|
ইউল্যাব ছাত্রীর মৃত্যু, প্রেমিক সায়মনকে আসামি করে মামলা, সহপাঠীরা যা জানালেন
নতুন সময় প্রতিবেদক
|
![]() ইউল্যাব ছাত্রীর মৃত্যু, প্রেমিক সায়মনকে আসামি করে মামলা, সহপাঠীরা যা জানালেন মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘সহপাঠী ও ছেলে বন্ধু মানিল ফয়সাল সায়মনকে মূল অভিযুক্ত করে নিহতের বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলাটি করেছেন। মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।’ ওসি আরো বলেন, ‘এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনায় দায়ের করা অপমৃত্যু মামলা অন্য মামলায় রূপ নেয়। আত্মহত্যায় প্ররোচনা ও সহায়তার অপরাধ এনে মেয়েটির বাবার দায়ের করা মামলার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।’ পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত সায়মন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তানহার মৃত্যুর ঘটনার শুরু থেকেই সায়মনকে অভিযুক্ত করছেন তানহার ঘনিষ্ঠ সহপাঠীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও একটি তদন্ত চলছে। জানতে চাইলে ইউল্যাব প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক রাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘তানহার মৃত্যুর ঘটনায় অপর শিক্ষার্থী সায়মনকে অভিযুক্ত করার বিষয়গুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবগত আছে। এ ঘটনায় প্রাতিষ্ঠানিক তদন্ত চলছে। অপরাধ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তানহার বাবা আবুল বাশার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তানহার মৃত্যুর পর তার বান্ধবী ও সহপাঠীদের কাছ থেকে এরই মধ্যে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি। তারা জানিয়েছে, মেয়ে তানহার মৃত্যুর জন্য সায়মনই দায়ী! ছেলেটি তানহাকে নানাভাবে মানসিক নির্যাতন করেছে। এতে তানহা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। বেশ কিছুদিন থেকেই সে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছিল। তার কোনো ক্ষতি হয়ে গেলে এর জন্য সায়মন দায়ী থাকবে এবং তাকে যেন শাস্তির আওতায় আনা হয় মৃত্যুর আগে সে তার বান্ধবীদের কাছে অনুরোধ জানিয়ে যায়। তানহার বাবা আরো বলেন, ‘সবশেষ গত সোমবার মেয়ে ফোন করে আমাকে ঢাকায় আসতে বলে। আমার সঙ্গে তার কুমিল্লা চলে আসার কথা ছিল। সে তো ফিরেছে, তবে কাফনের কাপড় পরে। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই। আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে আমি বৃহস্পতিবার মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করি।’ অভিযুক্ত সায়মনের বিষয়ে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এমদাদ হাসান ইয়ামিন বলেন, ‘যেদিন তানহা আত্মহত্যা করে তার আগে আমার বাসার নিচে এসেছিল ও, সায়মনের খোঁজ করছিল। কিন্তু সায়মন তখন আমার বাসায় ছিল না, তার আগেই চলে গেছিল। ও আমার বাড়ির দারোয়ান ও আম্মুর সঙ্গে কথা বলেছিল কিন্তু সবাই যখন ওকে বলে সায়মন এই বাসায় নেই তখন ও চলে যায়। ওইদিন বিকেলের দিকেই সায়মন আমাকে কল দিয়ে জানতে চায় তানহার কিছু হয়েছে কিনা। তখন আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তানহা আত্মহত্যা করেছে। এটা সায়মনকে জানাতেই ও ফোন কেটে দেয়। তারপর থেকে ওর ফোন বন্ধ। লাস্ট আমাকে ও যেটা বলে যে, ও ওর কাকার বাসায় চলে গেছে।’ এদিকে গতকাল তানহার সহপাঠীদের কাছ থেকে জানা যায়, এক দিন আগেও সায়মন তার নতুন প্রেমিকার সঙ্গে কয়েক ঘণ্টা টানা ফোনে কথা বলেছে। সায়মনের নতুন প্রেমিকাও ইউল্যাবেরই শিক্ষার্থী। সায়মন কোথায় আছে তার নতুন প্রেমিকার কাছে এ তথ্য থাকতে পারে বলে তানহার সহপাঠীরা জানান। তানহার পরিবার ও তার সহপাঠীরা অবিলম্বে সায়মনসহ সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তার করে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে। একইসঙ্গে তানহার মৃত্যুর চার দিনেও ইউল্যাব কর্তৃপক্ষ বিষয়টিতে নীরব থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। তানহার পরিবার সায়মনের স্থায়ী বহিষ্কারসহ তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে গতকাল ইউল্যাব কর্তৃপক্ষ বরাবর একটি আবেদন করেছে। |
| পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |
