ফুলকপি চাষে ঝুঁকছেন শিবগঞ্জের কৃষকরা
সোহেল রানা,শিবগঞ্জ
|
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শীতকালীন সবজি হিসেবে ফুলকপির বাম্পার ফলনের আশা করছেন বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কৃষকেরা। কম সময় ও অল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় ফুলকপি চাষে ঝুঁকছেন এ উপজেলার চাষিরা।সবজি ভান্ডার হিসেবে খ্যাত এই উপজেলার অধিকাংশ জমিই চার ফসলি। এই উপজেলায় কৃষকেরা শীতকালীন সব ধরনের সবজি ও ফসল উৎপাদন করে থাকে। এবার শীতকালীন ফসল উৎপাদনে বাম্পার ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় ফুলকপির জমিতেই বেশি সময় দিচ্ছে এ অঞ্চলের কৃষকরা। উৎপাদিত ফসল নিয়ে ছুটছে স্থানীয় হাটবাজারে। এ অঞ্চলের উৎপাদিত ফুলকপি রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে সরবরাহ হচ্ছে। বাণিজ্যিকভাবে চাষ হওয়া ফুলকপিতে সবুজে সবুজে ছেয়ে গেছে ফসলের মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে ফুলকপির বিশাল সমারহ। কাক ডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে কৃষকরা জমিতে হাল চাষ, চারা রোপণ, পানি ও আগাছা পরিষ্কার করা ও জমি থেকে কপি তুলে বাজারে বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছে। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার শিবগঞ্জে সারা বছরে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৯৪ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ফুলকপি চাষের লক্ষমাত্রা ৪৭০ হেক্টর। সরেজমিনে উপজেলার মোকামতলা, দেউলি, পৌরসভা, ময়দানহাট্টাসহ বিভিন্ন এলাকায় গেলে দেখা যায়, লক্ষমাত্রার চেয়ে দ্বিগুন চাষ হয়েছে ফুলকপি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে শীতের শেষ পর্যন্ত ভালো দাম পাবে কৃষকেরা। কৃষকদের সবজি চাষে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে কৃষি অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ সহায়তা ও নিয়মিত মনিটরিং এর ফলে সবজি চাষে আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহার বেড়েছে। আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে উৎপাদন বাড়ায় কৃষকদের মুনাফাও বেড়েছে কয়েকগুণ। শিবগঞ্জ উপজেলার বেড়াবালা আকন্দ পাড়া গ্রামের কৃষক জুয়েল জানান, তিনি এ বছর ৬ বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছে। সে জানান, ফুলকপি চাষে একটু বেশি পরিচর্যা করতে হয়। খুব কম সময়েই সবজি বিক্রি উপযোগী হয়ে ওঠে। এবছর প্রতিমন ফুলকপি ২২০০-২৩০০ টাকায় বিক্রি করছি। এবার দাম বেশ ভালো পাচ্ছি। গরিবপুর গ্রামের কৃষক আজাদুল বলেন, প্রতি বছর বিভিন্ন জাতের আগাম সবজি চাষ করে থাকি। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ৩ বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করছি। গত বছরের তুলনায় এ বছর জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য জিনিসের দাম অনেক বেশি। যে কারণে সবজি চাষে খরচও আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। প্রতি বিঘাতে প্রায় ৪০হাজার খরচে বিক্রি করেছি ৭০হাজার টাকায়। শিবগঞ্জ হাটের সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, এবার ফুলকপি চাষে কৃষকেরা ভালো দাম পেলেও আমাদের লাভ হচ্ছে কম। কৃষি বিভাগ আশা করছে, আগাম শীতকালীন সবজি চাষের মাধ্যমে শিবগঞ্জের কৃষকদের আর্থিকভাবে সমৃদ্ধি আসবে এবং দেশের শাকসবজি বাজারে নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান জানান, এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফুলকপি চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। শিবগঞ্জের চাষকৃত সবজি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হয়ে থাকে। কৃষি অফিস থেকে সব সময় কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। |
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |