ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দ্বাদশ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত
নতুন সময় প্রতিবেদক
|
![]() ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দ্বাদশ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত সমাবর্তনে ৩৯৫১ জন গ্র্যাজুয়েটকে ডিগ্রী প্রদান করা হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জনকারী ১২ জন গ্র্যাজুয়েটকে চ্যান্সেলর, চেয়ারম্যান ও উপাচার্যসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ‘স্বর্ণপদক’ প্রদান করেন। সমাবর্তনে চ্যান্সেলর এওয়ার্ড প্রাপ্তরা হলেন ফার্মেসী বিভাগের আবু ফারহান সিয়াম, ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিরিং বিভাগের জাবেদ হাসান, নিউট্রিশান এন্ড ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের হুমায়রা আসিমা মিম, টুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মাসহুর সাদ করিম এবং সফটওয়্যার ইঞ্জনিয়ারিং বিভাগের আশিকুল হক। সভাপতির বক্তব্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, সমাবর্তনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো আপনাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। এখন আপনাদের অর্জিত শিক্ষা দেশ ও দশের কল্যাণে কাজে লাগানোর পালা। সুতরাং, আজ আপনারা প্রতিজ্ঞা করুণ, আপনারা যা পেয়েছেন, তার বহুগুণ দেশকে ফিরিয়ে দেবার চেষ্টা করবেন। সেই সাথে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনেও অবদান রাখবেন। তিনি বলেন, আমি এতদিন পত্র-পত্রিকায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার এবং র্যাংকিং এ প্রথম সারিতে দেখে আস্বস্ত হয়েছি যে, আমরাও পারি। তবে আজ ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিশ্বমানের দৃষ্টি নন্দন গ্রীন ক্যাম্পাস স্বচক্ষে দেখে আমি অভিভূত। অনিন্দ সুন্দর বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিদার ড্যাফোডিলের কল্যাণে আমরা প্রকৃত বিচারেই বিশ্বমানে অবস্থান করছি। বিশ্ববিদ্যালয়টি ইতিমধ্যে শিক্ষার পরিবেশ, গুনগত মান, শিক্ষা প্রদান সংক্রান্ত সকল কর্মক্ষমতা এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শর্ত পূরণ করে স্থায়ী সনদও অর্জন করেছে। নাসা কর্তৃক আয়োজিত আন্তর্জাতিক হ্যাকাথন নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগীতায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের দলটি পর পর ৩ বার ফাইনালিস্ট হওয়ার দুর্লভ গৌরব অর্জন করেছে যা সচরাচর বিরল এবং একবার 'টিম ডায়মন্ডস' 'মোস্ট ইন্সপিরেশনাল' প্রোজেক্ট হিসেবে চ্যাম্পিয়নও হয়েছে। আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশীপে ১২৫ টি সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে ২১ টি ইভেন্টের মধ্যে ১২ টি স্বর্ন, ৮টি রৌপ্য ও ৭টি ব্রোঞ্জ পদক পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। অতিসম্প্রতি প্রথম আলো আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে এ বিশ্ববিদ্যালয়। এসব অর্জন এটাই প্রমান করে যে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুধু লেখাপড়ায় নয়, ক্রীড়াক্ষেত্রে ও সমান পারদর্শী। শুধু তাই নয়, বিশ্বখ্যাত টাইমস হায়ার এডুকেশন ইমপ্যাক্ট র্যাঙ্কিং, কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং, ইউআই গ্রীন ম্যাট্্িরক্স র্যাংকিংয়ে ও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান। আমি আশা করি, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় তাদের উন্নয়নও অগ্রযাত্রার এ ধারা অব্যাহত রাখবে। আগামীতে বিশ্বের সেরা ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় স্থান করে নিবে। তিনি আরো বলেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ শিক্ষার আন্তর্জাতিক মান অর্জনে বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষকগণকে গবেষণামূলক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। বিভিন্ন গবেষণামূলক কার্যক্রমে প্রচুর আর্থিক সহায়তা প্রদান করছেন যা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক। ফলশ্রুতিতে বিশ্বখ্যাত স্কোপাস ইনডেক্স (ঝপড়ঢ়ঁং ওহফবী) ও ন্যাচার