সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা প্রজ্ঞাপন পুনর্বহালের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রাস্তা ছেড়েছেন। তারা মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দিকে গেছেন। এরপর বিকেল সোয়া ৫টার পর থেকে সেখানে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
রাস্তা ছাড়ার সময় আন্দোলনের সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাহিদ ইসলাম বলেন, কোটা ব্যবস্থা নিয়ে আপিল বিভাগে বৃহস্পতিবার যে শুনানি রয়েছে, তার রায় যেন শিক্ষার্থীদের পক্ষে আসে। কাল বেলা ১১টায় আমরা আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে জমায়েত হব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সারজিস আলম এ সময় বলেন, আপিল বিভাগের শুনানি চলা পর্যন্ত আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে অপেক্ষা করব। এরপর যা করা দরকার, তাই করব।
এর আগে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে জড়ো হন। সেখান থেকে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া, ভিসি চত্বর, রাজু ভাস্কর্য হয়ে হাইকোর্ট অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন। এরপর বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তারা শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান নেন।
হাইকোর্ট কর্তৃক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালসহ ৪ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
দাবিগুলো হলো- ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা। পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠনপূর্বক দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সমস্ত গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ব্যতীত)। সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
প্রসঙ্গত, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে গত ৫ জুন বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেল পৌনে ৪টায় শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিকেল পৌনে ৫টায় অবরোধ তুলে নেন।