ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
বুধবার ৫ নভেম্বর ২০২৫ ২০ কার্তিক ১৪৩২
গ্রেপ্তার সেনা কর্মকর্তাদের চাকরি আছে কি না, যা বলল সেনা সদর
নতুন সময় প্রতিবেদক
প্রকাশ: Wednesday, 5 November, 2025, 6:01 PM

গ্রেপ্তার সেনা কর্মকর্তাদের চাকরি আছে কি না, যা বলল সেনা সদর

গ্রেপ্তার সেনা কর্মকর্তাদের চাকরি আছে কি না, যা বলল সেনা সদর

আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম-খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের তিন মামলায় কারাগারে থাকা ১৫ সেনা কর্মকর্তার চাকরি এখনো আছে কি না, সেই প্রশ্নের জবাবে সেনাসদর বলছে, এটা একটা আইনগত প্রক্রিয়া।

সেনা সদর বলছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) আইনে অভিযোগপত্রে নাম এলে চাকরি যাওয়ার বিধানটি স্পষ্ট করা হয়নি। সেটা স্পষ্টীকরণের অপেক্ষায় আছে সেনা সদর।

বুধবার ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সেনাসদরের পিএস পরিদপ্তরের এজি শাখার পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মুস্তাফিজুর রহমান।

এর আগে সেনাবাহিনীর তরফে বলা হযেছিল আইসিটি আইনের সঙ্গে সেনা আইনের যে অসামঞ্জস্যগুলো রয়েছে, সেগুলো ঘোচানোর বিষয়ে সরকারের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করছে।

সেই প্রক্রিয়া কতদূর এগোলো জানতে চাইলে ব্রিগেডিয়ার মুস্তাফিজুর বলেন, “এটি একটি আইনি প্রক্রিয়াগত বিষয়। আপনারা জানেন যে আর্মি অ্যাক্ট ১৯৫২ এবং আইসিটি অ্যাক্ট ১৯৭২ দুটোই স্পেশাল অ্যাক্ট। এই দুটো আইনকে আমরা কখনোই মুখোমুখি দাঁড় করাবো না।

“আইসিটি অ্যাক্টেই বর্তমানে মামলাটি পরিচালিত হচ্ছে, আমরা সরকারের সাথে ‘এনগেজমেন্টে’ আছি। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দেশের যে প্রচলিত আইনগুলো রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে যে আইনেই বিচার হবে আমরা চাইবো, সরকার একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিচারটি সম্পন্ন করবে।”

গ্রেপ্তার সেনাকর্মকর্তাদের অধিকার বিষয়ে সেনাসদর ওয়াকিবহাল আছে তুলে ধরে এই কর্মকর্তা বলেন, “সেই সাথে আমি এটাও বলতে চাই, যারা গুম-খুনের শিকার হয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি আমরা সহানুভূতিশীল। এবং একই সাথে আমাদের যে অফিসাররা আছে তাদের যে ‘রাইটস’ আছে, ‘রাইটস অ্যান্ড প্রিভিলেইজেস’, সেটার সম্পর্কেও আমরা ওয়াকিবহাল আছি এবং আমরা সেটার ক্ষেত্রে সরকারের সাথে যোগাযোগ রাখছি।”

সরকার যদি ‘আর্মি অ্যাক্টের’ অধীনে এই বিচার করতে চায় সেজন্যও সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি চলছে তুলে ধরে ব্রিগেডিয়ার মুস্তাফিজুর বলেন, “আমরা দুটো আইনকে সামনা-সামনি দাঁড় করাবো না। সরকার যেটাকে ভালো মনে করে, সেভাবেই যেন এগিয়ে যায়, আমরা প্রস্তুত আছি। যদি এটা আর্মি অ্যাক্টের অধীনে বিচার করতে বলে সেটা আমরা করতে পারবো। সেভাবে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

কারাগারে থাকা এই কর্মকর্তারা এখন চাকরি বহাল আছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটিও আরেকটি আইনি প্রক্রিয়াগত বিষয়। আইসিটি অ্যাক্টের যে থার্ড অ্যামেন্ডমেন্ট, ৬ অক্টোবর যেটা প্রকাশিত হয়েছিল সেখানে ‘ডিসকোয়ালিফিকিশন টু হ্যাভ আ পাবলিক অফিস’, এটার বিষয়ে ‘ইন্টারপ্রিটেশনের প্রবলেম’ আছে। সেটা হচ্ছে যে এটাকে বিভিন্নভাবে ইন্টারপ্রিট করা যেতে পারে। সেটার বিষয়ে সরকারের সাথে আমাদের যোগাযোগ জারি আছে। আমরা এটার বিষয়ে একটা স্পষ্ট নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি।

“আমরা চাইব যে এই বিষয়টা আরও পরিষ্কার হতে। যদি এটাকে ‘ডিসকোয়ালিফিকেশন’ বলতে ‘টার্মিনেশন’ বোঝায় সেটা কীভাবে করে ‘টার্মিনেশন’ হবে সেটাও সেখানে পরিষ্কার করে বলা নেই। সেনা অফিসারদের ক্ষেত্রে ‘পাবলিক অফিস হোল্ড’ করছে সেটা কী… বলা যাবে কি না সেটার ব্যাপারেও ‘ক্ল্যারিফিকেশনের’ সুযোগ রয়েছে। সরকারের সাথে আমাদের এনগেজমেন্ট জারি রয়েছে। আমরা আশা করছি একটি সুষ্ঠু সমাধানের পথে আমরা এগোব, একটা ভালো ‘রেজাল্ট’ পাবো ইনশাল্লাহ।”

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই তিন মামলায় ২৮ আসামির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের দেওয়া আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে গেল ৮ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

এরপর ১১ অক্টোবর সেনা সদরের এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় তিন মামলার ২৮ আসামির মধ্যে চাকরিতে থাকা এবং এলপিআরে যাওয়া ১৫ জনকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পরে তাদের রাখার জন্য ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে অস্থায়ী ‘কারাগার’ ঘোষণা করে সরকার।

আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম-খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের তিন মামলায় হেফাজতে থাকা ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে গত ২২ অক্টোবর কারাগারে পাঠায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

তাদের মধ্যে দশজন র‌্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে আটকে রেখে নির্যাতনের মামলা আসামি। তারা হলেন-

• র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম

• র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার

• র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান

• র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম

• র‌্যাবের সাবেক পরিচালক (ইন্টেলিজেন্স উইং) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েল

• র‌্যাবের সাবেক পরিচালক (ইন্টেলিজেন্স উইং) লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন

• র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন

• র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (এখন অবসরকালীন ছুটিতে)

• র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) কর্নেল কে এম আজাদ

• র‌্যাবের সাবেক পরিচালক (ইন্টেলিজেন্স উইং) কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম

তিনজন সেনাবাহিনীর জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) আটকে রেখে নির্যাতনের মামলা আসামি। তারা হলেন-

• ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক (সিটিআইবি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিক

• ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক (সিটিআইবি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজাহার সিদ্দিক

• ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক (সিটিআইবি) মেজর জেনারেল শেখ মো.সারওয়ার হোসেন

বাকি দুজন এক সময় বিজিবিতে দায়িত্বরত ছিলেন। জুলাই অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা-বনশ্রীতে ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামি তারা।

• বিজিবির সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম

• বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর রাফাত বিন আলম মুন

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status