ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
শনিবার ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৩০ ভাদ্র ১৪৩১
রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যে যে প্রভাব ফেলতে পারে
নতুন সময় প্রতিবেদক
প্রকাশ: Tuesday, 27 August, 2024, 1:27 PM

রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যে যে প্রভাব ফেলতে পারে

রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যে যে প্রভাব ফেলতে পারে

বাংলাদেশের সম্প্রতি যে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ঘটে গেল, ভারতের ওপর তার যেমন রাজনৈতিক প্রভাব আছে, তেমনি অর্থনৈতিক প্রভাবও আছে। ভারতীয় কোনো কোনো গণমাধ্যম মনে করে, এই ঘটনা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে প্রভাব ফেলতে পারে।

গত এক দশকে বাংলাদেশের যে উচ্চ হারে প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তার বদৌলতে বাংলাদেশ এখন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতের অন্যতম বৃহত্তম অংশীদার এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বৃহত্তম। পরিবর্তিত বাস্তবতায় ভারতের অর্থনৈতিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা আছে বলে মনে করছেন ভারতের বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা।

ইকোনমিক টাইমসের সংবাদে বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত বাংলাদেশে যে পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করেছে, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি—যেমন জাপান, জার্মানি বা ফ্রান্সে সে পরিমাণ রপ্তানি করেনি। কিন্তু ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশে যে সামাজিক-রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা চলছে, তার প্রভাবে অর্থনৈতিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম বড় অর্জন ছিল গত এক দশকের বেশি সময় ধরে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করা। ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে গড়ে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ, যা বিশ্বে অন্যতম সর্বোচ্চ। এ সময় বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি তিন গুণেরও বেশি হয়েছে। ২০০৯ সালে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু জিডিপি ছিল ৮৪১ ডলার; ২০২৪ সালে যা ২ হাজার ৬৫০ ডলারে উন্নীত হয়েছে।

এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হাত ধরে বাংলাদেশ ২০১৫ সালে নিম্ন আয়ের কাতার থেকে বেরিয়ে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়। এ সময় দারিদ্র্য কমেছে। বিভিন্ন সামাজিক সূচকে উন্নতি হয়েছে।

বাংলাদেশের এই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বেড়েছে। রপ্তানি প্রবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের আমদানিও বেড়েছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য অনেকটাই বেড়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তৈরি পোশাকশিল্পের সুতা।

ভারত–বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য যে হারে বেড়েছে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য সেই হারে বাড়েনি। ২০০৯ সালের তুলনায় ২০১৩ সালে এসে ভারতের বৈশ্বিক পণ্য বাণিজ্য আড়াই গুণ বেড়েছে। কিন্তু একই সময়ে বাংলাদেশের সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় পণ্য বাণিজ্য বেড়েছে সাড়ে পাঁচ গুণ। ২০০৯ সালে বাংলাদেশে ভারতের দ্বিপক্ষীয় পণ্য বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২৪০ কোটি ডলার; ২০২৩ সালে যা ১ হাজার ৩১০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়।

এই সময় বিশ্বের অন্যান্য দেশে ভারতের রপ্তানি যে হারে বেড়েছে, বাংলাদেশে তার চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে। ২০০৯ সালে ভারতের পণ্য বাণিজ্যের ১ দশমিক ২ শতাংশের গন্তব্য ছিল বাংলাদেশ; ২০২৩ সালে যা ২ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০২৩ সালে ভারতের মোট রপ্তানির ১ দশমিক ২ শতাংশ গেছে জাপানে, দক্ষিণ কোরিয়ায় ১ দশমিক ৫ শতাংশ, ফ্রান্সে ১ দশমিক ৭ শতাংশ ও জার্মানিতে গেছে ২ দশমিক ২ শতাংশ।

বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানি ২০২১ সালে রেকর্ড ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়, যদিও এর পরের দুই বছরে সেটা কমেছে। ২০২২ সালে এই রপ্তানি কমে দাঁড়ায় ১ হাজার ৩৮০ কোটি ডলার এবং ২০২৩ সালে তা আরও কমে এক হাজার ১৩০ কোটি ডলারে নেমে আসে।

ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানি কমে যাওয়ার কারণ অবশ্য চাহিদা কমে যাওয়া। ২০২১ সালের পর উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমদানি সীমিত করার সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানি কমেছে।

ভারত থেকে বাংলাদেশের আমদানি কমলে সুতা সবচেয়ে বেশি মার খাবে। ভারতের বৈশ্বিক সুতা রপ্তানির ৩৫ শতাংশ বাংলাদেশে যায়। এতে ভারতের চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে সংবাদে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। তবে এতে ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে সুতার দাম কমতে পারে। তাতে ভারতের তৈরি পোশাক খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়তে পারে।

সংবাদে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে চলমান আর্থ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে অর্থনীতি আরও আক্রান্ত হবে এবং তাতে ভারত থেকে বাংলাদেশের পণ্য আমদানির চাহিদা কমবে। এতে বাংলাদেশের রপ্তানিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ভারতের ব্যবসায়ীরা সেই সুযোগ নিতে পারবেন বলে মনে হয় না। কারণ, তাঁদের সেই সক্ষমতা নেই।
প্রথম আলোর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

� পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ �







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status