ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দুর্বল বাঁধ, বন্যার ভয়ে উপকূলজুড়ে উৎকণ্ঠা
আবির হোসেন, কয়রা
প্রকাশ: Saturday, 3 May, 2025, 4:06 PM

দুর্বল বাঁধ, বন্যার ভয়ে উপকূলজুড়ে উৎকণ্ঠা

দুর্বল বাঁধ, বন্যার ভয়ে উপকূলজুড়ে উৎকণ্ঠা

মে মাস এলেই খুলনার কয়রা, পাইকগাছা আর দাকোপে গাঙের পাড়ের মানুষদের ঘুম উধাও হয়ে যায়। বুকে ধুকপুকানি বাড়ে, কারণ নদীর জল ফুলে ওঠে। বাঁধ ভাঙবে কি না, সেই ভয় আর অনিশ্চয়তায় কেটে যায় দিনরাত।

কয়রার আংটিহারা গ্রামের রইমান বিবি গত এক যুগ ধরে দুর্যোগে ভিটেমাটি হারিয়ে বাঁধের ধারে বসবাস করছেন। তাঁর দু-চোখে যেন-আতঙ্কের ছাপ। "বৃষ্টির দিন আসলেই বুকের বাঁ পাশটা কেমন যেন ধকধক করে। জানি না এবার কোথায় আশ্রয় নেবো।"

২০০৯ সালের আইলার পর থেকে প্রতি বছর এই সময়েই আশঙ্কা ঘনিয়ে আসে। নদী গিলেছে জমি, ঘরবাড়ি, আর মানুষের স্বপ্ন। এই এলাকার অনেকেরই এখন বাঁধই তাদের একমাত্র আশ্রয় তবুও যেন জোয়ার আসলেই বাঁধ ছুঁই ছুঁই পানি, কখন না জানি পানি উপছে পড়ে লোকালয়ে। এ-ভয় নিয়ে প্রতিনিয়ত বসবাস করতে হয় ওইসব নদীর তীরে বসবাস করা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীদের। 

পাতাখালী গ্রামের তাইফুর রহমান (তুহিন) বলেন, “ভাঙতে ভাঙতে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। এখন বাঁধই ঘরবাড়ির জায়গা।”

খুলনার তিনটি উপকূলীয় উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৬৩০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ৪০ কিলোমিটার এখন ঝুঁকিপূর্ণ, আর ৯ কিলোমিটার চরম ঝুঁকিতে। পাউবো বলছে, তারা চিঠি দিয়ে মন্ত্রণালয়ে জানালেও কাজের গতি নেই।

বিশাল বাজেটের প্রকল্প হাতে নেওয়া হলেও বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। কয়রার ১৪/১ নম্বর পোল্ডারে ১,২০০ কোটি টাকার প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ২৬ শতাংশ, যদিও সময় পেরিয়ে গেছে দুই বছর। কোথাও শুধু বালুর বস্তা স্তূপ করে রাখা, কোথাও বাঁধের উচ্চতা বাড়ানোর কাজই শুরু হয়নি।

বিনাপানি গ্রামের পুস্পজিৎ সরকারের কথায় স্পষ্ট হতাশা—“দুই বছর ধরে শুধু বালুর বস্তা ফেলছে। মাটির ছোঁয়াই লাগেনি বাঁধে। দুর্যোগ আসন্ন, সবাই আতঙ্কে আছি।”

দাকোপ, পাইকগাছা, কয়রার মানুষ বলছে—শীতকালে যখন নদী শুকনো থাকে, তখন না করে বর্ষার আগমনে বাঁধ মেরামতের তোড়জোড় শুরু হয়। বাঁধ সংস্কারে এই বিলম্ব শেষ পর্যন্ত বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের খুলনা-২ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, “ঝুঁকিপূর্ণ অংশ চিহ্নিত করে কাজ শুরু হয়েছে। ধীরগতির কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন—মাটি ও বালুর ঘাটতি।”

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এইচ এম শাহাবুদ্দিন বলেন, “ষাটের দশকে তৈরি বাঁধগুলোর কোনো পূর্ণাঙ্গ সংস্কার হয়নি। নদী খননের সঙ্গে সমন্বিতভাবে বাঁধ মেরামত না করলে এই সমস্যার সমাধান হবে না।”

প্রকল্প আসে, ফাইল চলে, বরাদ্দও মেলে। কিন্তু কাজ হয় না সময়মতো। অথচ নদীর পানি কাউকে সময় দেয় না।

� পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ �







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: [email protected]
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status