ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
শনিবার ৫ অক্টোবর ২০২৪ ২০ আশ্বিন ১৪৩১
ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়লো দুইজন
নতুন সময় প্রতিনিধি
প্রকাশ: Monday, 9 September, 2024, 9:56 PM
সর্বশেষ আপডেট: Monday, 9 September, 2024, 9:59 PM

ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়লো দুইজন

ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়লো দুইজন

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে(ইবি) হলের মিটিংয়ে ছাত্র আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করায় শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন দুই শিক্ষার্থী। রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে হলের শিক্ষার্থীদের মিটিংয়ে ছাত্র আন্দোলন নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করলে এ ঘটনা ঘটে। ওই দুই শিক্ষার্থী হলেন, লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আহসানুল্লাহ অলি এবং একই বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের নাফিজ ইকবাল।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পূর্বে তারা ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। তারা হলের মধ্যে গ্রুপিং করে আন্দোলনকে বিতর্কিত করা ও নিজেদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছিল। 

প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানায়, রবিবার সকালে হলের গণরুম বাতিল ঘোষণা করে ও অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় প্রশাসন। এ নিয়ে অনাবাসিক ও আগে গণরুমে থাকা শিক্ষার্থীদের নিয়ে টিভি কক্ষে মিটিং ডাকে অলি। সেখানে বিভিন্ন জন তাদের মত প্রকাশ করে। তবে অলি তার বক্তব্য দিতে গেলে আন্দোলন নিয়ে নেতিবাচক নানা মন্তব্য করে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, জুলাই ও আগস্টের পুরো সময় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছে। কিন্তু অলি তার বক্তব্যে দাবি করে ১৭ জুলাই হল বন্ধের পর ক্যাম্পাসে তেমন কোন আন্দোলনই হয়নি। এছাড়া আন্দোলনকারী ও সমন্বয়কদের নিয়ে বিভ্রান্তিকর নানা মন্তব্য করে। এতে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হলে হট্টগোল ও বাগবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে অলিকে মারধর করে ধাওয়া দেয় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এতে সে দৌঁড়ে ক্যাম্পাসের বাইরে চলে যায়। পরে তার বিভাগের জুনিয়র নাফিজ অলির পক্ষ নিলে শিক্ষার্থীরা তাকেও ধাওয়া দেয় এবং সেও ক্যাম্পাসের বাইরে চলে যায়। পরে সমন্বয়ক প্যানেলের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে কথা বলে শিক্ষার্থীদের শান্ত করে।


এ বিষয়ে মন্তব্যকারী আহসানুল্লাহ অলি বলেন, 'লালন শাহ হলের বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের আবাসনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হলের টিভি রুমে আলোচনা হচ্ছিল। এসময় আমি আমার বক্তব্যে বলি, বর্তমানে আন্দোলনকারীরা ছাত্রদের ফেইসবুক পোস্টের উপর ভিত্তি করে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে হল থেকে নামিয়ে দেয়। অথচ আন্দোলনকারী হাসানুল বান্না নামের একজনও ফেসবুকের গ্রুপে বিভিন্ন সময় শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামী সরকারকে নিয়ে পোস্ট দিয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ১৭ জুলাই বন্ধ হওয়ার পর আন্দোলন ঝিমিয়ে পড়ে এবং আমার বিভাগের শিক্ষক মতিন স্যাররা ২রা আগস্টের পর থেকে একাত্মতা প্রকাশ করলে পুনরায় আন্দোলন বেগবান হয় বলে মন্তব্য করি। তবে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা আমার বক্তব্য ভুল বুঝে আমার ওপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে আমাকে মারধর করে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়৷ এসময় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান তিনি।'

এদিকে শিক্ষার্থীদের ধাওয়ায় ক্যাম্পাস ছাড়া আরেক শিক্ষার্থী নাফিজ ইকবাল বলেন, 'আমার বিভাগের বড় ভাইয়ের সাথে ঘটনাটি ঘটার পর আমি পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছিলাম। এসময় তারা আমার পরেও চড়াও হয়। এক পর্যায়ে আমাকেও ছাত্রলীগের ট্যাগ দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়া হয়। এসময় তিনি আরও বলেন, ইতোপূর্বে যারা হলে থেকেছে একটা সিটের জন্য বাধ্যতামূলক ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম মিছিল মিটিংয়ে অংশ নেয়া লেগেছে। তাই বলে সবাইতো আর মন থেকে ছাত্রলীগ করে নাই।'

এদিকে আহসানুল্লাহ অলির করা অভিযোগ নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী হাসানুল বান্না বলেন, 'জানা-অজানা তথ্য' নামের আমাদের একটি ফেসবুক গ্রুপ আছে। যেখানে চাকরির প্রস্তুতির লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও প্রকল্পের তথ্য শেয়ার করা হতো। এটিকে সে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের ইতিবাচক প্রচার বলে দাবি করে, যা একদমই হাস্যকর। আমি আন্দোলনের শেষ পর্যন্ত সক্রিয়ভাবে সামনের সারিতে ছিলাম। যা সবাই দেখেছে। সেখানে সে পড়াশুনার ওই বিষয় নিয়ে সবার কাছে আন্দোলনকারী হিসেবে আমাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করে। একইসঙ্গে সে সমন্বয়ক ও ছাত্র আন্দোলন নিয়েও বিতর্কিত মন্তব্য করে। আমার বিষয়ে সে যাই বলুক আন্দোলনকে নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য আমাদের প্রচণ্ড আঘাত করেছে। হলের শিক্ষার্থীরাও এটি মেনে নিতে পারে নাই। কারণ, যারা পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবির সামনে জীবন বাজি রেখে আন্দোলন চলমান রেখেছিলে। তাদেরকে সে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ফলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তার ওপর চড়াও হয়।'

লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন বলেন, 'গণরুমে র‌্যাগিংসহ বিভিন্ন ধরণের ঘটনার কারণে আমাদের আগে থেকেই চিন্তা ছিল গণরুম বাতিলের। আমরা নোটিশ দিয়ে গণরুম বাতিল করেছি। আগামীতে আবাসিকতার বাইরে কেউ যেন হলে না থাকে সেজন্যই এটি করা। এ নিয়ে আমার কাছে কেউ কোন কথা বলেনি। এছাড়া রাতে ছাত্রদের মধ্যেও একটি ঘটনা ঘটেছে শুনেছি। এটি নিয়েও কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।'

� পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ �







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status