ইনডেক্সে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রয়েছে মযাদাপূর্ন অবস্থান। ড্যাফোডিল যেভাবে এগুচ্ছে আগামীতে আমি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের সেরা ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে দেখতে চাই। নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমি আশা করবো আমাদের নবীন গ্র্যাজুয়েটরা তাঁদের অগ্রসর জ্ঞান ও দক্ষতা নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছাকাছি যাবেন এবং দারিদ্র দূরীকরণে বাস্তবসম্মত ও সৃজনশীল পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। দরিদ্র জনগণের মুখে ফোটাবেন হাসি। স্বাগত বক্তব্যে ডিআইইউ’র ট্রাস্টিবোর্ডেও চেয়াারম্যান ড. মো. সবুর খান বলেন, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি একটি ডিজিটাল এবং উদ্যোক্তা পাওয়ার হাউস। প্রযুক্তি-চালিত বিশ্বের জটিলতাগুলি নেভিগেট করার জন্য আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের সরঞ্জাম দিয়ে সজ্জিত করেছি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে ব্লকচেইন, ই-কমার্স থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং এ শিক্ষার্থীরা এখন আধুনিক শিল্পে নেতৃত্ব দেওয়ার দক্ষতার অধিকারী। আমাদের উদ্যোক্তা কর্মসূচী যেমন স্টার্টআপ মার্কেট, ঐতিজ্জের হাট এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যাক্সেস শিক্ষার্থীদের তাদের ধারণা বাস্তবে রূপান্তরিত করার ক্ষমতা দিয়েছে। তিনি বলেন, প্রযুক্তি শিল্প ও চাকরির বাজারের দ্রুত পরিবর্তন বিশ্বব্যাপী শিক্ষাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে। ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা উদ্ভাবনকে উৎ্সাহিত করে ডিজিটাল রূপান্তর অর্জন করে এবং একটি ইকোসিস্টেম তৈরি করে এই পরিবর্তনটি গ্রহণ করেছি যা শিক্ষা, গবেষণা এবং সামাজিক অবদানগুলিতে অ্যাক্সেস, ইকুইটি এবং শ্রেষ্ঠত্বকে অগ্রাধিকার দেয়। এই রূপান্তরের অগ্রভাগে থাকার প্রতিশ্রুতিতে ডিআইইউ সবসময় সাহসী ভূমিকা পালন করে আসছে। স্কিল ফোকাসড, আউটকাম- বেসড এডুকেশন (ঙইঊ) এবং "কর্তা এবং নেতাদের" লালন-পালনের ওপর দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়ে ডিআইইউ একটি টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং উদ্ভাবন-চালিত সমাজ গঠনে নিবেদিত। ১৬০টি উন্নত ল্যাব, একটি ডেডিকেটেড স্পোর্টস জোন, ইনোভেশন অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার, নলেজভেল, মিডিয়া ল্যাব এবং জিমনেসিয়ামসহ আমাদের অত্যাধুনিক সুবিধাগুলি মাইক্রো- ক্রেডেনশিয়াল প্রোগ্রাম, এমপ্লয়িবিলিটি ৩৬০ ডিগ্রি এবং আর্ট অব লিভিং-এর মতো রূপান্তরমূলক প্রোগ্রামগুলির পরিপূরক ও সহায়ক। আমাদের শিক্ষার্থীরা নাসা স্পেস এপস্ চ্যালেঞ্জ এ অংশগ্রহণ করে পর পর তিনবার ফাইনালিস্ট হয়ে প্রমাণ করেছে যে বাংলাদেশি প্রতিভা কোন সীমানা জানে না এবং জাতীয় বিতর্ক চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ইস্পাহানি-প্রথম আলো ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলগত কাজ, মানসিক দৃঢ়তা এবং কৌশলগত উজ্জ্বলতারই বহিঃপ্রকাশ। সমাবর্তন বক্তা লেবাননের সাবেক প্রধান মন্ত্রী প্রফেসর ড. হাসান দিয়াব বলেন, ডিআইইউ এমন একটি প্রতিষ্ঠান- শুধু বাংলাদেশের নয়, সমগ্র অঞ্চলের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য আশার আলো এবং মডেল। ডিআইইউ’র অগ্রগতি-চিন্তা পদ্ধতি, ব্লেন্ডেড লার্নিং সেন্টার, ব্লকচেইন-চালিত ডিজিটাল সার্টিফিকেট সিস্টেম এবং রূপান্তরমূলক,"একজন ছাত্র, একটি ল্যাপটপ" প্রোগ্রামের মতো সাহসী উদ্যোগে যার মাধ্যমে ৬৫,০০০ শিক্ষার্থী উপকৃত হয়েছে- এতে এটাই স্পষ্ট হয় যে-এটা নিছক শিক্ষা নয়; এটা ক্ষমতায়ন, বিভাজন সেতুবন্ধন এবং উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করা। তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিকীকরণের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতে শাখা ক্যাম্পাস চালুর মধ্যদিয়ে ডিআইইউ একটি বৈচিত্রময় ছাত্র সম্প্রদায়কে বিশ্বমানের শিক্ষা প্রদানে তার প্রতিশ্রুতি ও যোগ্যতা প্রদর্শন করেছে।
|
পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |