ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
৯২ বছরেও থামেনি সাইকেলের চাকা
নতুন সময় প্রতিনিধি
প্রকাশ: Saturday, 10 May, 2025, 12:03 PM

৯২ বছরেও থামেনি সাইকেলের চাকা

৯২ বছরেও থামেনি সাইকেলের চাকা

মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারেন না আনোয়ার হোসেন। ত্বকে ভাঁজ পড়েছে। তবু সাইকেল চালিয়ে পাড়ি দিতে পারেন মাইলের পর মাইল।

উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের দেওয়া বয়স্ক ভাতার বইয়ে তাঁর জন্ম ১৯৩২ সালের ৫ জুলাই। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যও তা–ই বলছে। সেই হিসাবে তাঁর বয়স ৯২ বছর ১০ মাস। শরীরে বয়সের ছাপ পড়েছে। মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারেন না। তবে চলাফেরায় এখনো তরুণ। 

৯২ বছর পেরোনো এই ব্যক্তির নাম আনোয়ার হোসেন। তাঁর বাড়ি নাটোরের সিংড়া উপজেলার শেরকোল ইউনিয়নের ধুলাউড়ি গ্রামে। পরিবারের সদস্যরা জানান, আনোয়ার হোসেন মাঝেমধ্যে প্রতিবেশীদের দেওয়া ভাত-রুটি খেলেও অধিকাংশ সময় কাটিয়ে দেন গুড়–মুড়ি খেয়ে। 

আনোয়ার হোসেনের চার মেয়ে ও এক ছেলে। সবার ছোট লিটন হোসেন। তাঁর স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করেন। লিটন গ্রামে ইঞ্জিনচালিত ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। আনোয়ার হোসেন কোনো ব্যাপারেই সহযোগিতা নেন না উল্লেখ করে লিটন বলেন, তিনি নিজের সব কাজ নিজেই করেন। রান্নার ঝামেলা এড়াতে গুড়-মুড়ি খেয়ে দিন পার করেন। সামান্য দূরত্বেও তিনি সাইকেল চালিয়ে যান। আবার অনেক দূরের পথও সাইকেলে যাতায়াত করেন।

আনোয়ার হোসেনের দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায়। এখনো বছরে দু–একবার বাড়ি থেকে সাইকেল চালিয়ে পাঁচবিবিতে মেয়েদের দেখতে যান বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। বগুড়ায় থাকা এক ভাইয়ের বাড়িতেও তিনি সাইকেল চালিয়ে যাতায়াত করেন। কয়েক দিন আগেও তিনি সাইকেল চালিয়ে মেয়ের বাড়িতে যান। 

আনোয়ার হোসেনের বড় মেয়ে লোপা বেগম বলেন, তাঁর বাবা ইচ্ছা করলেই বাস বা ট্রেনে পাঁচবিবিতে যাতায়াত করতে পারেন; কিন্তু তিনি তা করেন না। বছরে একবার হলেও সাইকেল চালিয়ে তাঁর বাড়িতে আসেন। 

১৮ এপ্রিল সকালে ও ৫ মে বিকেলে আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, টিনের ঘরটি ছিমছাম করে সাজিয়ে রাখা। ঘরের বিভিন্ন স্থানে সাইকেল মেরামতের যন্ত্রপাতি সুন্দর করে সাজানো। পাকিস্তান আমলের একটি বড় রেডিও রাখা আছে যন্ত্রপাতির পাশে। আনোয়ার হোসেনের জন্ম পাকিস্তানের করাচি শহরে। তিনি বলেন, ‘আব্বা পূর্ব পাকিস্তান রেলওয়েতে চাকরি করতেন। বাবার অন্য ভাইয়েরাও বড় চাকরি করতেন; কিন্তু আমার পড়ালেখা হয়নি। বাড়িতে বাবার কাছে কিছু ইংরেজি শিখেছিলাম। 

সেই সুবাদে নৌবাহিনীর ট্রাক চালানোর চাকরি পাই। ভারত–পাকিস্তান ভাগ হওয়ার কয়েক বছর পর আমরা স্থায়ীভাবে পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসি। বগুড়ায় বসবাস শুরু করি। সিংড়ার লালোরে মামাতো বোনের সঙ্গে আমার প্রথম বিয়ে হয়। ওর গর্ভে দুই মেয়ে লোপা ও লিপন। পাকিস্তান আমলেই আমার প্রথম স্ত্রী মারা যায়।’

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার দুই বছর পর ধুলাউড়ি গ্রামে দ্বিতীয় বিয়ে করেন আনোয়ার হোসেন। তখন থেকে এ গ্রামেই বসবাস করছেন। দ্বিতীয় স্ত্রীও অনেক আগে মারা গেছেন। বাস-ট্রাক চালিয়ে কর্মজীবন পার করেছেন।

� পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ �







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: [email protected]
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status