সৌজন্যটুকু দেখাননি। এই কঠিন অপমান ও উপেক্ষা তাঁকে প্রতিনিয়ত সহ্য করতে হয়েছে।এই পরিস্থিতির সাক্ষী যারা, তাদের মনে প্রশ্ন জাগত এই ভদ্রলোক এতকিছু সহ্য করে কেন এই দলটা করেন? উত্তর একটাই, দলীয় আদর্শ ও অনুগত থেকে দেশের জন্য কিছু করার মানসিকতা ছিল তাঁর মধ্যে প্রবল।

​দেরিতে হলেও পেলেন পুরস্কার ​দীর্ঘ সংগ্রাম, বঞ্চনা ও নিরবচ্ছিন্ন কর্মকাণ্ডই শেষ পর্যন্ত তাঁর রাজনৈতিক জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। বর্তমান সময়ে এসে বিএনপি তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে। এটি শুধু একটি প্রতীক নয়—এটি তাঁর দীর্ঘদিনের ত্যাগ, নিঃশর্ত দলীয় আনুগত্য এবং এলাকার মানুষের পাশে থাকার এক প্রকার স্বীকৃতি ও পুরস্কার। অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান প্রমাণ করলেন, এক দিনে রাজনৈতিক নেতা হওয়া যায় না।

তাঁর রাজনৈতিক জীবন এমন বহু পুরনো নেতাকে যেন শিখিয়ে দিল—কীভাবে করতে হয় আদর্শিক রাজনীতি। আজ যারা তাঁকে এড়িয়ে চলতেন, বাকা চোখে দেখতেন, তারাই হয়তো এখন তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায় পিছনে পিছনে ছুটবেন। এটাই কঠিন রাজনৈতিক বাস্তবতা। অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান নির্বাচনের ফল যাই হোক না কেন—রাজনৈতিক জীবনে তিনি আজ জয়ী। পাহাড়ের মানুষের জন্য এই 'জিতে যাওয়া' দীপেন দেওয়ান শেষ পর্যন্ত কতটা করতে পারেন, সেই অপেক্ষাতেই থাকবে রাঙামাটিবাসী।

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status