ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
পান চাষে ভাগ্য বদল, মাসে বিক্রি ৫ লক্ষ টাকা
দিপংকর রায়,দিনাজপুর
প্রকাশ: Tuesday, 9 July, 2024, 5:21 PM

পান চাষে ভাগ্য বদল, মাসে বিক্রি ৫ লক্ষ টাকা

পান চাষে ভাগ্য বদল, মাসে বিক্রি ৫ লক্ষ টাকা

পাট কাঠি দিয়ে ঘেরা পরিপাটি বাড়ির মত দেখতে দাঁড়িয়ে আছে বিশাল আকৃতির ঘরে দিনাজপুর বিরলের কৃষিতে সফল ভাবে সংযুক্ত হয়েছে পান চাষ। উপজেলার একমাত্র পানের বড়জটি গড়ে তুলেছেন বিরল উপজেলার ১নং আজিমপুর ইউনিয়নের উত্তর শ্যামপুর কাঁঠালতলী এলাকার বিদেশ ফেরত সম্বলহীন মোহাম্মদ ইউসুফ আলী। পানের বড়জ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন তিনি।

পানের বড়জটি ২০১৮ সালে প্রাথমিক ভাবে চাষ শুরু করেন তিনি। অবৈধ শ্রমিক হিসেবে দুবাইয়ে জেল খেটে সম্বলহীন হয়ে দেশে ফেরত হয়ে। মোহাম্মদ ইউসুফ আলী দিশে হারা হয়ে বেশ চিন্তায় পড়ে যান। এই অবস্থায় রাজশাহী পুটিয়ায় নানা শ্বশুরের বাড়ি ঘুরতে যান তিনি। সেখানেই পানের বরজ দেখে দৈনন্দিন অভাব মেটাতে পান চাষ করার আগ্রহ হয়। এই পান আবাদ করলে প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ শ টাকার পান বিক্রি কিরে অন্তত চলবে তার অভাবের সংসার। এই চিন্তা নিয়ে ২০১৮ সালে রাজশাহী থেকে চারা সংগ্রহ করে প্রাথমিক ভাবে ১৮ শতাংশ জমিতে চাষ শুরু করেন। প্রথম বছরেই পান চাষ করে লাভবান হলে পরের বছর ৮ শতাংশ এ বছর তা বাড়িয়ে মোট ৩৫ শতাংশ জমিতে পানের বরজ করে এলাকায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। এখন তিনি প্রতিমাসে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার পান বিক্রি করেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কয়েক জাতের পান আবাদ হলেও তিনি মিঠা পান আবাদ করেছেন। মিঠা জাতের পানে কোন প্রকার ঝাল অনুভূত হয়না বলে বাজারে চাহিদাও বেশ ভালো।

বিরল উপজেলা কৃষি বিভাগের তত্বাবধানে গড়ে উঠা এই পানের বড়জটিতে গিয়ে দেখা যায় যেন এক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সবুজের সমারোহ। প্রতিটি পান গাছের সাথে চিকন বাঁশের গজাল দিয়ে সারি সারি করে সাজানো। শতভাগ আগাছা মুক্ত সবুজ পাতা (পান) গুলো গাছে দোল খাচ্ছে প্রতিটি গাছের ফোরে ফোরে শোভা ছড়াচ্ছে পান পাতা। দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় জেলার ১৩ টি উপজলার মধ্যে এক মাত্র হাকিম পুর উপজেলার সীমান্ত ঘেষা গ্রামে রয়েছে এই পানের বড়জ, যা অতি নগন্য। ইহা ব্যতিত বলতে গেলে জেলার মধ্যে এটিই একমাত্র বড় পানের বড়জ। পান বড়জের মালিক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী নতুন সময়কে জানালেন তার বিরলের এই আবহাওয়ায় পান বড়জের গড়ে তোলার পেছনে ও বর্তমানে সফলতার কথা। অবৈধ শ্রমিক হিসেবে বিদেশে জেল খেটে প্রায় শুন্য হাতে দেশে ফিরে পানের বড়জটির কল্যানে স্বাবলম্বী হয়ে তিনি এখন দুই তিন দিন পর পর ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকার পান বিক্রি করেন। পান বড়জটির কল্যানেই তিনি ইতিমধ্যে করেছেন ইটের পাকা বাড়ি, কিনেছেন কয়েক বিঘা জমি সাথে বর্গাও নিয়েছেন আরো কয়েক বিঘা জমি। হাস্যোজ্জল কন্ঠে তিনি জানালের এই অঞ্চলের আবহাওয়ায় পানের বড়জ করতে পারবেন তা তার কল্পনাতেই ছিল না।  তবে তিনি কৃতজ্ঞতা জানাতে ভূল করলেন না বিরল কৃষি অফিসার মোস্তফা হাসান ইমামকে। বিরল কৃষি বিভাগ এই পানের বড়জটিতে সার্বিক সহায়তা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা করায় বড়জটি আজ পরিপূর্ণ। তিনি জানালেন এলাকায় তার মত কেউ যদি এমন পানের বড়জ করতে চান, চারা সহ সকল সহযোগীতায় হাত বাড়িয়ে দেবেন তিনি। এমন গল্পের মাঝেই পাইকার এসেছেন পান নিতে। তারা জানালেন কাছাকাছি পানের বড়জ হওয়াতে অনেক সুবিধা হয়েছে তাদের। নইলে অন্য জেলা থেকে পান সংগ্রহ করে পানের দোকান গুলোতে সাপ্লাই করতে অনেক অসুবিধা পোহাতে হয়। বড়জটি কাছাকাছি হওয়ায় কম দামে ও মান যাচাই করে পান সংগ্রহ করতে পারছেন। তারা এই বড়জ থেকে ৬৪ টি পান মান ভেদে ১০০ থেকে ১২০টাকা দরে কিনছেন বলে জানালেন।

বিরল উপজেলা কৃষি অফিসার মোস্তাফা হাসান ইমাম দৈনিক নতুন সময়কে জানান এই অঞ্চলটি প্রায় ফসলের জন্য উপযুক্ত। দেশে কয়েক জাতের পান পাওয়া যায়। উদ্যোক্তা মোহাম্মদ ইউসুফ আলী যে পান আবাদ করেছেন এটা মিঠা পান। বাজারে এই পানের চাহিদা সবচেয়ে বেশী। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এই পানের আবাদও ছড়িয়ে যেন দেওয়া যায়। বিরল কৃষি বিভাগ সব সময় সকল প্রকার সহযোগীর জন্য প্রস্তুত।

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status