ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
সোমবার ৬ অক্টোবর ২০২৫ ২১ আশ্বিন ১৪৩২
মরিয়া প্রমাণ করা লাগবে আমরা অসুস্থ? আদালতে দীপু মনির প্রশ্ন
নতুন সময় প্রতিবেদক
প্রকাশ: Monday, 6 October, 2025, 2:48 PM

মরিয়া প্রমাণ করা লাগবে আমরা অসুস্থ? আদালতে দীপু মনির প্রশ্ন

মরিয়া প্রমাণ করা লাগবে আমরা অসুস্থ? আদালতে দীপু মনির প্রশ্ন

সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তার সহকর্মী, সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দীপু মনি।

তিনি বলেছেন, “নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন। আমাদের কি মরিয়া প্রমাণ করা লাগবে আমরা অসুস্থ ছিলাম?” সোমবার ঢাকার মহানগর হাকিম মেহেদী হাসানের আদালতে রিমান্ড শুনানিতে এ কথা বলেন দীপু মনি।

শাহবাগ থানার জুট ব্যবসায়ী মো. মনির হত্যা মামলায় দীপু মনিকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছিলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার এসআই মাইনুল খান পুলক। এছাড়া লালবাগ থানার শাওন সিকদার হত্যা মামলায় সাবেক এমপি সোলায়মান সেলিমকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা লালবাগ থানার এসআই আবুল ফারেজ জুয়েল।

সোমবার আসামিদের উপস্থিতিতে ওই দুই আবেদনের ওপর শুনানি হয়। তার আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ প্রহরায় দীপু মনি ও সোলায়মান সেলিমকে আদালতে তোলা হয়।প্রথমে দীপু মনির রিমান্ডের শুনানি শুরু হয়। তার আইনজীবী গাজী ফয়সাল ইসলাম রিমান্ডের বিরোধিতা করে জামিন আবেদন করেন।

তিনি আদালতকে বলেন, “আমার আসামি দীর্ঘদিন ধরে হাজতে রয়েছেন। তিনি নারী হওয়ায় বিভিন্ন অসুস্থতায় ভুগছেন। এই মামলার এজাহারে তার নাম ছাড়া কিছুই নেই। এ বিষয়ে আসামি কিছু বলতে চান।”

পরে আদালতের অনুমতি নিয়ে দীপু মনি বলেন, “গত মাসের ৯/১০ তারিখে আমি অসুস্থ হওয়ায় শহীদ তাজ উদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে সেখানে সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্ভব হয়নি।

“পরবর্তীতে অন্য হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য অনুমতি নেওয়া হয়। গতকাল হাসপাতাল নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশ স্কোয়াড না থাকায় নেয়া হয়নি। ভাবছিলাম আজকে হাসপাতালে নেওয়া হবে। কিন্তু দেখলাম আমাকে আদালতে আনা হয়েছে।”

দীপু মনি বলেন, “পুলিশ স্কোয়াডের কারণে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে না, অথচ আদালত আনা হয়েছে। আমি ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি। আমার যে চিকিৎসা দরকার সেটা পাচ্ছি না।”

আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ৬০টির অধিক মামলা। কিন্তু আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছি না। গত এক বছরে আইনজীবীর সঙ্গে আমার তিনবার দেখা হয়েছে।

“আমাকে আদালতে নেওয়ার দিনই যেন হাজতখানায় (আদালতের হাজতখানা) আমার সঙ্গে আইনজীবীর কথা বলার সুযোগ করে দেওয়া হয়। তাহলে মামলা সম্পর্কে একটু আলোচনা করতে পারি।”

এর বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, “কারাবিধি অনুযায়ী সাক্ষাতের সুযোগ রয়েছে। তারা জেলগেইটে চাইলে সাক্ষাৎ করতে পারবে। মূলত রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য হাসপাতালে যাওয়ার চেষ্টা করছে।”

তখন দীপু মনি সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ হুমায়ুনের মৃত্যুর প্রসঙ্গ ধরে দাবি করেন, এই আওয়ামী লীগ নেতা ‘চিকিৎসার অভাবে’ মারা গেছেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন নরসিংদী-৪ আসনের সাবেক এমপি নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। অসুস্থ অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। গত ২৯ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যুর খবর জানায় কারা অধিদপ্তর।

সেখানে বলা হয়, নূরুল মজিদ মাহমুদ ‘আনকন্ট্রোলড বাওয়েল অ্যান্ড ব্লাডার’ সমস্যায় ভুগছিলেন। দীপু মনি যখন সেই প্রসঙ্গ ধরে আদালতে বক্তব্য দিলেন, তখন উপস্থিত আইনজীবীরা তাদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কথা বলতে শুরু করেন।

এ সময় সাবেক এমপি সোলায়মান সেলিম বলেন, “এখানে লিগ্যাল আর্গুমেন্ট হচ্ছে। সবাই কি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী?”

তখন পাশে থাকা কয়েকজন আইনজীবী তাকে বলেন, “গায়ে এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে।” প্রতিউত্তরে সোলায়মান সেলিম বলেন, “তাই বলে কি আমরা চিকিৎসা পাব না?”

শুনানি শেষে দীপু মনিকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন বিচারক। পরে লালবাগ থানার শাওন সিকদার হত্যা মামলায় সাবেক এমপি সোলায়মান সেলিমকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেওয়া হয়। শুনানি শেষে বেলা ১১টার দিকে পুলিশ প্রহরায় তাদের আবার আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হয়।

মনির হত্যা মামলার বিবরণে বলা হয়, জুলাই আন্দোলনের শেষ দিন অর্থাৎ ৫ অগাস্ট শাহবাগ থানার চানখারপুল এলাকায় ছাত্র-জনতার সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন ক্ষুদ্র জুট ব্যবসায়ী মো. মনির। দুপুরে আসামিদের ছোড়া গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।

নিহতের স্ত্রী রোজিনা আক্তার গত ১৪ মার্চ শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় ৩৫১ জনকে এজাহারনামীয় এবং ৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।

শাওন সিকদার হত্যা মামলার বিবরণে বলা হয়, জুলাই আন্দোলনের সময় ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই বিকালে রাজধানীর ইডেন কলেজের সামনে দিয়ে বাসায় ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান শাওন।

এ ঘটনায় গত ২১ জানুয়ারি লালবাগ থানায় শেখ হাসিনাসহ ৪০ জনকে আসামি করে আত্মীয় পরিচয়ে মামলা করেন ইকবাল মজুমদার তৌহিদ।


পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status