বরগুনার আমতলী উপজেলায় পাগলা কুকুরের কামড়ে মোট ৪৩ জন বৃদ্ধ শিশু-কিশোর আহত হয়েছে। অবশেষে শুক্রবার রাতে কুকুরটি স্থানীয় লোকজন পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন।
গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে পৌরসভার ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
এ খবর ছড়িয়ে পরার পর এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে বাড়িতে, পাড়া-মহল্লায় পাহারা বসিয়েছে।
জানা গেছে, সকাল ৯টার দিকে আমতলী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এমএ কাদের ও নান্নু মোল্লা সড়কের অবস্থিত এনএসএস অফিসের সাপোর্ট স্টাফ মাসুদ রানা (৪৫) কাজ করছিলেন।
এ সময় হঠাৎ করে একটি পাগলা কুকুর এসে তাকে কামড়ে দৌড়ে চলে যায়। এর পর একে একে কুকুরটি একই ওয়ার্ডের রাফিন (৬), জাহিদ (১৫), তানিয়া বেগম (১১), আবু রায়হান (১২), তানজিল আহম্মেদ (১৫), লাল চান (১০), তমাল (২৪), আপন হাওলাদার (২০), শাকিব (১৪), শংকর (৩২), জোহামনি (৯), সীমা (২৯), শেফালী (৫০), নির্মল (৫৫), ইয়ামনি (১১), নয়ন (১৯), মোমেনা (১৭), হাফছা (৩২), এখলাস (১৩), আব্দুল মন্নান (৩৩), ইয়ামিন (১৪), বাচ্চু মিয়া (৪০), তিন নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল্লাহ (৭), আরাফাত (৯), আব্দুল মালেক (৭৫), হাসিব (৭), ইউসুব (২৪), সাগর (১৯), আরিফ (১৮), শাহাভানু (১০৪) ও নির্মল (৫৫) আহত হন। আরো নাম না জানা অনেকে আহত হয়েছেন। কুকুরের রাক্ষসী থাবা থেকে বেঁচে গেলেন ৭/৮ জনের মত।
রাফিন নামে শিশুটি জানায়, বাড়ির সামনে মাঠে খেলা করার সময় হঠাৎ একটি কুকুর এসে তাকে পেছন থেকে ২-৩টি কাপড় দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
রাফিনের বাবা মস্তফা মাতুব্বর বলেন, ছেলের চিৎকার শুনে দৌড়ে গিয়ে দেখি রক্তাক্ত অবস্থায় সে চিৎকার করছে, ভয়ে তার শরীর কাঁপছিল, দ্রুত তাকে উদ্ধার করে আমতলী হাসপাতালে নিয়ে যাই, হাসপাতালে এবং পৌরসভায় কোনো টিকা না থাকায় বাইরে থেকে কিনে টিকা দিয়েছি।
আমতলী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের সত্তরোর্ধ্ব আব্দুল মালেক জানান, একে সরকারি হাইস্কুলের সড়ক ধরে বাসায় ফিরছিলাম, হঠাৎ একটি কালো রঙের পুরুষ কুকুর এসে আমাকে কামড় দেয়, ভয়ে আমি দৌড় দিয়েও রক্ষা পায়নি, পরে ভ্যাকসিন কিনে চিকিৎসা নিয়েছি।
পাগলা কুকুরে কামড়ের ১৮ জন লোক আহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পরায় আমতলী পৌরসভার এক, দুই ও তিন নম্বর ওয়ার্ডে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, এবং যুবকেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে পাড়ায়-মহল্লায় পাহারা বসায়, এ সময় তারা কোনো কুকুর দেখা মাত্র ধাওয়া করে মারার চেষ্টা করছেন।
আমতলী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা, মনিরুজ্জামান খান বলেন, কুকুরের কামড়ে আহত ১২ জনকে আমতলী হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়েছি, আরও ছয়জন বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউনিয়ন) ও পৌর প্রশাসক মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, পাগলা কুকুরের আক্রমণে আহত হওয়ার খবর শুনে পৌরসভার সংশ্লিষ্ট শাখাকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।