শাকিব পরিমনি বৈষম্যে বন্দি দেশের চলচ্চিত্র
রানা বর্তমান
|
আরকত শাকিব খান আর পরিমনিতে আটকে থাকবে আমাদের চলচ্চিত্র! আর কবে কালো ফর্সা বৈষম্যের কারাগার থেকে মুক্তি পাবে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র! এখনও আমাদের দেশের নির্মাতা, প্রযোজক, দর্শক সৌন্দর্য বিবেচনায় চামড়ার হালকা রঙ্গে আটকে আছে। আসলেই কি গায়ের রং (কালো ফর্সা) যোগ্যতার মধ্যে পড়ে? বর্তমান সময়ে সৌন্দর্য বুঝতে অক্ষম সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ পাত্রপাত্রী বিজ্ঞাপন, নায়ক নায়িকার জন্য ফর্সা চামড়াওয়ালি কিংবা ফর্সা চামড়াওয়ালাকে খুঁজছেন। রবিন্দ্র নাথ বুঝতে পারলেও আফসোস আমারা এখনো বুঝতে পারিনি প্রকৃত সৌন্দর্য। খেয়াল করলে দেখবেন, বাংলাদেশ চকলেটবয় নির্ভর নায়ক দেখতে দেখতে আসক্ত হয়ে গিয়েছে। আমরা শাকিব খান নির্ভর হয়ে পড়েছি, আমরা আর কবে বাংলা চলচ্চিত্রের সুদিন দেখবো! কবে সুদর্শন চকচকা নির্ভর নায়কের বেড়াজাল ডিঙ্গিয়ে বের হয়ে আসবো! বিশ্ববাসী বাংলাদেশি সিনেমা দেখার জন্য ওৎপেতে আছেন কারন কি জানেন? সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজ কিংবা আর্জেন্টিনার সমর্থক!এছাড়া অনান্য অনেক ইস্যু রয়েছে। তবে সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজ এরা বিশ্বের কাছে খুব সহজে বাংলাদেশকে পরিচিত করে দিয়েছে বলেই বাংলাদেশের শিক্ষা সংস্কৃতির জানার আগ্রহ জন্মেছে অনেক দেশের। ঠিক এই সময়টা চলচ্চিত্রের বিশ্ববাজার ধরতে হলে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে সেন্সরবোর্ড, বিএফডিসি কিংবা চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িত অংগ সংগঠনগুলোর।তথ্য নির্ভর সাহসি লিখনিতে এগিয়ে আসতে হবে বিনোদন সাংবাদিকদের। অনেক পাঠকরা মনে করবেন আমি শাকিব খান বিরোধী লেখা লিখছি কিন্তু একদমই না। আমি দেশের চলচ্চিত্রের কথা মনে করেই এই লেখ্যরুপ। আমাদের পাশের দেশে বিশেষ করে তামিল তেলুগু হলিউড, ডেনমার্ক, ইরান ইন্ডিয়ায় প্রচুর কালো গায়ের রং এর নায়ক নায়িকা, মডেল অভিনেতা অভিনেত্রী রয়েছে যারা যথেষ্ট সুন্দর/সুন্দরী আকর্ষণীয় এবং সফল। শুধু মডেলিং আর চিত্র জগতে নয় তাদের সমাজে দাপটের সহিত রাজত্ব করছে কালো রং এর মানুষরা। আমাদের চলচ্চিত্রপাড়া ছাড়া দেশের অনান্য ক্ষেত্রে কালো ফর্সার খুব একটা বৈষম্য দেখা যায়না। আমরা বৈষম্যটা দেখছি চলচ্চিত্র পাড়ায়। বর্তমান বিশ্ব গায়ের রং নিয়ে বেশ চিন্তামুক্ত। তারা ভেঙে বের হতে পেরেছে ফর্সার থিম।তাছাড়া পূর্বের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাধার যুগ থেকে গৌরীরা অনায়াসে ঝাঁপ দিতে চেয়েছিলেন প্রেমিকের কালো রঙ্গে। পরোয়া না করে মিশে যেতে চেয়েছেন অনাকাঙ্ক্ষিত সেই রঙ্গে। তৎকালীন সময়ে কতজন ফর্সা পুরুষ নিজের রং ত্যাগ করে গায়ে লাগাতে চেয়েছেন কৃষ্ণাঙ্গী প্রেমিকার রং। অথচ দেশের নির্মাতা দর্শক কিংবা চলচ্চিত্র বোদ্ধারা গায়ের রং এর উপর চরিত্র বিশ্লেষণ করেন। এখন নায়ক বলতে শাকিব খানকে বুঝায়। নায়িকা বলতে পরিমনিকে বুঝায় অথচ গল্পানুযায়ী চরিত্র বিশ্লেষণ করাটা বর্তমান সময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে হাওয়া সিনেমাটি ভালো লাগার প্রধান কারন হলো চরিত্র বিশ্লেষণ ও দক্ষ অভিনয়। আমাদের চরিত্র নির্ভর নায়ক নায়িকা নিয়ে সিনেমা নির্মান করা জরুরী। বিশ্ব বাজারে অামাদের শিক্ষা সংস্কৃতি তুলে ধরতে হলে! চলচ্চিত্র বিশ্ব বাজার ধরতে হলে, চরিত্র বিশ্লেষণ ও দক্ষ অভিনয় শিল্পীর গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের চকলেট বয় কিংবা সুদর্শন নায়ক নায়িকার পাশাপাশি আমাদের রুপাই প্রয়োজন, আমাদের তামাটে গায়ের রং এর কৃষক কিংবা কুচকুচে কালো কুমার/ কুমারী, জেলে প্রয়োজন। চরিত্রানুযায়ী গায়ের রং, গঠন মিলিয়ে শিল্পী বিশ্লেষন খুবই সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বলে মনে হয়। লেখক রানা বর্তমান ,নির্মাতা ও সাহিত্যিক |
পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |