ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
সোমবার ৬ অক্টোবর ২০২৫ ২১ আশ্বিন ১৪৩২
জাতিসংঘে ড. ইউনূসের সফরসঙ্গী হতে তারেক রহমান রাজি হননি!
নতুন সময় প্রতিবেদক
প্রকাশ: Sunday, 5 October, 2025, 3:11 PM

জাতিসংঘে ড. ইউনূসের সফরসঙ্গী হতে তারেক রহমান রাজি হননি!

জাতিসংঘে ড. ইউনূসের সফরসঙ্গী হতে তারেক রহমান রাজি হননি!

২০২৫ সালের জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর সফরসঙ্গী হতে আমন্ত্রণ পেলেও সেই প্রস্তাবে সাড়া দেননি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান । সরকারের পক্ষ থেকে তাকে লন্ডন থেকে নিউইয়র্কে যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানানো হলেও তিনি ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কথা জানিয়ে সফরসঙ্গী হতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

দৈনিক মানবজমিন এর প্রধান সম্পাদক ও বিশিষ্ট সাংবাদিক মতিউর রহমান চৌধুরী  শনিবার (৪ অক্টোবর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ড. ইউনূসের সফরসঙ্গীর তালিকায় শেষ মুহূর্তে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -এর নাম যুক্ত হয়। তবে কেন তারেক রহমান সফরসঙ্গী হতে রাজি হননি, সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেননি সাংবাদিক।


সফরের পেছনের জটিলতা ও বিতর্ক
প্রতিবেদনে মতিউর রহমান অভিযোগ করেন, সফরের আগে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন নানা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেন। তার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আচরণে সরকার ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। তিনি দাবি করেন, মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তৌহিদ হোসেন বারবার ভুল করে যাচ্ছেন, ফলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। অধ্যাপক ইউনূস এসব ঘটনায় ক্ষুব্ধ হলেও পরিস্থিতি তেমন পরিবর্তন হয়নি।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশের সরকারপ্রধানের নির্ধারিত বক্তৃতার সময় সীমিতসংখ্যক সফরসঙ্গীর উপস্থিতির সুযোগ থাকে। তবে এবার প্রতিনিধিদলের আকার নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। অতীতের রাজনৈতিক সরকারগুলোর মতো নির্দলীয় অন্তর্বর্তী সরকারও বড় আকারের সফরসঙ্গী দল নিয়েছে—এমন অভিযোগ উঠেছে।

‘রাষ্ট্রীয় পিকনিক’ না কূটনৈতিক অর্জন?
মতিউর রহমান চৌধুরী তার প্রতিবেদনে সফরটিকে “রাষ্ট্রীয় পিকনিক” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি লিখেছেন, “নিউইয়র্ক অভিযান হতে পারতো বাংলাদেশের কূটনৈতিক ইতিহাসে এক স্মরণীয় অধ্যায়। কিন্তু তা হয়ে উঠেছে রাষ্ট্রীয় পিকনিক।” তিনি উল্লেখ করেন, শুরুতে বলা হয়েছিল আটজনের প্রতিনিধিদল নিউইয়র্ক যাবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সংখ্যাটি গিয়ে দাঁড়ায় ৫৭ জনে, আর এবারের সফরে সেই রেকর্ডও ছাড়িয়ে গেছে—প্রতিনিধি সংখ্যা হয়েছে ১০৪ জন।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “হাফ ডজন উপদেষ্টা ছিলেন এই প্রতিনিধিদলে, কিন্তু তাদের কার্যকর কোনো ভূমিকা দেখা যায়নি। দৃশ্যমান কোনো কূটনৈতিক অর্জনও নেই।”

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ড. ইউনূসের আগের বছরের (২০২৪) সফরে ৫৭ জন অংশ নিয়েছিলেন বলে দাবি করা হলেও সুখবর ডটকমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারি নথি অনুযায়ী সেই সংখ্যা ছিল ৮০ জনেরও বেশি। এবারের সফরে সরকারি হিসাব অনুযায়ী সংখ্যা ১০৪ জন, যদিও পুস্তিকায় তা ৬২ বলা হয়েছে।

অতীতের তুলনা ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, রাজনৈতিক সরকারের সময়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে সফরসঙ্গীর সংখ্যা ছিল আরও বেশি। ২০১৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) ১৮০ জনকে সঙ্গে নিয়ে নিউইয়র্কে যান এবং ২০১৯ সালে তার সফরসঙ্গীর সংখ্যা ছিল ২৯২। তবে ২০০৭-০৮ সালের সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সফরসঙ্গীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম ছিল।

মতিউর রহমানের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, তারেক রহমানের অনুপস্থিতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নাম প্রস্তাব করা হয়। তিনি তখন চিকিৎসার জন্য বিদেশে ছিলেন এবং তার ভিসা বৈধ কি না, তা নিশ্চিত না হওয়ায় বিকল্প হিসেবে তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবিরের নামও বিবেচনায় আসে।

সরকারের প্রতিক্রিয়া
প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট দিয়ে মতিউর রহমান চৌধুরীর প্রতিবেদনের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “‘প্রফেসর ইউনূস নিজের রেকর্ড নিজেই ভাঙলেন’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিটি অনুচ্ছেদ বিভ্রান্তিকর ও সূত্রহীন তথ্য দিয়ে সাজানো।” তার মতে, ফেসবুকভিত্তিক তথ্যের ওপর নির্ভর করে লেখা সংবাদ বিশ্বাসযোগ্যতা হারানোর ঝুঁকিতে থাকে।


অন্যদিকে, জাতিসংঘের আশপাশে বিক্ষোভ, ডিম বৃষ্টি এবং নিউইয়র্কে প্রধান উপদেষ্টার সফর নিয়ে দেশ-বিদেশে যে সমালোচনা চলছে, তা বাংলাদেশের ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

সবশেষে প্রশ্ন রয়ে গেছে—১০৪ জন সফরসঙ্গী নিয়ে জাতিসংঘে যাওয়ার পেছনে সরকারের কী উদ্দেশ্য ছিল? সমালোচকরা বলছেন, জবাবদিহি না থাকলে সেই প্রশ্নের উত্তর জানা সম্ভব নয়, আর বাংলাদেশে সেই জবাবদিহি হারিয়ে গেছে বহু আগেই।

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status