তেঁতুলিয়ার সীমান্তে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দুই বন্যহাতি, হাতির আক্রমনে নিহত -১
মুস্তাক আহমেদ, পঞ্চগড়
|
![]() তেঁতুলিয়ার সীমান্তে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দুই বন্যহাতি, হাতির আক্রমনে নিহত -১ মঙ্গলবার ২০ ফেব্রুয়ারী সকালে ভারত হতে সীমান্ত অতিক্রম করে ২টি বন্য হাতি তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের দক্ষিন কাশিমগঞ্জ (৭নং ওয়ার্ড) এলাকায় অনুপ্রবেশ করে। উক্ত এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় স্থানীয় জনসাধারণকে নিরাপদ দুরত্বে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন । স্থানীয়দের মতে গতকাল রাতে তেঁতুলিয়া উপজেলার ইসলামবাগ, রওশনপুর এলাকার ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের কাটাতার ছিড়ে বাংলাদেশে ঢুকেপড়ে হাতি দুটি। আসার পথে দু'তিনজন কৃষকের গৃহপালিত প্রাণির উপর আক্রমণ করে। হাতির আক্রমণে দৌলতপাড়া এলাকার সামসুল হক নামে এক দরিদ্র কৃষকের একটি গরু মারা যায়। হাতিদুটি কাশিমগঞ্জ এলাকায় বেশ কিছু বাড়িতে ঢুকে বৈদ্যুতিক তার, মোটরের তার, টয়লেট, বেড়া, পিয়াজ ও ভূট্টা ক্ষেতের ক্ষতি করেছে। এসময় বন্যহাতির আক্রমনে কাশিমগঞ্জ এলাকার আবুল হোসেনের পুত্র নুরুজ্জামান (২২) গুরুতর আহত হয়। পরে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ মো রাহিমুল ইসলাম বলেন আমরা মৃত অবস্থায় রোগীকে পেয়েছি। হাসপাতালে আসার আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে! এই খরব জানাজানি হলে আশেপাশে বসবাসকারীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বন্যপ্রানী আলোক চিত্রক ফিরোজ আল সাবাহ বলেন পঞ্চগড়ে বন্যহাতী নিকট অতীতে এই প্রথম দেখা গেলো। তেঁতুলিয়া সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে বাচ্চা সহ বন্য হাতি ঢুকে পড়েছে বাংলাদেশে। সবার কাছে অনুরোধ হাতিদের কাছাকাছি না যাওয়ার। বিরক্ত করার কথা ভাবার পর্যন্ত দরকার নাই৷ এগুলো সার্কাসের নয় জঙ্গলের হাতি। অতি উৎসাহী হয়ে তাদের বিরক্ত করলে মুশকিল হবে। দুই দেশের কর্তৃপক্ষকে তাদের কাজ করতে দিন। নিজেও নিরাপদ থাকুন হাতিদের ও নিরাপদ থাকতে দিন৷ পঞ্চগড় বনবিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মধু সুদন বলেন আমরা খবর পাওয়া মাত্রই ঢাকায় লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। ঢাকা থেকে উদ্ধারকৃত টিম আসলেই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো। আপাতত স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে থাকার প্রচারণা চলছে। বাংলাবান্ধা ইউপি চেয়ারম্যান কুদরত ই খুদা মিলন জানান, ‘ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রম করে হাতি দুটি আমাদের ইউনিয়নের দক্ষিণ কাশিমগঞ্জের একটি ভুট্টা ক্ষেতে অবস্থান করছে। গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করলেও কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বিকেলে সন্যাসীপাড়া সীমান্তের ওপারে ফাসিদেওয়া এলাকায় ৭৩০ মেইন পিলার বরাবর ভারতীয় বিএসএফ- বিজিবি ও প্রশাসনের পতাকা বৈঠক হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় সহকারী বন সংরক্ষণ নুরুন্নাহার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে রাব্বি সহ বিজিবি গোয়ালগছ বিওপি কমান্ডার শফিকুল ইসলাম। বৈঠক শেষে তেঁতুলিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বি বলেন, হাতি দুটি ভারতের বনবিভাগের বলে তারা দাবী করেছে। ভারতীয় প্রাণিসম্পদ বিভাগের বিশেষজ্ঞ দল এদেশে এসে হাতি দুটিকে নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। আমরা এখন লিখিত চিঠি করবো। উভয় দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ে অনুমতি স্বাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এলাকায় কেউই যাতে হাতিগুলোকে বিরক্ত না করে সে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে এলাকার সবাইকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। |
পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |