দুই মেয়ের মুখ দেখে যেতে পারলেন না চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সুমন মিয়া
নতুন সময় প্রতিনিধি
|
![]() দুই মেয়ের মুখ দেখে যেতে পারলেন না চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সুমন মিয়া স্বজনেরা জানান, সন্তানের আশায় দেশ–বিদেশে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন সুমন দম্পতি। ভারতে চিকিৎসা ও দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে স্ত্রী লিজা সন্তান সম্ভবা হলে খুশির বন্যা বয়ে আসে পরিবারে। শেষ পর্যন্ত লিজার কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে দুই যমজ মেয়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হসপিটালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সুমনের স্ত্রী লিজা যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তবে দুই মেয়ের মুখ দেখে যেতে পারলেন না সুমন মিয়া। বাবা হওয়ার ৮ দিন আগে গত ২২ মে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে প্রতিপক্ষ আবিদ হাসান রুবেল ও তাঁর সমর্থকদের হামলার পর নিহত হন সুমন মিয়া। প্রচারে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় প্রার্থীর মৃত্যুপ্রচারে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় প্রার্থীর মৃত্যু সুমন মিয়ার বাবা রায়পুরার চরসুবুদ্ধি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ব্যবসায়ী হাজী নাসির উদ্দিন। ছেলে হারানোর ব্যথায় কান্নজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘জন্মের পর দুই নাতনি ও পুত্রবধূ সুস্থ আছেন। আমার নাতনি দুইটা দেখতে খুব সুন্দর হয়েছে। তারা সুস্থ আছে। তবে বড় বেদনাময় হলো, আমার ছেলে নিজ সন্তানের মুখ দেখে যেতে পারল না। এর আগেই সন্ত্রাসীরা আমার ছেলে সুমনকে পৃথিবী থেকে বিদায় করেছে। বিনা কারণে নিরপরাধ ছেলেকে হামলা করে মেরে ফেলল।’ নাসির উদ্দিন বলেন, ‘সুমন ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে রাজনীতিতে আসার পাশাপাশি ব্যবসা পরিচালনা করতো। ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ায় তার কাল হয়ে দাঁড়াল। নিষ্পাপ শিশু দুটি পিতার মুখ দেখার আগেই পিতৃহারা হলো। সুমন বেঁচে থাকলে সন্তানের মুখ দেখে সবচেয়ে বেশি খুশি হতো।’ প্রার্থীকে হত্যার ২ দিন পর হলো মামলাপ্রার্থীকে হত্যার ২ দিন পর হলো মামলা উল্লেখ্য, গত ২২ মে রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চলে পাড়াতলী ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণায় যান তালা প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সুমন মিয়া। একই দিন ওই ইউনিয়নে যান তাঁর প্রতিপক্ষ চশমা প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আবিদ হাসান রুবেল। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাড়াতলীর মামদেরকান্দি গ্রামের ছলিমবাড়ির সামনের রাস্তায় দুই ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর সমর্থকেরা মুখোমুখি হয়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হলে প্রার্থী রুবেলের সমর্থকরা সুমন মিয়ার গাড়ি ভাঙচুর ও ঘেরাও করেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে চলে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া। একপর্যায়ে সুমন গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে পালানোর সময় মারধরের শিকার হন। আহত সুমনকে তাঁর কর্মীরা উদ্ধার করে পাড়াতলী থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে বাঁশগাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে রাখেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় পুলিশের সহযোগিতায় তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসক সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন নিহত হওয়ার ঘটনায় ২৩ মে রায়পুরা উপজেলা পরিষদের সব পদের নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। ঘটনার তিন দিন পর ২৬ জনকে আসামি করে নিহতের বাবার দায়ের করেন। এই মামলায় এখন পর্যন্ত ৪ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে রায়পুরা থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হালিম বলেন, ‘ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়া হত্যার ঘটনায় দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় এজাহারভুক্ত একজন আসামিসহ মোট ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।’ # |
পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |