আমার বাড়ি নোয়াখালী: সুলায়মান দিয়াবাতে
নতুন সময় ডেস্ক
|
প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে এখন গোলদাতাদের এগিয়ে মোহামেডানের অধিনায়ক, গিনির ফুটবলার সুলায়মান দিয়াবাতে। ১৩ গোল করে এগিয়ে রয়েছেন। শীর্ষস্থানে যাওয়া কিংবা স্থান ধরে রাখা নিয়ে কোনো ব্যস্ততা নেই দিয়াবাতের। গত মৌসুমে ১৬ গোল করে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন তিনি। তারও আগের বছর ২১ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন সুলায়মান। এবারের মৌসুম শেষ করলে টানা পাঁচ মৌসুম হবে বাংলাদেশের ফুটবলে। সুলায়মান জানালেন, তার গোলের সংখ্যা এখন ৭৩। শততম গোল করা নিয়ে আগ্রহ নেই। সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার দৌড়ে যেতেও রাজি নন। সুলায়মান যেন নিজেই নিজের জগতে আলাদা একজন। নিজেকে কারো ওপরে এগিয়ে রাখতে চান না। কিংবা অন্য কোনো ফুটবলারকে পিছিয়ে রাখতেও চান না। কারো সঙ্গে নিজেকে তুলনা করতে রাজি নন সুলায়মান। তিনি আছেন তার দুনিয়া নিয়ে। ‘আমি আমার খেলা খেলব। ডরিয়েলটন, রবসন, কিংবা আর যারা আছে, তাদের সঙ্গে আমি নিজেকে তুলনা করি না। ওরা ওদের জায়গায় সেরা। আমি আমার খেলা নিয়ে ব্যস্ত। কেউ যদি আমার চেয়ে এগিয়ে যায় যাবে, সেটা নিয়ে আমি ভাবিত না। আমার জায়গায় আমি বলব, আলহামদুলিল্লাহ’—বললেন সুলায়মান। তিনি বলেন, ‘আমি আমার স্কিল দিয়ে খেলি, ওরা ওদের স্কিল দিয়ে খেলে। আমি তাদের সম্মান জানাই। কেন তুমি আমাকে অন্যদের সঙ্গে তুলনা করছ? আমি প্রতি বছর টপ স্কোরার হওয়ার জন্য খেলি। যদি হতে পারি, আলহামদুলিল্লাহ। আর যদি না হতে পারি, তবু আলহামদুলিল্লাহ।’ সুলায়মান ধার্মিক। নিয়মিত নামাজ আদায় করেন। আপনি যে-ই হোন, নামাজের সময় হলে কারো সঙ্গে কথা বলতেও রাজি নন সুলায়মান। স্বভাবে চুপচাপ থাকেন। নিজের রুমে থাকতে পছন্দ করেন। কথা বলেন কম। পছন্দ না হলে তার সঙ্গে কেউ কথা বলাত পারবে না। একরোখা একজন মানুষ। বাংলাদেশে আছেন প্রায় পাঁচ বছরের বেশি সময় হতে চলল। কী ভালো লেগেছে সুলায়মানের, ‘সবচেয়ে ভালো লেগেছে, একটা মুসলিম দেশে আছি, এটা অনেক বড় শান্তি আমার জন্য। ক্লাবে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা, নামাজ পড়তে বাফুফে ভবনেও যাই। আমি জানি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম কাছেই। একদিন যাব সেখানে।’ দুষ্টুমি করে সুলায়মান নিজেকে নোয়াখালীর মানুষ বলেন। কেন? হাসতে হাসতে বললেন, ‘আমি মোহামেডানের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলেছিলাম নোফেলের বিপক্ষে, নোয়াখালীর মাঠে। আমরা জিতেছিলাম। এমিলি, মিঠুন, তকলিস, মিশু ওরাও তখন মোহামেডানে খেলছে। একটা ছোট বালক আমাকে বলছিল, আমি নোয়াখালীর কি না। আমি দুষ্টুমি করে বলেছিলাম, আমার বাড়ি নোয়াখালী। ওটা নিয়েই এখনো কথা হয়।’ আর কয়েক দিন পরই টানা পাঁচ মৌসুম বাংলাদেশে খেলার অভিজ্ঞতা হবে। কেমন কেটেছে এই সময়টা? সুলায়মান বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। খুব ভালো। এতো দিনেও আমি বাংলা কথা বলতে না পারলেও কিছু কিছু কথা বুঝি। হয়তো বলতে পারি না।’ সুলায়মানের চোখে তার প্রিয় ফুটবলার হচ্ছেন কিংসের শেখ মোরসালিন। ‘তাকে আমার খুব ভালো লাগে। গুড বয়, গুড প্লেয়ার।’ প্রায় পাঁচ বছর খেলে মোহামেডানের প্রেমে পড়েছেন সুলায়মান। ‘আমি মোহামেডানকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসি। তবে আমি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ।’ একাধিক ক্লাব থেকে আমন্ত্রণ এসেছে সুলায়মান দিয়াবাতের কাছে। কিন্তু এখনো তিনি আছেন মোহামেডানকে ভালোবেসে। সুলায়মান বললেন, ‘দুই-তিনটা ক্লাব আমাকে ডাকছে, আমি কথা বলিনি।’
|
পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |