সরকার কঠোর না হলে ভারতের অবস্থাও বাংলাদেশের মতো হত, বললেন কঙ্গনা
নতুন সময় ডেস্ক
|
আরজি কর হত্যাকাণ্ডের পর সারা ভারত উত্তাল। শুধু কলকাতা নয়, ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে প্রতিবাদ ও মিছিল। এরই মাঝে ফের বিতর্ক উস্কে দিলেন বিজেপির সাংসদ বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রনৌত। তিনি বলেছেন, ‘যদি কৃষক আন্দোলন নিয়ে সরকার কঠোর পদক্ষেপ না করত, তাহলে ভারতও এতদিনে বাংলাদেশ হয়ে যেত।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করা একটি ভিডিও বক্তব্যে কঙ্গনাকে বলতে শোনা যায়, ‘যেটা বাংলাদেশে ঘটেছে, সেটা এদেশে ঘটতেও দেরি হতো না। যদি আমাদের শীর্ষ নেতৃত্ব বিষয়টা শক্ত হাতে না সামলাতো। এখানে যে কৃষক আন্দোলন হয়েছিল, সেই অন্দোলনের সময়ও অনেক মৃতদেহ মিলেছে। ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। আর যখন কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নেওয়া হলো, তখন গোটা দেশ অবাক হয়ে গিয়েছিল। কৃষকরাও ভাবতে পারেননি যে, সত্যিই এই আইন প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। ওটা অনেক বড় পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ঠিক যেমনটা বাংলাদেশে ঘটেছে।’ কঙ্গনা বলেন, ‘কিছু কৃষক আইন প্রত্যাহারের পরও আন্দোলন চালিয় গিয়েছেন। এ ধরনের আন্দোলনের পেছনে আপনার কী মনে হয় কৃষকদের হাত আছে! নাহ, এটা আমেরিকার ষড়যন্ত্র। এধরনের বিদেশি শক্তি এভাবেই ষড়যন্ত্র করতে থাকে। আর এখানকার কিছু লোকজন ভাবে, ওদের দোকান তো চলুক, তাতে দেশ গোল্লায় যাক। এই লোকজন এটা বোঝে না, দেশ গোল্লায় গেলে আপনিও যাবেন।’ উল্লেখ্য, কৃষক আন্দোলন নিয়ে বরাবরই কঙ্গনা নানা মন্তব্য করে আসছেন। এমনকি কঙ্গনা একবার বলেও বসেছিলেন, যে কৃষকরা আন্দোলনে বসেছেন, তারা ১০০ টাকার বিনিময়ে আন্দোলন করতে বসেছেন। আর তার এধরনের মন্তব্যের কারণেই সাংসদ হওয়ার পর চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে কর্তব্যরত এক কৃষক সন্তান জওয়ানের হাতে চড় খেয়েছিলেন কঙ্গনা। কঙ্গনা সাফ জানিয়েছেন, ‘বাংলাদেশের কোটা আন্দোলনের মতো এখানে কৃষক আন্দোলনের নামে একই জিনিস হতে চলেছে। সরকার ফেলার চেষ্টা চলছে এখানে। আর দেশের ভেতরের রাজনীতি যদি কঠিন না হয়, তাহলে বৈদেশিক ক্ষমতার কারণে দেশে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।’ এদিকে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর মুক্তি পেতে চলেছে কঙ্গনার নতুন সিনেমা ‘এমার্জেন্সি’। সম্প্রতি এই সিনেমার প্রচারে গিয়ে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে নিয়েও বিতর্কে জড়ালেন এই অভিনেত্রী। তার কথায়, ‘গান্ধী পরিবারে জন্ম হওয়ার কারণেই ইন্দিরা নানা সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন।ইন্দিরা হলেন, ভারতীয় রাজনীতির ‘স্টারকিড’।’ অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘জীবনের সব ক্ষেত্রে ইন্দিরা গান্ধী একটু বেশিই পেয়েছেন। নেপো সিস্টেমের মাধ্যমেই তিনি রাজনীতিতে এসেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীকন্যা হওয়াতেই তার এত সুযোগসুবিধা। জীবনে কোনও স্ট্রাগল নেই। তবে হ্যাঁ, ইন্দিরা খুবই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। যখনই সমালোচনার মুখে পড়েছেন, তখনই সব সমালোচনাকে হারিয়ে নিজস্ব মতামত তৈরি করেছেন।’ এদিকে ‘এমার্জেন্সি’ সিনেমাকে নিষিদ্ধ করার আবেদন জানিয়েছেন ভারতের ‘শিরোমণি গুরু দ্বারা প্রবন্ধক কমিটি’-র সভাপতি হরজিন্দর সিং ধামি। তার অভিযোগ, কঙ্গনার এই ছবিতে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষকে বিচ্ছিন্নতাকামী হিসেবে দেখানো হয়েছে। এর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। উপযুক্ত পদক্ষেপের জন্য আবেদন করেছেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকে। এমনিতেই এর আগে শিখবিরোধী মন্তব্যের জন্য শিখ সম্প্রদায়ের রোষানলের মুখে পড়েছিলেন কঙ্গনা। তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছিল তখন। দেশ না সিংহাসন, কোনটা বেশি জরুরি? ‘এমার্জেন্সি’র ট্রেলারে এমন প্রশ্ন তুলেছেন কঙ্গনা রনৌত। ইন্দিরা গান্ধীর আমলে সত্তরের দশকে ভারত যে জরুরি অবস্থার সাক্ষী হয়েছিল, তাই দেখানো হয়েছে সিনেমার ট্রেলারে। আড়াই মিনিটের ট্রেলারে তরুণী ইন্দিরার দাপুটে উত্থান। ‘জননেত্রী’ হওয়ার গোড়ার দিকে বাবা জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে তৈরি হওয়া দূরত্বের ঝলকও দেখা গেছে। বাকিটা দেখা যাবে ৬ সেপ্টেম্বর ভারতসহ বিশ্বের নানা দেশের প্রেক্ষাগৃহে।
|
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |