ভূরুঙ্গামারীতে ১৯ মন্ডপে শুরু হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
এফ কে আশিক, ভূরুঙ্গামারী
|
![]() ভূরুঙ্গামারীতে ১৯ মন্ডপে শুরু হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি এ উপলক্ষে গত ২২ সেপ্টেম্বর উপজেলার বিভিন্ন মন্ডপের সভাপতি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক ও অংশীজনদের সাথে প্রস্তুতিমূলক সভা করেছেন উপজেলা প্রশাসন। পঞ্জিকা অনুযায়ী, দুর্গাপুজা ২০২৫-এর নির্ঘণ্ট। আর (২৮ সেপ্টেম্বর) রবিবার মহাষষ্ঠীর মধ্যে দিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। এ বছর ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীতে দেবী বোধনের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। আর আগামী ২ অক্টোবর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব সমাপ্তি হবে। সারাদেশের ন্যায় প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করেছেন উপজেলার মৃৎশিল্পীরাও। এ উৎসবকে ঘিরে মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে নানা ধরনের প্রস্তুতি। এখন শারদীয় উৎসবে মেতে ওঠার অপেক্ষায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা। পঞ্জিকা মতে এ বছর দেবীদুর্গা দোলায় আগমন করে গজে চড়ে কৈলাশে ফিরে যাবেন। নিখুঁত হাতের কারুকার্য দিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করেছেন প্রতিমা শিল্পীরা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মূর্তিতে রং-তুলির আঁচড়ের কাজ প্রায় শেষ করেছেন। কিছু জায়গায় রং করতেও দেখা গিয়েছে। অন্যদিকে সাজসজ্জা, আলোকসজ্জা, প্যান্ডেল তৈরি ও ডেকোরেশন সহ অন্যান্য কাজগুলোও শেষ পর্যায়ে। দুর্গা প্রতিমা ছাড়াও মণ্ডপের জন্য তৈরি করা হচ্ছে লক্ষী সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, অসুর, সিংহ, মহিষ, পেঁচা, হাঁস, সর্প সহ প্রায় ১২টি প্রতিমা। উপজেলার স্বর্গীয় হীরালাল সাহা দূর্গা মন্দিরে কাজ করতে দেখা যায় প্রতিমা কারিগর শ্রী লক্ষণ সেন তিনি বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শেষ করেছি, এখন রংতুলির কাজ করছি । তিনি আরও বলেন, এ বছর ৩ টি মন্দিরে প্রতিমা তৈরীর কাজ ধরেছি। ভিন্ন ভিন্ন চুক্তিতে ৩ জন মিলে প্রতিমা তৈরি করছি। প্রতিটি প্রতিমা প্রতি সর্বোচ্চ ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত মজুরি নেয়া হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি বাজারে চাহিদার তুলায় মজুরি কম পেলেও কাজ করতেই হবে। তাই পূজা শুরুর দিন পর্যন্ত রঙ এর কাজ করতে হবে। তবে চাহিদার তুলায় আমরা মজুরি কম পাচ্ছি।প্রতিমা তৈরি করে যে টাকা মজুরি পাই তা দিয়ে জীবন যাপন করা কষ্টকর হয়ে পড়ছে। অনেকেই এ পেশা ছেড়ে চলেও গেছে। টিকে থাকার জন্যই প্রতিমা তৈরির পাশাপাশি কৃষি কাজও করতে হয়। বাংলাদেশ পুজা উদযাপন ফ্রন্ট কুড়িগ্রাম শাখার যুগ্ম আহবায়ক বিশ্বজিৎ কুমার সাহা বলেন উপজেলার মন্দির গুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন সহ সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার ব্যাপারে অন্যান্য বছরের মতো এবারও প্রশাসনিক সহযোগিতার আশ্বাস পেয়েছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আলোকসজ্জাসহ নানাভাবে সাজানো হবে মণ্ডপ গুলোতে। এখন ঢাকের তালে পূজা শুরু হওয়ার অপেক্ষা মাত্র। ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল হেলাল মাহমুদ বলেন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রতিটি ইউনিয়নে মন্দিরে মন্দিরে সার্বক্ষণিক পুলিশের টিম কাজ করছে। এছাড়া উৎসব চলাকালীন সময়ে নিরাপত্তা সর্বাত্মক নজরদারি রয়েছে বলে জানান তিনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপ জন মিত্র জানান, উপজেলায় এবারে ১৯ টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি মন্ডপে সরকারের পক্ষ থেকে পূজা উদযাপন উপলক্ষে ৫০০ কেজি করে চাল প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া প্রতিটি মন্ডপে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে মন্ডপ কমিটি ও তাদের স্বেচ্ছাসেবক দলকে প্রাথমিকভাবে একটিভ থাকতে হবে। পাশাপাশি সর্বাত্মক প্রশাসনের নজরদারি থাকবে। আশা করি সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা অনুষ্ঠিত হবে এজন্য তিনি সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। |
পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |