ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
শুক্রবার ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
জিয়াউর রহমান : অবিস্মরণীয় এক রাষ্ট্রনায়ক
মােঃ মাহমুদ হোসেন
প্রকাশ: Thursday, 28 November, 2024, 12:32 PM

জিয়াউর রহমান : অবিস্মরণীয় এক রাষ্ট্রনায়ক

জিয়াউর রহমান : অবিস্মরণীয় এক রাষ্ট্রনায়ক

বাংলাদেশের রাজনীতিতে অবিস্মরণীয় বিস্ময়কর এক রাষ্ট্রনায়কের নাম জিয়াউর রহমান। আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি তিনি৷ এমন এক বাংলাদেশ রচনার সূচনা তিনি করে দিয়ে গিয়েছিলেন যা ধরে রাখতে পারলে ইতিমধ্যেই আমরা  দারিদ্র্যের অপবাদ ঘুচিয়ে এক সমৃদ্ধ আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারত। 

কিন্তু পরবর্তীকালে সরকারগুলো জিয়াউর রহমানের শাসনধারার গতি বজায় রাখতে পারেননি। ফলে জিয়াউর রহমানের শাহাদত বরণের পর আবারো থমকে যায় বাংলাদেশ। আবারো পশ্চাদমুখী, স্থবির নতজানু করে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে দেশকে।

 জিয়াউর রহমান তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ থেকে মুক্ত করে বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলেছিলেন। আমরা  কিছু উন্নত মানের চাল বিদেশে রফতানি করতে শুরু করেছিলাম শিল্প-সংস্কৃতি, পররাষ্ট্রনীতি, কূটনীতি, শিক্ষায়-সাহিত্য, শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষ মিলে বাংলাদেশ সমৃদ্ধির পতাকা হাতে যে দৌঁড় দিয়েছিল তাকেই বারবার থমকে দেয়া হয়েছে।

 জিয়াউর রহমানের সেই আদর্শের অনুসারী এখনো দেশের কোটি কোটি মানুষ।এখনো হৃদয় থেকে হৃদয় সঞ্চারিত হয়ে  এক আপন জনের নাম।  এক আদর্শের নাম জিয়াউর রহমান। 

এ কথা সত্য যে, ১৯৭১ সালে জিয়াউর রহমান খ্যাতিমান কোনো লোক ছিলেন না। সেনাবাহিনীর এক অকুতোভয় কর্মকর্তা।  যিনি সেনাবাহিনীর ভেতরেই তিনি ছিলেন এক প্রিয় মানুষ। তার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যেমন তাকে পছন্দ করতেন। তেমনি তার অধঃস্তন কর্মকর্তা ও সাধারণ সৈনিকেরাও তাকে ভালোবাসতো। ঘনিষ্ঠজনেরা  তাকে নিয়ে গর্ববোধ করতেন সাহসী সেনা কর্মকর্তা হিসেবে। আমরা সাধারণ মানুষও তার নাম স্বাধীনতার আগে শুনিনি।

 এই ভূমিপুত্র নিজেকে কতখানি স্বদেশনুরাগি করে তুলেছিলেন তার প্রমাণ পাওয়া গেল ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ। তখন টালমাটাল বাংলাদেশ। একদিকে পাকিস্তানি সামরিক বেসামরিক আমলাতন্ত্রের কূটচাল। অপরদিকে পশ্চিম পাকিস্তান প্রধান রাজনৈতিক দল পিপলস পার্টির একগুঁয়েমি অবস্থান। পাকিস্তানের রাজনীতিতে সংঘাতম। তখন পূর্ব-পাকিস্তানের অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জনসংখ্যার ভিত্তিতে আসন নির্ধারিত হওয়ার পূর্ব পাকিস্তানে আসন সংখ্যা ছিল বেশি। আর শেখ মুজিবুর রহমানের আওয়ামীলীগ পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনের অধিকারী ছিল । ফলে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের অধিকার ছিল শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগেরই। সে পরিস্থিতিতে মেনে নিতে পারেনি পাকিস্তানের সামরিক আমলাতন্ত্র।  পশ্চিম পাকিস্তানের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভকারী জুলফিকার আলী ভূট্রোর পাকিস্তান পিপলস পার্টিও তা মানতে পরেনি। 

 পিপলস পার্টি ও সামরিক আমলাতন্ত্রের যুগপৎ ষড়যন্ত্রে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্ব পাকিস্তানীদের ওপর হত্যাযজ্ঞের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠি।

