জাপার কার্যালয় দখল নিয়ে পাল্টাপাল্টি
নতুন সময় প্রতিবেদক
|
জাতীয় পার্টির (জাপা) কাকরাইলস্থ কার্যালয় দখল নিয়ে পাল্টাপাল্টি ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে রওশনপন্থীরা দখলে নিলেও দুপুরে সেখানে তালা ঝুলিয়ে ফের নিজেদের দখলে নেন জি এম কাদেরের অনুসারীরা। শুক্রবার সকালে রওশনপন্থী জাতীয় পার্টির অন্তর্বর্তীকালীন মহাসচিব কাজী মামুনুর রশীদের নেতৃত্বে নেতারা কাকরাইলের পাইওনিয়ার রোডের পাঁচ তালাবিশিষ্ট ওই কার্যালয়ে প্রথমে দলের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। নেতাকর্মীদের নিয়ে মোনাজাত শেষে তারা কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। দলীয় কার্যালয়ে এসময় তারা সংবাদ সম্মেলনও করেন। দীর্ঘক্ষণ দলীয় কার্যালয়ের অভ্যন্তরে অবস্থান করে বেরিয়ে যান রওশনপন্থী নেতারা। এসময় জাপার (রওশন) নবনিযুক্ত মুখপাত্র ও পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, জি এম কাদের কর্তৃক বহিষ্কৃত ঢাকা মহানগর উত্তর জাপার আহ্বায়ক ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু এবং ঢাকা উত্তরের সদস্য সচিব ও পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম পাঠানসহ বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এরপর দুপুর ২টার দিকে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, এরশাদের প্রতিকৃতিতে নেই রওশনপন্থীদের দেয়া ফুল। ভবনের সামনে ঝুলছে জি এম কাদের ও দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর পক্ষ থেকে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানানো বিশাল ব্যানার। তবে এসময় কার্যালয়ের সামনে দলটির কোনো পক্ষের নেতাকর্মীই চোখে পড়েনি। এ বিষয়ে সুনীল শুভ রায় বলেন, সকালে মরহুম প্রেসিডেন্টের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর কিছু নেতাকর্মী ভেতরে ঢুকে বৈঠক করেছেন। কাল থেকে আমাদের ধারাবাহিক কার্যক্রম শুরু হচ্ছে, তার আগে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করলাম। আগামীকাল (আজ শনিবার) রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জাতীয় সমাজের একটি অংশের সমাবেশ রয়েছে। এ বিষয়ে কথা বলতে মুজিবুল হক চুন্নুকে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে এ বিষয়ে এসব বিষয়ে জিএম কাদেরপন্থী নেতা ও জাপার যুগ্ম দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে জাতীয় পার্টি থেকে অব্যাহতি পাওয়া কয়েকজন এবং কিছু ভাড়াটে লোক সকালে এসেছিলেন। শুক্রবার বন্ধের দিন সকাল ৮টার দিকে তারা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতিকৃতিতে ফুল দেন। এরপর তারা কার্যালয়ের নিচ তলায় অবস্থিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কক্ষে ১০ থেকে ১২ মিনিট অবস্থান করেন। পরে কার্যালয়ের বাইরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলে চলে যান।’ বিএনপি-জামায়াতবিহীন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাথে সমঝোতা করে মাত্র ১১টি আসন পায় জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি। রওশন এরশাদসহ তার অনুসারীরা এই নির্বাচনে ছিটকে পড়েন। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে ভরাডুবির পর রওশনপন্থীসহ জাপার অনেক প্রভাবশালী নেতা ও তাদের অনুসারী বিক্ষোভ করেন। ভরাডুবির জন্য জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে দায়ী করা হয়। কাজী ফিরোজ রশিদসহ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতাকে বহিষ্কারও করেন জি এম কাদের। এ প্রেক্ষাপটে গত ২৮ জানুয়ারি জি এম কাদের ও চুন্নুকে সরিয়ে দিয়ে নিজেকে জাপার চেয়ারম্যান ঘোষণা দেন রওশন এরশাদ। অন্তর্বতীকালীন কমিটিতে মহাসচিব করা হয় কাজী মামুনুর রশীদকে। |
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |