শ্রীবরদী চৌরাস্তা মোড়ে অবস্থিত শহীদ মিনারের বেদিতে চলে আড্ডা ও চটপটি খাওয়া
রাকিবুল হাসান খোকন, শেরপুর
|
![]() শ্রীবরদী চৌরাস্তা মোড়ে অবস্থিত শহীদ মিনারের বেদিতে চলে আড্ডা ও চটপটি খাওয়া এলাকাবাসী জানান, শ্রীবরদী পৌরসভা ভবন থেকে মাত্র ৫০ ফুট দূরত্বে শহীদ মিনারটির অবস্থান। প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারির আগের দিন ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করে নতুন রং করা হয় শহীদ মিনার। ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা ১ মিনিটে ভাষা শহীদদের প্রতি এই শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তবে, দিনের অর্ধেক অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবারো পুরাতন চেহারায় ফিরে যায় শহীদ মিনারটি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারিতে রাষ্ট্রীয় পোগ্রাম থাকে। এ কারণে উপজেলা ও পৌর প্রশাসনের কর্মচারীরা রাষ্ট্রের আদেশ পালন করেন। শহীদ মিনারের মর্মার্থ কী তারা তা মনে ধারণ করেন না। শহীদ মিনারের চারপাশে একটা বাউন্ডারি দেয়াল তুলে গেট লাগালেই কিন্তু সব ঠিক হয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন, কিন্তু তার চোখে এটা পরে না। ভাষার জন্য জীবন ত্যাগের কারণে আমরা ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পেয়েছি। কিন্তু সম্মানের জায়গায় তাকালে কর্তৃপক্ষের উদাসিনতা দেখে আমাদের লজ্জা হয়। ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, "ভাষা আন্দোলনের ৭৩ বছর অতিবাহিত হয়েছে। আমরা প্রতিদিন শহরের চৌরাস্তা মোড়ে আসা যাওয়া করি। কোনদিন জুতা পায়ে শহীদ মিনারে দাঁড়াইনি। শহীদ মিনারে এখন নেশার আড্ডা, লুডু দিয়ে জুয়ার আসর বসছে। পৌরসভা এতো কাছে হওয়া সত্ত্বেও শহীদ মিনারটির প্রতি প্রশাসনের উদাসিনতা আমাদের হতাশ করে।"শাহিনুর বারী নামে পৌরসভার এক বাসিন্দা বলেন, "উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা খরচ করতে পারে, কিন্তু শহীদ মিনার রক্ষণাবেক্ষণে তাদের বরাদ্দ থাকে না। পৌরসভার কেন্দ্রীয় এই শহীদ মিনারটি সমা অক্ষুন্ন রাখতে প্রশাসন যেন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে শ্রীবরদী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহিম দুলাল বলেন, "বিষয়টি ইতোমধ্যে আমরা উপজেলা প্রশাসনের নজরে দিয়েছি। তারা এটা রেজুলেশনের আওতায় এনেছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে আবার আলোচনা করব।" শ্রীবরদী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাবের আহমেদ বলেন, "শহীদ মিনারটি আসলে কোনো সম্মানজনক স্থানে তৈরি হয়নি। জায়গাটি পৌর শহরের চৌরাস্তা মোড় (জিরো পয়েন্ট) বাজারের মধ্যে। ফলে সেখানে প্রতিদিন হাজারো মানুষ আসেন। আমি আসার পরেই জেলা পরিষদের কাছে প্রকল্প চাওয়া হয়েছে। আমরা উপযুক্ত জায়গা নির্ধারণ করে শহীদ মিনারটি স্থানান্তরের চেষ্টা করছি। শহীদ মিনারটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে অস্থায়ী ভিত্তিতে একজন শেরপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোসা. হাফিজা জেসমিন বলেন, "আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। ইউএনওকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে। শহীদ মিনারের সম্মান রক্ষার্থে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।" |
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |