গর্ভাবস্থায় হাঁপানির ওষুধের ঝুঁকি কতটুকু?
নতুন সময় ডেস্ক
|
হাঁপানি বা অ্যাজমা শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘস্থায়ী একটি রোগ, যাতে শ্বাসনালীর ছিদ্রপথ সরু হয়ে যায়। বিশেষ করে শীতকালের ঠাণ্ডা বাতাস, ধুলাবালি, মৌসুমি সর্দি-কাশি এবং পরিবেশগত উপাদানগুলো হাঁপানির সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে। এ কারণে রোগীর শ্বাসকষ্ট হয়, কাশি ও শ্বাসের সময় বুকে বাঁশির মতো শব্দ হয়, বিশেষ করে রাতে বা ভোরের দিকে এসব লক্ষণ বেড়ে যায়। গর্ভাবস্থায় হাঁপানির ঝুঁকি গর্ভাবস্থায় হাঁপানির ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে, কারণ এই সময়ে শরীরের হরমোনগত পরিবর্তন, শারীরিক চাপ, ও ফুসফুসের উপর বাড়তি চাপ হাঁপানির লক্ষণগুলোকে প্রভাবিত করতে পারে। হাঁপানি যদি নিয়ন্ত্রণে না থাকে, তাহলে এটি মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। গর্ভকালে এই হাঁপানি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অপরিবর্তিত থাকে। কারও কারও ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি পায় এবং নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়। আবার কারও কারও ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট আগের চেয়ে কমেও যেতে পারে। গর্ভাবস্থায় হাঁপানির ওষুধ সেবনের ক্ষেত্রে সাধারণত ডাক্তারের পরামর্শ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগ হাঁপানির ওষুধ নিরাপদ বলে বিবেচিত হয়, তবে এটি নির্ভর করে ওষুধের প্রকার, ডোজ এবং গর্ভাবস্থার সময়কাল অনুযায়ী। কিছু সাধারণ নির্দেশনা ইনহেলার হাঁপানির জন্য ব্যবহৃত ইনহেলার (যেমন স্যালবিউটামল) সাধারণত গর্ভাবস্থায় নিরাপদ বলে মনে করা হয়। ইনহেলার সরাসরি ফুসফুসে কাজ করে, তাই এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম থাকে। ডোজ এবং ইনহেলার প্রকার নির্ধারণে ডাক্তারের নির্দেশনা মেনে চলুন। কিছু ইনহেলার (যেমন ব্রঙ্কোডাইলেটর বা স্টেরয়েড ইনহেলার) গর্ভাবস্থায় নিরাপদ। ওরাল স্টেরয়েড গর্ভাবস্থায় ওরাল স্টেরয়েড ব্যবহারের বিষয়ে বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন। স্টেরয়েড যেমন প্রেডনিসোলন বা ডেক্সামেথাসন নির্ধারিত মাত্রায় ও নির্দিষ্ট শারীরিক সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এটি সাধারণত তখনই ব্যবহার করা হয় যখন মায়ের জন্য সুবিধা আর শিশুর জন্য ঝুঁকি পূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। এটি গর্ভের শিশুর ঠোঁট ও তালুর জন্মগত ত্রুটি হওয়ার ঝুঁকি সামান্য বাড়াতে পারে। দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে শিশুর বৃদ্ধিতে বাধা বা অন্যান্য জটিলতা হতে পারে। ওজন বৃদ্ধি, রক্তচাপ বৃদ্ধি বা গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়তে পারে। তাই যথাসম্ভব প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ব্যবহার না করা। অ্যান্টিহিস্টামিন যদি হাঁপানি অ্যালার্জির কারণে হয়ে থাকে, তবে কিছু অ্যান্টিহিস্টামিন ঔষধ গর্ভাবস্থায় নিরাপদ হতে পারে। তবে ডাক্তারের অনুমতি ছাড়া এটি সেবন করা উচিত নয়। গর্ভবতী মায়েদের জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন ব্যবহারের বিষয়টি সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করতে হয়। কিছু অ্যান্টিহিস্টামিন গর্ভকালীন সময়ের জন্য নিরাপদ হতে পারে, তবে কিছু ধরনের অ্যান্টিহিস্টামিন গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা উচিত নয়। বিশেষ করে, প্রথম তিন মাস এটি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উচিত, কারণ এতে গর্ভপাত বা অন্যান্য জটিলতা ঘটতে পারে। কেন চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন কিছু ওষুধ গর্ভস্থ শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। গর্ভাবস্থার বিভিন্ন ধাপে ওষুধের প্রভাব ভিন্ন হতে পারে। হাঁপানি যদি নিয়ন্ত্রণে না থাকে, তাহলে তা মায়ের এবং শিশুর উভয়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। পরামর্শ আপনার ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে হাঁপানি নিয়ন্ত্রণের জন্য সঠিক ওষুধ বেছে নিন। ওষুধ ব্যবহারে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। প্রাকৃতিক উপায়ে হাঁপানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে পারেন, যেমন ধুলাবালি এড়িয়ে চলা এবং পরিমিত বিশ্রাম নেওয়া। নিজের ইচ্ছায় কোনো ওষুধ সেবন করা উচিত নয়। |
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |