ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
রোববার ১৬ নভেম্বর ২০২৫ ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
শান্তি রক্ষা মিশন নিয়ে বাংলাদেশকে দুঃসংবাদ দিল জাতিসংঘ
নতুন সময় ডেস্ক
প্রকাশ: Thursday, 9 October, 2025, 5:50 PM

শান্তি রক্ষা মিশন নিয়ে বাংলাদেশকে দুঃসংবাদ দিল জাতিসংঘ

শান্তি রক্ষা মিশন নিয়ে বাংলাদেশকে দুঃসংবাদ দিল জাতিসংঘ

জাতিসংঘ বিশ্বব্যাপী ৯টি শান্তি রক্ষা মিশনে আগামী কয়েক মাসে শান্তিরক্ষী বাহিনীর প্রায় এক-চতুর্থাংশ (২৫ শতাংশ) হ্রাস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মূলত অর্থের ঘাটতির কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ তহবিলের অনিশ্চয়তা।

জাতিসংঘের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বিষয়টি জানিয়েছেন। আর জাতিসংঘের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বাংলাদেশও।

ওই কর্মকর্তা জানান, মোট প্রায় ২৫ শতাংশ শান্তিরক্ষী সৈন্য ও পুলিশকে তাদের সরঞ্জামসহ প্রত্যাহার করা হবে। পাশাপাশি এসব মিশনে কাজ করা অনেক বেসামরিক কর্মীও এর আওতায় পড়বেন। ফলে ১৩ থেকে ১৪ হাজার সৈন্য ও পুলিশ এবং উল্লেখযোগ্য বেসামরিক কর্মী এই ছাঁটাইয়ের আওতায় আসবেন।

জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে সবচেয়ে বড় তহবিলদাতা হলো ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্র মোট তহবিলের ২৬ শতাংশের বেশি দান করে। চীন দ্বিতীয় বৃহত্তম তহবিলদাতা, প্রায় ২৪ শতাংশ দান করে। এই অর্থ প্রদান স্বেচ্ছাসেবী নয় এবং নির্ধারিত। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এরই মধ্যে দেড় বিলিয়ন ডলার বকেয়া পড়েছে। নতুন বকেয়া যোগ হওয়ায় বর্তমানে মোট বকেয়ার পরিমাণ ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

জাতিসংঘ সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র শিগগির ৬৮০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধের পরিকল্পনা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতিসংঘ মিশন এখনো এ বিষয়ে মন্তব্য করেনি।

গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে ২০২৪ ও ২০২৫ সালের জন্য বরাদ্দ করা প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার শান্তি রক্ষা তহবিল বাতিল করেন। এ ছাড়া হোয়াইট হাউসের বাজেট অফিস ২০২৬ সালের জন্যও জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনের তহবিল বাতিলের প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবের পেছনে কারণ হিসেবে মালি, লেবানন ও কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে অভিযানের ব্যর্থতাকে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই ছাঁটাইয়ের ফলে দক্ষিণ সুদান, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, লেবানন, কসোভো, সাইপ্রাস, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, পশ্চিম সাহারা, ইসরায়েল ও সিরিয়ার মধ্যে গোলান উচ্চ ভূমি উদাসীন এলাকা এবং আবিই—দক্ষিণ সুদান ও সুদানের যৌথ প্রশাসিত এলাকায় শান্তি রক্ষা মিশনে প্রভাব পড়বে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও সংস্থার কার্যকারিতা বাড়ানো এবং খরচ কমানোর উপায় খুঁজছেন। এ বছর সংস্থার ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তারা অর্থ-সংকটের মুখোমুখি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই হ্রাস শান্তি রক্ষা অভিযানের কার্যকারিতা ও শান্তি রক্ষার প্রভাবকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। সমালোচকরা যুক্তরাষ্ট্রের একপক্ষীয় সিদ্ধান্তকে বিশ্বব্যাপী শান্তি রক্ষার উদ্যোগে একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখছেন।

এদিকে জাতিসংঘের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কারণ, বাংলাদেশ জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে সেনা ও পুলিশ সদস্য মোতায়েনের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর একটি।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে শান্তিরক্ষী পাঠানো দেশগুলোর মধ্যে প্রথম স্থানে ছিল নেপাল। এ সময় মিশনে নেপালের মোট শান্তিরক্ষী ছিল ৬০১ নারীসহ ৫ হাজার ৩৫০ জন। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল রয়ান্ডা। দেশটির ৬৬০ নারীসহ ৫ হাজার ২৩৭ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত ছিলেন। বাংলাদেশের অবস্থান ৪৪৭ নারীসহ ৫ হাজার ২৩০ জন শান্তিরক্ষী নিয়ে তৃতীয়।

১৯৮৮ সালে ইরাক-ইরানে সামরিক পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অংশ নেওয়া শুরু। এরপর ৩৭ বছরে বাংলাদেশ জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নের এক গর্বিত অংশীদারে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী এই মিশনে দায়িত্ব পালন করছে ১৯৯৩ সাল থেকে। বাংলাদেশের পুলিশ সদস্যরা এই মিশনে অংশ নিচ্ছেন ১৯৮৯ সাল থেকে। ওই বছর নামিবিয়া মিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশ জাতিসংঘ পরিবারের সদস্য হয়।

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status