কুকুরের সঙ্গে বেড়ে উঠেছেন যে নারী
নতুন সময় ডেস্ক
|
এ যেন বনের রাজা টারজান কিংবা জঙ্গল বুকের মুগলীর গল্প। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রাণীর সাহচর্যে বেড়ে ওঠার গল্প। বাস্তবেই ঘটেছে এমন ঘটনা। গল্পের পাতায় বিষয়টি যতটা রোমাঞ্চকর বা দারুণ, বাস্তবে তা হৃদয় বিদারক। ইউক্রেনে ওক্সানা মালায়া নামে এক নারীর সঙ্গে এমনটাই ঘটেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, তিন বছর বয়সে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন মালায়া। তীব্র শীতের মধ্যে তাকে ঘরের বাইরে বের করে দেয় মদ্যপ বাবা-মা। উপায় না দেখে ছোট শিশু একটু উষ্ণতার আশায় আশ্রয় নেয় তাদের পালিত কুকুরের ঘরে। এরপর থেকে কুকুরের সঙ্গেই বেড়ে উতেন থাকেন তিনি। জানা যায়, তার শৈশবের পুরোটাই কাটিয়েছেন কুকুরের সঙ্গে। এখন তার বয়স ৪০। ৩ থেকে ৯ বছর বয়স পর্যন্ত কুকুরদের সঙ্গে কাটিয়েছেন তিনি। কুকুরগুলোও তাকে আপন করে নিয়েছে। তিনি বলেন, বাঁচার জন্য কুকুরের ঘরের ভেতরেই নিজের বিছানা তৈরি করেন তিনি। পরের পাঁচটি বছর সেখানেই ঘুমান। তার পালিত কুকুর ছাড়াও আশপাশের কুকুরগুলোও তার যত্ন নিতে শুরু করে। তাকে আপন করে নেয়। যখন তাকে উদ্ধার করা হয়, তখন কথা বলার শক্তি ছিল না মালায়ার। চারপায়ে হাঁটতেন। কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করতেন। এ ছাড়া কাঁচা মাংস, ডাস্টবিনের খাবারও খেয়ে থাকতেন শিশু মালায়া। মালায় এখন একটি স্পেশাল কেয়ার সংস্থায় থাকেন। সেখানকার পরিচালক অ্যানা চালায়া বলেন, `যখন মালায়াকে উদ্ধার করা হয়, তখন সে পুরোপুরি কুকুরের মতো আচরণ করতো। জিহ্বা দিয়ে নিজেদের পরিস্কার করত, কাঁচা মাংসা খেত। পানি বা খাবার দেখলেই জিহ্বা বের করতো, হাত না দিয়ে মুখ দিয়ে খেত সরাসরি।‘ ৯ বছর বয়সে যখন তাকে পুলিশ উদ্ধার করতে চায়, কুকুরদের একটি সংঘবদ্ধ চক্র তাদের বাধা দেয়। পরে খাবার দিয়ে কুকুরগুলোকে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে মালায়াকে উদ্ধার করেন কর্মকর্তারা। শিশু মনোবিজ্ঞানী লিন ফ্রাই বলেন, মালায়া হয়তো কখনো স্বাভাবিক হতে পারবে না। নিউ ইয়র্ক পোস্টের মতে, ইতিহাসে মালায়ার মতো শতাধিক ঘটনা আছে। ২০০০ সালের দিকে বাবা-মার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয় মালায়াকে।
|
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |