ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
দরদ: দরদহীন নির্মাণের এক প্রশ্নবিদ্ধ ছবি!
নতুন সময় ডেস্ক
প্রকাশ: Saturday, 23 November, 2024, 1:34 PM
সর্বশেষ আপডেট: Saturday, 23 November, 2024, 1:37 PM

দরদ: দরদহীন নির্মাণের এক প্রশ্নবিদ্ধ ছবি!

দরদ: দরদহীন নির্মাণের এক প্রশ্নবিদ্ধ ছবি!

মানসিক অসুস্থতার আড়ালে একের পর এক খুন জায়েজ করার ছবি ‘দরদ’। ফর্মুলা আক্রান্ত এবং অগণিত সাইকো থ্রিলার ছবির গল্পের সাথে মিল থাকা অনন্য মামুনের নতুন ছবি ‘দরদ’। প্রচলিত বাংলা বা হিন্দি ছবির মতো সন্ত্রাসকে গ্ল্যামারাইজ করার এক ছবি ‘দরদ’। এদেশের মানুষের প্রচলিত ভাষার প্রতি দরদহীন এক ছবি ‘দরদ’। ঘোষণা দেয়ার বেশ পরে মুক্তি পাওয়া ছবির টাইটেলে লেখা ‘মেগাস্টার শাকিব খানে’র নতুন ছবি ‘দরদ’। অসঙ্গতি ভরা চিত্রনাট্য আর সাধারণ দর্শকদের বুঝতে কষ্ট হয় এমন দরদহীন নির্মাণের ছবি ‘দরদ’।

খুন দিয়েই শুরু ছবির গল্প। এরপর ক্রমশ জানা যায় দুলাল ওরফে দুলু মিয়া আট বছর বয়সে বাংলাদেশ থেকে বেনারস যায়, পরিণত বয়সে সে অটো চালায়। সে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল ফাতেমাকে। ফাতেমার জন্য সে সবকিছু করতে পারে। অন্যদিকে ফাতেমার ধ্যানজ্ঞান নায়ক সরফরাজ খান। দুলু মিয়া কথা দিয়েছিল সে ফাতেমাকে নায়ক সরফরাজ খানের সাথে দেখা করিয়ে দেবে। দুলু তার কথা রাখে। সরফরাজ খানের সঙ্গে দেখা করতে যেয়ে ফাতেমা জীবনের সবচেয়ে ভয়ংকর মুহূর্তের দেখা পায়। ফাতেমা এই নিগ্রহের দায় নিতে পারে না, নৌকা থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে। প্রতিশোধ হিসেবে শুরু হয় ক্রমাগত খুনের ঘটনা এবং দুলু মিয়া শেষমেশ আত্মসমর্পণ করে।


ছবিতে দুলু মিয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাকিব খান এবং ফাতেমার চরিত্রে সোনাল চৌহান। খুনের ঘটনা তদন্তে ছবির পুলিশ টিমে পায়েল সরকার, ফারহান রিও এবং এলিনা শাম্মী অভিনয় করেছেন। শুটিং টিমে সরফরাজ খানের ভূমিকায় রাহুল দেব, তার সহকারী হিসেবে ইমতু রাতিশ, নায়িকার চরিত্রে সাফা মারওয়া, প্রযোজকের ভূমিকায় রাজেশ শর্মা, পরিচালকের চরিত্রে অলোক জইন ছাড়াও জেসিয়া ইসলাম,আমির সিরাজী এবং বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী অভিনয় করেছেন। 

লেখক, গীতিকবি, সঞ্চালক ও সাংবাদিক তানভীর তারেকও একটি অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছেন। শাকিব খান, এলিনা শাম্মী, ইমতু রাতিশ এবং তানভীর তারেক নিজ নিজ চরিত্রে সাবলীল ছিলেন। ভাষার কারণে কি না জানি না সোনাল চৌহানের সংলাপের সাথে তার অভিব্যক্তির মিল ছিল খুবই কম।

ছবির কাহিনি, চিত্রনাট্য, সংলাপ ও পরিচালনায় ছিলেন অনন্য মামুন। প্রযোজনায় ছিলেন অশোক ধানুকা, সরদার সানিয়াত হোসেন, গোলাম কিবরিয়া টিপু এবং অনন্য মামুন। ছবির বেশিরভাগ শুটিং হয়েছে ভারতের উত্তর প্রদেশের বেনারসে।

ছবিতে গান ব্যবহৃত হয়েছে চারটি। গানগুলো হিন্দি ভার্সনেও আছে। ‘এই ভাসাও এই ডুবাও’ গানের গীতিকার জাহিদ আকবর। আরাফাত মেহমুদের সুরে এই গানে কণ্ঠ দিয়েছেন বালাম ও কোনাল। ‘লুট করেছ’ শিরোনামের গান লিখেছেন আরাফাত মেহমুদ ও আসিফ ইকবাল। আরাফাত মেহমুদের সুরে এই গানে কণ্ঠ দিয়েছেন নোবেল। সোমেশ্বর অলির লেখা ‘এক প্রেমে’ শিরোনামের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ইমরান এবং এই গানের সুরকারও আরাফাত মেহমুদ। এছাড়া জালাল চৌধুরীর ‘ওরে পাগল মন’ গানের সুরকার স্যাভি এবং কণ্ঠ দিয়েছেন নোবেল ও কোনাল। 

এবার ছবির ভিন্ন কিছু দিক। আট বছর বয়সে দুলু মিয়া বেনারসে গেলেও ছবিতে শুধু তিনি বাংলাদেশের ‘লোকাল’ ভাষায় কথা বলেন তাও সেটা কমেডি টোনে। অন্য সবাই বেনারসের বাসিন্দা হলেও তারা কথা বলেন পশ্চিমবঙ্গ বা কলকাতার ভাষায়! প্রিয়তম মানুষের মৃত্যুতে দুলু মিয়া ফাতেমার নিগ্রহকারীদের একের পর এক খুন করে। কিন্তু ছবিতে দেখা যায় ফাতেমাকে নিগ্রহের আগে সরফরাজ খানকে ওষুধ মেশানো পানীয় দেয়া হয় যা পান করে তিনি আর স্বাভাবিক থাকেন না। ফাতেমার নিগ্রহের ঘটনায় তিনি ছিলেন না। তাহলে তাকে কেন খুন করা হলো? খুনের ঘটনায় তদন্ত টিমের প্রধান পায়েল সরকারকে দেখানো হয়েছে গর্ভবতী অবস্থায় তিনি তদন্ত কাজ সারছেন। কোন যুক্তিতে এটা করেছেন পরিচালক অনন্য মামুন? বলা হচ্ছে সর্বভারতীয় ছবি হিসেবে অনেক ভাষায় এই ছবি মুক্তি পাবে। এই ছবির আরেক ম্যাড়ম্যাড়ে দিক এর রং। ছবির কালার এবং ফটোগ্রাফিও আধুনিক মনে হয়নি।
সাইকো থ্রিলার গল্পের চিত্রনাট্য যতটা তরতাজা হওয়া উচিত ছিল ‘দরদ’ ছবির চিত্রনাট্য আদৌ তেমন নয়। ছবির প্রথম ‘হাফ’ অনেক ধীর গতির মনে হয়েছে। ক্লাইমেক্স তৈরি কিংবা ছবির শেষে গল্পের শেষটা তুলে ধরার জন্য একই দৃশ্য দু’বার তিনবার করে দেখানোর ফলে প্রচলিত দর্শকদের ধৈর্যচ্যুতি খেয়াল করা যায়। 

শেষমেশ মানসিক হাসপাতালে দুলু মিয়ার ঠাঁই হলে সে চোখ টিপ মেরে বুঝিয়ে দেয় পাগল হওয়া তার ভান ছিল এবং সে জিতেছে। গল্প জায়েজ করার জন্য সিনেমার শেষের লেখা দেখা যায় এমন-ভালোবাসা এবং যুদ্ধে সবকিছু জায়েজ! শাকিব খানের শেষ তিনটি ছবি ‘প্রিয়তমা’, ‘রাজকুমার’ ও ‘তুফান’ ছবির মতো দরদ বক্স অফিসে সাড়া নাও জাগাতে পারে।

তবু জয় হোক বাংলা ছবির।

� পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ �







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status