গণ অভ্যুত্থানে শুধু রাজধানীর রায়েরবাজার কবরস্থানেই দাফন হয়েছে শতাধিক বেওয়ারিশ লাশ। এর মধ্যে একমাসে আঞ্জুমান মুফিদুলই দাফন করেছে ৮১টি। তবে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে কতো মানুষ হতাহত ও পঙ্গুত্ববরণ করেছেন তার সঠিক সংখ্যা এখনও অজানা।
অনেক রক্তের দামে কেনা আজকের স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশ। নিজ দেশের নিরস্ত্র নাগরিকের ওপর সরাসরি গুলিবর্ষণের চিত্র দেশের কমবেশি সবাই দেখেছেন। তবে যতটুকু ক্যামেরায় ধরা পড়েছে, ধারণা করা যায়, বর্বরতার মাত্রা তারও অনেক বেশি।
জুলাইয়ের ১৭, ১৮ এবং ১৯ তারিখ গুলিবিদ্ধ মানুষের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল। একের পর এক মরদেহের স্তূপে পূর্ণ হয়েছিল লাশঘর।
রাজধানীতে বেওয়ারিশ লাশ দাফনে এগিয়ে আসে দাতব্য সংস্থা আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম। শুধু জুলাই মাসেই রায়েরবাজার কবরস্থানে সংস্থাটি দাফন করে ৮১টি বেওয়ারিশ লাশ, যার সবাই আন্দোলনে শহীদ।
এ কবরস্থানের দীর্ঘদিনের কর্মী গোলাম রব্বানী জানালেন, গণ অভ্যুত্থান সময়ের মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার কথা। তিনি বলেন, কবর আগেই খনন করা থাকতো। পুলিশ এক সঙ্গে ১০-১২টা লাশ নিয়ে এসে সাইডে ফেলে রেখে যেতো। এরপর আমরা ওই লাশগুলো দাফন করতাম।
এখনও রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন গুলিবিদ্ধ অনেকে। গণহত্যায় জড়িতদের বিচারের পাশাপাশি বেওয়ারিশ সবার পরিচয় শনাক্তের দাবি তাদের।
জুলাই ও আগস্টে শুধু রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালেই সেবা নিয়েছেন ৭৮২ জন। এর মধ্যে অঙ্গহানি হয়েছে ২১ জনের; এখনও চিকিৎসাধীন ১০৮ জন।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত কমপক্ষে ৬৫০ জন নিহত হয়েছেন। যদিও দেশের গণমাধ্যমগুলোর হিসেবে নিহতের সংখ্যা অন্তত ৮০০; আহত ৪০ হাজারের মতো।