শেখ মুজিবুর রহমান শেষ পর্যন্ত আশাবাদী ছিলেন যে, পাকিস্তানের অখণ্ডতা অটুট থাকুক। তিনি চেয়েছিলেন  অখণ্ড পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তৎকালীন ছাত্রনেতা আ স ম আবদুর রবকে কেউ একজন রাত সাড়ে ৮টার দিকে জহুরুল হক হলে টেলিফোন করে জানিয়েছিলেন যে ঐদিনই রাত ১২ টায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঢাকায় ক্র্যাকডাউন করবে। রাজনীতিক নেতৃবৃন্দকে হত্যা করা হবে। তখন পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি  এমনি ছিল যে, উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন ছিল সবাই। এই ক্র্যাকডাউনে শেখ মুজিবুর রহমান নিহত কিংবা গ্রেফতার হতে পারেন।এটা চিন্তা করেই ছাত্রনেতারা দুটি পথে তার পালিয়ে যাওয়ার সুরক্ষিত বন্দোবস্ত করে রেখেছিলেন। স্থলপথে  আখাউড়া দিয়ে অথবা    নৌপথে ভারতে ৷ 

আ স ম আব্দুর রব আওয়ামী লীগের ছাত্র-যুব নেতাদের সঙ্গে নিয়ে এপ্রসংগে শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে আলোচনাও করেছিলেন।   তাকে জানিয়েছিলেন যে, ঐ দুই পথে  পালিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। 

সে রাতেই পাকিস্তানের সরকার শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে। অবশ্য তিনি জেলখনায় ব্যাবহারের দরকারী  জিনিসপত্র আগেই   গুছিয়ে রেখেছিলেন। বেগম মুজিব প্রত্যক্ষ করেন,  মিলিটারির গাড়ি এসেছে কিনা সেটা দেখার জন্য অস্থিরতভাবে বার বার জানালার কাছে ও টেলিফোনের কাছে যাতায়াত করছিলেন শেখ মুজিব । 

রাত ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে তিনি সেদিন তার বাড়ি থেকে সকল রাজনৈতিক নেতাকে বিদায় জানিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলেছিলেন।

শেখ মুজিব ও তার দলের নেতাদের এরকম একটি বন্দোবস্তের মধ্যেই ২৫ মার্চ (১৯৭১) রাত ১২টায় পাক হানাদার বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের ওপর হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। গোটা দেশের মানুষ তখন নেতৃত্বহীন, দিশেহারা। সে রকম দুর্যোগের মুখে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ রাতে চট্টগ্রামে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী থেকে বিদ্রোহ করে পশ্চিম পাকিস্তানের সেনা কর্মকর্তা ও জওয়ানদের বন্দি করেন জিয়াউর রহমান। কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে  বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেন। তখনকার প্রেক্ষাপটে তিনি এই ঘোষনা  না করলে  স্বাধীনতাযুদ্ধ ইতিহাস হয়তো ভিন্নভাবে লিখতে হতো।

 জিয়াউর রহমান এই ঘোষনার পর তৎক্ষনাৎ  সারাদেশের মানুষ  প্রাণে স্পন্দন ফিরে পেয়েছিল। মানুষ তো ভেতরে ভেতরে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুতই রয়েছিল। কারন বারবার পাকিস্তান জাতীয় সংসদের অধিবেশন ডেকে স্থাগিত করা হয়েছিল তখনই মানুষ উপলদ্ধি করতে পেরেছিল যে বাংলাভাষী শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে দিতে চায় না সামরিক আমলাতন্ত্র ও পশ্চিম পাকিস্তানের প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ পিপলস পার্টি (পিপিপি)। 

তাহলে জনগণের সামনে বিকল্প কি? পশ্চিম পাকিস্তানের ঐ মতলব বানচাল করে দেয় মেজর জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা । 

 শেখ মুজিব কোনো ঘোষণা না দিয়েই পাকিস্তানের বন্দীত্ব মেনে নেন। কোনো নেতা কর্মীকেই কোনো নির্দেশনা দিয়ে যাননি। ফলে কি করতে হবে এই বিষয়ে তারাও ছিলেন দিশাহারা । প্রাণ বাঁচাতে কেবলই ছুটছিলেন সবাই। 

কিন্তু  মেজর জিয়াউর রহমান  স্বাধীনতার ঘোষণায়  সাধারণ মানুষও যুদ্ধের জন্য নতুনভাবে উজ্জীবিত হন। জিয়া হয়ে ওঠেন এ দেশের মানুষের মুক্তির প্রতীক।  তারা ভাবতে শুরু করেন যে, জিয়া নামে কেউ আছেন। তিনি এই স্বাধীনতার লড়াইয়ের নায়ক। আমরা লড়ব তারই পেছনে। 

জিয়াউর রহমান ও তার সহযোগী যোদ্ধারাই রাজনৈতিক নেতৃত্বকে যুদ্ধ পরিচালনায় সামনে নিয়ে আসে। যার ধারাবাহিকতায় মুজিব নগর সরকার গটিত হয়। নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ আর অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার পর এদেশের মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশকে শুত্রুমুক্ত করে। 

এটিও কম আশ্চর্য নয় যে, এক্ষেত্রেও তারা ক্ষমতা লিপ্সার পরিচয় দেননি। পৃথিবীর যেখানেই এ ধরনের যুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে সেখানেই রণাঙ্গনের যোদ্ধারাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হয়েছে। শুধু বাংলাদেশেই হয়েছে এর ব্যতিক্রম। রণাঙ্গণের যোদ্ধারা রাজনৈতিক নেতৃত্বের হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়ে ব্যারাকে ফিরে গেছেন।

পরবর্তীতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস কমবেশি আমাদের সকলেরই জানা। আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে তিন বছরের দুঃশাসন, অত্যাচার, নিপীড়ন, নির্যাতন, রক্ষীবাহিনী, দুর্ভিক্ষ। যার ধারাবাহিকতায়  এসেছিল ১৫ আগষ্টের করুণ পরিণতি। বিপর্যয়ের মুখে পতিত হয় বাংলাদেশ। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর  স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার তাগিদে সিপাহী জনতার যে ঐতিহাসিক বিপ্লবের নতুন অধ্যায় রচিত হয়।   মানুষের হৃদয়ের মনিকোঠায় স্থান পাওয়া স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে সিপাহি জনতা। এই বিপ্লবের ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্র পরিচালনার ভার অর্পিত হয়েছিল তার ওপর। ক্ষমতা তিনি ছিনিয়ে নিননি। ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও করেননি। বরং সিপাহি জনতাই তাক ধরে নিয়ে এসে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করল। 

জিয়াউর রহমান ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই যেন রাতারাতি বদলে যেতে শুরু করল বাংলাদেশের দৃশ্যপট। শেখ মুজিবের  সাড়ে তিন বছরের দুঃশাসন, নিপীড়ন, শোষণ দুর্ভিক্ষে মানুষ হয়েছিলো বিক্ষুব্ধ।   শাসকগোষ্ঠীর সমীহীন লুণ্ঠনের ফলে বিশ্বে বাংলাদেশ আখ্যায়িত হয়েছিল তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে। এরকম অবস্থায় রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ববার গ্রহন করে জিয়াউর রহমান প্রথমেই দেশে সুশাসন, ন্যায় বিচার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা  দৃষ্টি দিলেন। এক দলীয় বাকশালের পরিবর্তে বহুদলীয় গণতন্ত্রে প্রতিষ্ঠা করলেন। আওয়ামী লীগের পুন:জন্মের সুযোগ করে দিলেন।আট কোটি মানুষের বিপন্ন হাতকে কর্মীর হাতে রূপান্তরের উদ্যোগ নিলেন। কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার জন্য নিজেই কৃষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন। 

ফারাক্কার বিরুপ প্রভাব তখন শুরু হয়েছে। পানি নেই। এনিয়ে শুরু করলেন আন্তর্জাতিক মহলে দেনদরবার। গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যার বিষয়ে নজর দিলেন। ভারতকে চাপে রাখতে  জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে শুরু করলেন। জাতীয় ও আন্তজাতিকভাবে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে সচেষ্ট হলেন। শস্যের জমিনে নদীর পানির বিকল্প  হিসেবে তিনি খালকাটা কর্মসূচি হাতে নিলেন। স্বেচ্ছাশ্রমে খালকাটা কর্মসূচিতে কোদাল ধরলেন নিজ হাতে। সারা দেশে শুরু হলো খালকাটা কর্মসূচি। নদী-বিল হাওর-বাওড় থেকে পানি আসতে শুরু করল সংস্কারকৃত খালে। সে খালের পানিতে দু'পাশের শস্যের জমিন সুবজ ফসলে ছেয়ে গেল। আর জমাকৃত পানিতে সমবায়ভিত্তিক মাছের চাষ। ফলে পরবর্তী মাত্র দু'বছরের মধ্যেই দুর্ভিক্ষে কাতরানো বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ায়।  কৃষক জিয়াউর রহমানের দেখিয়েছিল কী বৈপ্লবিক শক্তি আছে তাদের মুঠোর ভেতরে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে গেল বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, জিয়াউর রহমানের সবুজ বিপ্লবের মাধ্যমে উৎপাদিত সরু চাল রফতানি করে বাংলাদেশ। বিশ্বকে জানান দিল যে প্রতিযোগিতার কাতারে আমরাও এগিয়ে আসছি।

শুধু কৃষিক্ষেত্রেই নয় শিল্প বাণিজ্য, শিক্ষা,স্বাস্থ্যসেবায় বাংলাদেশ চোখে পড়ার মতোই সাফল্য অর্জন করে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্ব। 

শিশুদের ভবিষ্যতের আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তিনি শিশু ও নারী বিষয়ক আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করলেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মেয়েদের চাকরি নিশ্চিত করার জন্য নির্ধারণ করলেন নির্দিষ্ট কোটা। প্রথমবার তার আমলেই মেয়েরা চাকরি করতে শুরু করলেন পুলিশ বাহিনীতে। তিনি টেলিভিশন নুতন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করলেন। প্রতি জেলায় জেলায় নিয়ে যাওয়া হলো শিল্পকলা একাডেমীর শাখা। আমাদের  নিজস্ব সংস্কৃতির উন্নয়ন ও বিকাশ ঘটানো জন্য  বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক দল সফর করতে শুরু করল পৃথিবীর দেশে দেশে। বিশ্বে নতুনভাবে পরিচিত হয় বিন্ন চেহারার এক বাংলাদেশ।

শুধু তাই নয়, তরুণ সমাজের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত করে তোলার জন্য তিনি মেধাবী ছাত্রদের নিয়ে হিজবুল বাহারে করে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রায় শেষ সমুদ্রসীমায় । তিনি তাদের জানান দিয়েছিলেন  বিশাল সমূদ্রের এটুকু তোমার । এটা রক্ষা করার দায়িত্বও আমাদের সকলের । 

আমাদের ৮কোটি মানুষকে বোঝা নয়। সম্পদে রুপান্তরের স্বপ্ন দেখেন জিয়াউর রহমান।  বাংলাদেশের বিশাল এই জনশক্তির কর্মসংস্থান স্বদেশে অপ্রতুল।  জিয়াউর রহমানই প্রথম এই উদ্বৃত্ত জনশক্তি রফতানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পথ উম্মোচন করেন। 

জিয়াউর রহমানের কর্মযজ্ঞ ছিল সর্বব্যাপী। শুধু দেশেই নয়। দেশের  উজ্জ্বল ভাবমূর্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশকে পরিচিত করে তুলেছিলেন জিয়াউর রহমান। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করার জন্য জিয়াউর রহমানের উদ্যোগ সর্বজনবিদিত। জাপানের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বাংলাদেশ জাতিসংঘের স্থায়ীকমিটির সদস্য হয়েছিল। কিন্তু তাতে জাপানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিন্দুমাত্র অবনতি ঘটেনি। ফারাক্কার পানির ন্যায্য হিস্যা দিতে তিনি ভারতকে বাধ্য করেছিলেন। ইরান-ইরাক যুদ্ধ বন্ধে তিনি পালন করেছিলেন অগ্রণী ভূমিকা। তাঁর ভূমিকাকে অবিস্মরণীয় করে রাখতে মরক্কোর রাজধানী রাবাতের একটি সড়কের নাম রাখা হয়েছে জিয়াউর রহমান এভিনিউ। দক্ষিণ পূর্ব  এশিয়ার আঞ্চলিক সেতুবন্ধনে ‘সার্ক’ প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। এভাবেই জিয়াউর রহমান শাসক থেকে অবস্মরণীয় এক রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হয়েছিলে ।

লেকক: শিক্ষাবিদ, মানব উন্নয়ন কর্মী ও সমাজ সেবক

� পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ �







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status