ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
শনিবার ১২ অক্টোবর ২০২৪ ২৭ আশ্বিন ১৪৩১
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ যেভাবে কাজ করে
নতুন সময় প্রতিবেদক
প্রকাশ: Sunday, 29 September, 2024, 9:14 PM

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ যেভাবে কাজ করে

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ যেভাবে কাজ করে

১৯৬২ সালে ভারত-চীন এবং ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর ব্যর্থতার পরিচয় দেয়। সেই গোয়েন্দা তথ্যের ঘাটতি থেকে একটি নতুন গোয়েন্দা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারত। ১৯৬৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় ‘র’। রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র) নামে তৈরি এই সংস্থার ওপর দায়িত্ব পড়ে বিদেশি সরকার, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিবর্গের তথ্য সংগ্রহ করার।


র-এর প্রথম প্রধান হিসাবে নিযুক্ত হন রামেশ্বর নাথ কাও। আর শঙ্করণ নায়ার হন তার দু-নম্বর অফিসার। এই দুজন ছাড়াও ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো থেকে ২৫০ জনকে র- উইংয়ে বদলি করা হয়। পরে, ১৯৭১ সাল থেকে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরাসরি ‘র’ এজেন্ট বেছে নেওয়া শুরু হয়।

১৯৭৩ সালের পর এই সরাসরি নিয়োগের প্রক্রিয়াও বদলে যায়। শুরু হয় সরাসরি নিযুক্ত কর্মকর্তাদের এক কঠিন প্রতিযোগিতা। তাদের বেশ কয়েকটি পরীক্ষা পার করতে হয় তাদের।

লেখক, সাংবাদিক নীতিন গোখলে তার ‘আরএন কাও, জেন্টলম্যানস্ স্পাইমাস্টার’ বইয়ে লিখেছেন, ‘র' এ প্রথমে মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা হতো। পরীক্ষার্থীদের ভোর তিনটায় কোন এক জায়গায় যেতে বলা হতো। সেখানে পৌঁছানোর পর তাদের অবজেক্টিভ টাইপ টেস্ট দেওয়া হতো। যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতেন, তাদের ইন্টারভিউ নেওয়া হতো। ওই ইন্টারভিউ নিতেন যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার অফিসার।’


‘র’-এর বিশেষ সচিব পদ থেকে অবসর নেওয়া রানা ব্যানার্জী বলেন, এখন ৯৫ শতাংশেরও বেশি কর্মী ভারতীয় পুলিশ সেবা বা আইপিএস থেকে নির্বাচিত হন এবং অর্থনৈতিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কাজের জন্য কিছু কর্মকর্তাকে কাস্টমস এবং আয়কর বিভাগ থেকে নেওয়া হয়।

‘র’ এখন যেভাবে কর্মকর্তা নিয়োগ করে, সেই বাছাই প্রক্রিয়া নিয়ে সংস্থার একটি অংশেরই সমালোচনা আছে।

গুপ্তচর সংস্থাটির প্রাক্তন প্রধান বিক্রম সুদ তার বই ‘দ্য আনএন্ডিং গেম’-এ লিখেছেন, কোনো আইপিএস অফিসার ‘র’-এ যোগ দিতে দিতে তার বয়স ৩০ বা তার বেশি হয়ে যায়। ওই বয়সে নতুন কোনো পেশায় মানিয়ে নেওয়া যে কারো পক্ষেই কঠিন। এই বয়সে খুব বেশি ঝুঁকি নেওয়ার পরিস্থিতিতে থাকে না কেউ।

বিক্রম সুদ লিখেছেন, ‘পুলিশ সার্ভিস থেকে গোয়েন্দা এজেন্সিতে নিয়োগ এখন আর অতটা কার্যকর পদ্ধতি নয়। এ এমন একটা পেশা, যেখানে ভাষার দক্ষতা এবং খবর বের করার শিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই কাজের জন্য প্রশিক্ষণ পুলিশের থাকে না। গুপ্তচরদের অর্থনৈতিক, সাইবার, বৈজ্ঞানিক এবং কৌশলগত ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ হতে হবে, যে প্রশিক্ষণ আইপিএস অফিসারদের দেওয়া হয় না।’

নবনিযুক্ত এজেন্টদের বিভিন্ন বৈদেশিক ভাষা ও ভৌগোলিক কৌশলগত বিশ্লেষণ নিয়েও তাদের পারদর্শী করে গড়ে তোলা হয়। তাদের অধ্যয়নের তালিকায় সিআইএ, কেজিবি, মোসাদ ও এমআই৬ নিয়েও কেইস স্টাডি রয়েছে।

প্রাথমিক প্রশিক্ষণের পরে তাদের ফিল্ড ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোতে রাখা হয় যেখানে তাদের শেখানো হয় যে চরম শীতে কীভাবে কাজ করতে হয়, কীভাবে অন্য দেশে অনুপ্রবেশ করা যায়, কীভাবে ধরা পড়া এড়ানো যায়। কীভাবে প্রশ্নের উত্তর দিতে হয় বা কীভাবে নতুন কারও সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলা যায়, তাও প্রশিক্ষণের অঙ্গ।

মাঠে নামার আগে আত্মরক্ষার জন্য ‘ক্রাভ মাগা’র প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় গুপ্তচরদের। এটি এক ধরনের ইসরায়েলি মার্শাল আর্ট যেখানে মুখোমুখি লড়াইতে জয়ের জন্য কিছু অপ্রচলিত কৌশল শেখানো হয়।

বিশ্বের সব দেশই বিদেশে তাদের দূতাবাসগুলোকে গুপ্তচরবৃত্তির কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার করে। ‘র’ এজেন্টদের প্রায়ই বিদেশে ভারতীয় দূতাবাসে পোস্টিং দেওয়া হয়। অনেক সময় ভুয়া নাম দিয়ে তাদের বিদেশে পাঠানো হয়। নানা প্রশিক্ষণ বা নাম পরিচয় বদলের পরেও পরিচয় প্রকাশ পেয়ে যাওয়ার একটা ভয় গুপ্তচরদের সবসময়ে থাকে।

‘র’-এর প্রাক্তন প্রধান বিক্রম সুদ তার বই ‘দ্য আনএন্ডিং গেম’-এ লিখেছেন, কাউকে গ্রেপ্তার করার অধিকার ‘র’-এর নেই বা মাঝরাতে কারও দরজায় কড়া নেড়ে অভিযান চালান না ‘র’ কর্মকর্তারা। ‘র’ দেশের ভেতরে কোনোরকম গোয়েন্দাগিরি চালায় না। তারা কেবল জবাবদিহি করে ‘র’ ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে।

� পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ �







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status