বাংলাদেশ নিয়ে ট্রাম্পের নীতি কেমন হতে পারে
নতুন সময় ডেস্ক
|
![]() বাংলাদেশ নিয়ে ট্রাম্পের নীতি কেমন হতে পারে গত নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্প ডেমোক্র্যাট কমলা হ্যারিসকে হারানোর পরই বাংলাদেশিদের কাছে সবচেয়ে বড় আগ্রহের বিষয় হয়ে উঠেছে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি। বাংলাদেশ নিয়ে ট্রাম্পের টুইটও সেই আগ্রহের পালে আরও হাওয়া দিয়েছে। সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, গত নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এক্সে ওই টুইট করেন তিনি। ক্ষমতায় ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার তিনি কী নীতিতে আমেরিকাকে চালাবেন, সেটাই বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে। ইউক্রেন, গাজা, চীন ছাপিয়ে সেই নীতিতে বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানও রয়েছে। শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর ডট এলকের এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হচ্ছে। ডেইলি মিরর ডট এলকের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির ব্যাপারে বলা হয়, বাংলাদেশের জন্য ট্রাম্পের এই মেয়াদ অর্থনৈতিক সুযোগ এনে দিতে পারে। আবার ট্রাম্প ক্ষমতায় যাওয়ায় বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখিও হতে পারে। কেননা আমেরিকা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য এবং সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) একটি প্রধান উৎস। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প অনেকাংশে আমেরিকার বাজারের ওপর নির্ভরশীল। ট্রাম্প নতুন বাণিজ্যনীতি ঘোষণা করতে পারেন। তাতে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পেও প্রভাব পড়বে। এর আগে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বাইডেন প্রশাসনের বেশ ভালোই সহযোগিতা ছিল। কিন্তু ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির কারণে এই সহযোগিতা কমে যেতে পেরে। বিশেষ করে টেক্সটাইলস ও অন্যান্য পণ্যে শুল্ক বাড়ানো হলে বাংলাদেশের অর্থনীতিও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রভাব আমেরিকার সঙ্গে গভীর বাণিজ্য সম্পর্কের সুযোগ তৈরি করতে পারে। তবে এই সুযোগগুলো ট্রাম্পের ‘বাণিজ্য সুরক্ষাবাদের’ কাছে আটকে যাবে। ট্রাম্প যদি মার্কিন বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং শুল্ক বৃদ্ধির অগ্রাধিকার অব্যাহত রাখেন, তাহলে বাংলাদেশ মার্কিন বাজারে প্রবেশে আরও বাধার সম্মুখীন হতে পারে। ডেইলি মিরর ডট এলকের প্রতিবেদন বলছে, এমন হলে বাংলাদেশের অর্থনীতির গতি থমকে যেতে পারে এবং গার্মেন্টস খাতে চাকরি হারাতে পারে অনেকে। ট্রাম্পের আমলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে মার্কিন নীতি কোনো প্রভাব ফেলবে কি না–এ ব্যাপারে বাংলাদেশিদের বেশ আগ্রহ রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এ নিয়ে ডেইলি মিরর ডট এলকে বলছে, ট্রাম্পের শাসনামলে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ কিছুটা সংকটে পড়তে পারে। এতে বলা হয়, ধর্মীয় সহিষ্ণুতা, সংখ্যালঘু, বিশেষত হিন্দুদের সঙ্গে আচরণ বাংলাদেশ‑আমেরিকা সম্পর্কের একটি ভরবিন্দু হয়ে উঠতে পারে। এই ইস্যু বাংলাদেশ-আমেরিকা সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। যা হোক, ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি আদর্শগত এসব উদ্বেগের চেয়ে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এর অর্থ হচ্ছে, আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্কই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ডেইলি মিরর ডট এলকের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা নিয়েও আলোচনা করা হয়। এতে বলা হয়, ট্রাম্পের শাসনামলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হতে পারে ভারত। আগের মেয়াদেও তারা বেশ সুবিধা পেয়েছিল। এবার দেশটি আমেরিকা থেকে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতে সুবিধা পেতে পারে। তবে বাণিজ্য খাতে চ্যালেঞ্জ থাকবেই। ট্রাম্পের এবারের মেয়াদেও পাকিস্তানের ব্যাপারে পররাষ্ট্রনীতিতে তেমন পরিবর্তন আসবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। আগের মেয়াদেও সম্পর্ক ভালো ছিল না। এবারও ভালো হবে না। বিশেষ করে চীন ও সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে পাকিস্তান যদি নীতি পরিবর্তন না করে। তবে কৌশলগত সম্পর্ক থাকবেই। এর বাইরে শ্রীলঙ্কা ও নেপালকে ট্রাম্পের নীতির মধ্যে থেকেই চলতে হবে।
|
পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |