ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
শনিবার ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৩০ ভাদ্র ১৪৩১
বিডিআরের জওয়ানদের রিমান্ডে নিয়ে লাশ ফেরত দিতেন জিয়াউল আহসান
নতুন সময় প্রতিবেদক
প্রকাশ: Tuesday, 27 August, 2024, 12:16 PM

বিডিআরের জওয়ানদের রিমান্ডে নিয়ে লাশ ফেরত দিতেন জিয়াউল আহসান

বিডিআরের জওয়ানদের রিমান্ডে নিয়ে লাশ ফেরত দিতেন জিয়াউল আহসান

এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান ৪৩ জন বিডিআর সদস্যকে হত্যা করেন বলে দাবি করেছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর (অব.) রেজাউল করিম।

শনিবার (২৪ আগস্ট) রাতে বেসরকারি টিভি চ্যানেল আইয়ে প্রচারিত ‘তৃতীয়মাত্রা’ অনুষ্ঠানে মেজর (অব.) রেজাউল করিম পিলখানা ট্র্যাজেডির ঘটনাপ্রবাহ বর্ণনাকালে এসব কথা বলেন।

সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর (অব.) রেজাউল করিম বলেন, ‘জিয়াউল আহসান ছিলেন র‍্যাব-২ এর টোয়াইসি। পিলখানার ঘটনার বিচারকাজ চলাকালে তার নেতৃত্বে একটি ইন্টারোগেশন সেল করা হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদের নামে ৪৩ জন বিডিআর সদস্যকে হত্যা করেন এই জিয়া। পিলখানার ঘটনার সময়ে একটি ভিডিও আমাদের কাছে আসে, যেখানে দেখা যাচ্ছিল পিলখানার ভেতরে সেনা কর্মকর্তা গুলজারকে একটি কবর খুঁড়তে বাধ্য করা হয়। পরে সেই কবরের পাশেই তাকে গুলি করে হত্যা করে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছিল। এই ভিডিও নিয়ে নেন জিয়াউল আহসান। ক্যাপ্টেন ফুয়াদ এর সাক্ষী। এই জিয়ার কোনো যোগ্যতাই ছিল না, অথচ এসব অপকর্মের কারণে তাকে কয়েক দফায় পদোন্নতি দেওয়া হয়।’

পিলখানা ট্র্যাজেডির পর সেনানিবাসে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সঙ্গে মতবিনিময়ের ঘটনার বর্ণনায় রেজাউল করিম বলেন, ‘ঘটনার পর আমরা শুধু একুটু দাবি করেছিলামপ্রধানমন্ত্রী এখানে আসতে ভয় পাচ্ছেন কেন? তার এসে ঘটনার ব্যাখ্যা দেওয়া উচিত। আমরা আমাদের দাবি তুলে ধরতে চেয়েছি, বলতে চেয়েছি এই এই ঘটনার প্রমাণ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চেয়েছি—শুধু আমাদের অনুমতি দিন জড়িতদের জিজ্ঞাসা করি, এটার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। সেদিন প্রধানমন্ত্রীর সামনে আমরা যে কয়জন কথা বলেছি সবার নামের তালিকা করা হয়। পরবর্তী সময়ে নানাভাবে তাদেরকে হেনস্তা করা হয়েছিল। এই তালিকাটা অনেক বড়।

সুনিতা পালকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে সজীব ওয়াজেদ জয় (শেখ হাসিনার পুত্র) বলেছিলেন—বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ৩৫ শতাংশ ইসলামী উগ্রবাদীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এরপর ২০০৯ সালের ৩ নভেম্বর পিলখানার ভেতর থেকে আমাকে চোখ বেঁধে তুলে নেওয়া হয়। সাত-আট দিন জানতাম না আমি কোথায় আছি। চোখ খোলার পর দেখি আমি ডিজিএফআইয়ের কার্যালয়ে। আমার সামনে বসা কর্নেল সালেহ ও ব্রি. জে. ইমরুল কায়েসকে (মিজারুল কায়েসের ছোট ভাই)। আমাকেও ইসলামী উগ্রবাদী বানানো হলো।’

সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়—আমি নাকি ব্যারিস্টার তাপসের অফিসে বোমা মেরেছি। অথচ সেখানে কোনো হতাহতের ঘটনাই ঘটেনি। জেনেছি সেখানে এসির কম্প্রেসার বিস্ফোরিত হয়েছিল। এক পর্যায়ে আমার স্ত্রীকেও তুলে আনা হয়। ৪৬ ব্রিগেডের সাবেক কমান্ডার রেজানুর খান আমার বাবার সঙ্গেও অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করেন। এরপর ২০১০ সালের ৪ অক্টোবর আমাকে জেলে পাঠানো হয়। কিন্তু, তাপসের অফিসে বোমা হামলার অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। এ কারণে, আমার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে উদ্ধ্যত আচরণের অভিযোগ আনা হয়। ২০১৪ সালের এপ্রিলে আমি মুক্তি পাই। এরপর কোনো চাকরি পাইনি, কোনো ব্যবসাও করতে দেওয়া হয়নি। উবার চালিয়ে ও রাজমিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছি।’

মেজর (অব.) রেজাউল করিম বলেন, ‘২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি আমি র‍্যাব-৩-এ কর্মরত ছিলাম। র‍্যাব-৩ কে পিলখানার হাসপাতাল গেট বলে পরিচিত নিউ মার্কেট এলাকায় মোতায়েন করা হয়। আমিও সেখানে ছিলাম। যখন দেখছি বিডিআরের সদস্যরা গুলি করছে তখন আমি র‍্যাব-৩-এর কমান্ডার কর্নেল জাকির ও র‍্যাবের এডিজি রেজানুর খানকে ফোন করে সব খুলে বলি। জাকির খুব ক্ষিপ্ত হন। রেজানুর খান ফোন করে আমাকে তাত্ক্ষণিকভাবে সেখান থেকে প্রত্যাহার করে নেন। সেখান থেকে চলে আসার পর বেলা ৩টার দিকে আমরা আবাহনী মাঠে জড়ো হই। আমাদের একটাই দাবি ছিল—পিলখানায় যেন সেনা অপারেশন চালানো হয়।

৪৬ ব্রিগেডের ব্রি. জে. হাকিম সেখানে সবাইকে বললেন অপারেশন হবে, তবে এখনো অনুমতি আসেনি। এক পর্যায়ে হাকিম পালিয়ে যান। পরে আমরা সেনানিবাসে চলে আসি। সন্ধ্যায় শুনি কামরাঙ্গীরচর এলাকায় সেনা কর্মকর্তাদের লাশ পাওয়া যাচ্ছে। সন্ধ্যায় সেখানে গিয়ে প্রথমে ক্যাপ্টেন মাজহারের লাশ গ্রহণ করি। এরপর কর্নেল জাহিদের (তৎকালীন আইজিপি নূর মোহাম্মদের মেয়ের জামাতা) লাশ পাই। ঘটনা ঘটার সময় আইজিপি নূর মোহাম্মদও র‍্যাবকে অনুমতি দেননি। অথচ, পুরো পিলখানা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার মতো সক্ষমতা র‍্যাবের ছিল।’

� পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ �







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status