মিয়ানমারের সংঘাতে প্রায় জনশূন্য নাইক্ষ্যংছড়ির ৭ গ্রাম
নতুন সময় প্রতিবেদক
|
উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খোলা আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে অন্তত ৪০টি পরিবার ক্রমেই তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের লড়াই। সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে এসে পড়ছে তাদের ছোড়া গুলি ও মর্টারশেল। এরইমধ্যে এক বাংলাদেশিসহ দুজন নিহত ও একাধিক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ফলে ভয় ও আতঙ্কে প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ঘুমধুম ইউনিয়নের সাতটি গ্রাম। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সোমবার রাত থেকে এ পর্যন্ত সেখানে সাতটি পাড়ার ৪০টি পরিবারের শতাধিক লোক আশ্রয় নিয়েছেন। এদিকে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ২৪০ পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি)। আজ দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন বলেন, বান্দরবান-মিয়ানমার সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান পরিস্থিতির কারণে শিক্ষার্থী ও সীমান্তে অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী ২৪০ পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সীমান্তবর্তী স্কুলগুলো বন্ধ ও সবাইকে আতঙ্কিত না হয়ে সজাগ থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষে গোলাগুলি, মর্টারশেল ও বোমা বিস্ফোরণের শব্দে কাঁপছে পুরো সীমান্ত এলাকা। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়ন, কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়ন থেকে শুরু করে টেকনাফের হোয়াইক্যং এবং হ্নীলা ইউনিয়ন পর্যন্ত সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলি ও মর্টারশেলের বিকট শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। বিশেষ করে তুমব্রু সীমান্তে দুজনের মৃত্যুতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে দ্বিগুণ। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিদ্রোহীদের সামনে টিকতে না পেরে রাখাইন রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছেন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সদস্যরা। সবশেষ মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) নতুন করে উখিয়া, টেকনাফ এবং তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে বিজিপি সদস্যসহ দেশটির অন্যান্য বাহিনীর ১৪৯ জন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। সবমিলিয়ে তিনদিনে বিজিপির ২৬৪ জন সদস্য আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে। অন্যদিকে সীমান্তে উত্তেজনাকে কাজে লাগিয়ে ওপারের সশস্ত্র গোষ্ঠীর লোকজনও অস্ত্র নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অনুপ্রবেশ করছে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার উখিয়ার পালংখালী সাতটি পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় অস্ত্রসহ ২৪ জনকে আটক করেছেন স্থানীয়রা। অনুপ্রবেশে বাধা দিতে গিয়ে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের ছোড়া হাতবোমার আঘাতে আহত হয়েছেন চারজন।
|
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |