ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
গোপন ক্যামেরা ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা
গুলশান ও বনানীতে প্রায় অর্ধডজন ফ্ল্যাট বাড়িতে চলছে স্পার আড়ালে দেহ ব্যবসা
বিপ্লব বিশ্বাস
প্রকাশ: Wednesday, 30 October, 2024, 1:48 PM

গুলশান ও বনানীতে প্রায় অর্ধডজন ফ্ল্যাট  বাড়িতে চলছে স্পার আড়ালে দেহ ব্যবসা

গুলশান ও বনানীতে প্রায় অর্ধডজন ফ্ল্যাট বাড়িতে চলছে স্পার আড়ালে দেহ ব্যবসা

গুলশান ও বনানীর বভিন্ন রোডে অন্তত অর্ধডজন ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে চলছে স্পার আড়ালে দেহ ব্যবসা। এদের মধ্যে সুলতানা, জারা, ইভা সুন্দরীরা খুলে বসেছে রমরমা মধুকুঞ্জ। বছরের পর বছর ধরে স্পার অন্তরালে তাদের অসামাজিক কার্যকলাপের মধুকুঞ্জে পরিনত হওয়া এই মিনি পতিতালয় গুলোতে  নেই পুলিশ র‌্যাবের অভিযান। যে কারণে একপ্রকার  বিনা বাঁধায় বিভিন্ন অনলাইন গ্রুপ গুলোতে বিভিন্ন কায়দায় দিয়ে যাচ্ছে নজরকারা বিজ্ঞপ্তি। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবকিছু জেনেও না জানার ভান ধরে যথাযথ দায়িত্ব পালনে উদাসিন থাকে বলেও বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন।
সূত্র মতে,এক শ্রেণির ভবন মালিকও অতিরিক্ত ভাড়া হাতানোর লোভে স্পা সেন্টারগুলোকে তাদের ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়ে থাকেন। কালেভদ্রে পুলিশি অভিযানের ঝক্কি ঝামেলা সৃষ্টি হলে তারা কোনো কিছু না জানার ভান ধরেন। গত কয়েকদিন সরেজমিন অনুসন্ধানকালে জানা যায়, গুলশান-বনানীর প্রায় প্রতিটি সড়কে তারা একটা ট্রেড লাইসেন্স আর বাড়ী ভাড়া নিয়ে বিউটি পার্লার অথবা হেয়ার কাটিং সেলুন অথবা স্পা সেন্টার খুলে নির্বিঘেœ মাদক বিক্রি ও দেহ ব্যবসা করে যাচ্ছে। এরাই স্পার আড়ালে দেহ ব্যবসা ফাঁদে ফেলে  গোপন ক্যামেরায় তার ধারণ করে (ব্ল্যাকমেইল) করে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, গুলশান-১ সার্কেলের ১৩১নং সড়কে ৬০/বি খুশবু রেস্টুরেন্টের উপরে বাড়ির চতুর্থ তলায় রয়েছে মালিক সুমনার স্মার্ট থাই স্পা, গুলশান ২ নম্বর সার্কেলের ৪৪ নং সড়কে ৬/বি নং বাড়ির ৫ তলায় হাসি আক্তারের অ্যারোমা থাই স্পা, গুলশান সার্কেল ১ এ ৮ নং সড়কে ১/বি বাড়ীর সি/১ ফ্লাটে রয়েছে অরোরা স্পা সেন্টার, গুলশান-সার্কেল ২ এ ২নং সড়কের ৪নং বাড়ীতে রয়েছে অরোরা স্পার ২য় শাখার রমরমা বাণিজ্য দেখতে পাওয়া যায়। এ দুটি স্পা সেন্টারের তত্বাবধায়ক হিসেবে রয়েছেন ফজলু মিয়া নামের জনৈক ব্যক্তি।
এছাড়াও গুলশান-১ এর ১৩০ নং সড়কের ১১/এ বাড়ীর ৬ তলায় সুয়াই বিউটি কেয়ার স্পা এন্ড সেলুন পার্লার এর ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ইএনটি কেয়ার সেন্টার ও হেয়ারিং সেন্টার খুলে তারা যাবতীয় অনৈতিক কর্মকান্ড চালাচ্ছে। সেখানে রয়েছে অত্যাধুনিক সয়ংক্রিয় অটোমেটিক লক সিস্টেম, সু-সজ্জিত ১০টি ক্যামেরা, যেখানে রুপসী তরুণিরা অর্থের বিনিময়ে প্রতিনিয়ত খদ্দেরদের শয্যাসঙ্গী হয়ে থাকে। হাই সোসাইটির বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের জন্য খুলে বসা সুয়াই ও ইএনটি কেয়ার সেন্টার দেখভাল করে থাকেন মোঃ মামুনুর রশিদ সিদ্দিক এবং রাবেয়া আক্তার লাবনী।
এছাড়াও গুলশান ২ সার্কেলের ১০৪ নং রোডের ২৩/বি/১ নং বাসার বহুদামী একটি ফ্ল্যাট ভাড়ায় নিয়ে মাদক-নারীর রমরমা বাণিজ্য ফেঁদে বসেছে জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তি। নারী সংক্রান্ত বহু অপরাধের শিরোমনি জাকিরের ফ্ল্যাটে সবকিছুই ঘটে খোলামেলা ভাবে। থানা পুলিশের সঙ্গেও তার দহরম মহরম সম্পর্ক থাকায় তার মাদক, নারী ও প্রতারণামূলক কাজ কারবার বন্ধের নাকি কারো সাধ্য নেই।
স্পা সেন্টার নামের অপরাধ আখড়াগুলোতে মাদক-নারীর অসামাজিক কার্যকলাপ ছাড়াও অবাধে চলে ব¬্যাকমেইলিং। এসব প্রতিষ্ঠানে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করে যারা ক্ষণিকের আনন্দ আয়েশ করতে যান তাদের অনেকে নানারকম প্রতারণার কবলেও পড়েন। প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্পাই ক্যামেরার মাধ্যমে প্রত্যেক খদ্দেরের অবস্থানকালীন পুরো সময় ভিডিও করে রাখা হয়। এসব ভিডিওকে পুঁজি করে শুরু হয় ব¬্যাকমেইলিং। স্পা সেন্টারের যেসব তরুণি স্বেচ্ছায় নানা অপকর্মে লিপ্ত হন তারাই এসব ভিডিওকে প্রমান হিসেবে দাঁড় করিয়ে গুরুতর অভিযোগ তোলেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে থানা পুলিশের সহায়তায় ভূয়া মামলা রজু করারও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়, তোলা হয় ধর্ষণের অভিযোগ। এমন প্রতারণামূলক কান্ডে চরম বিপাকে পড়া ব্যক্তিটি চাহিদামাফিক টাকা দিয়ে মিট মিমাংসা করতেও বাধ্য হন। বনানীর রোড নং ১৭, হাউজ নং ২১, লিফটের ৯ম তলায় জামানের সুইট ড্রিম, লিফটের ৭ তলায় জাবেদের মেঘলায়, রোড নং ১৮, হাউজ- ৪৯ এ লাবনী আক্তার ইভার স্পা সেন্টারে এবং বনানীর এল ব¬কের ২ নং রোডের স্পা সেন্টারে অহরহ এ ধরনের প্রতারণা ঘটে থাকে বলে জানা গেছে।
গুলশান, বনানী ও নিকেতন আবাসিক এলাকায় গজিয়ে ওঠা স্পা, মাদক, মিনি পতিতালয়সমূহে নিয়মিত ইয়াবা ও আইস সরবরাহ দিয়ে থাকে দেবাশীষ সিং ওরফে ধ্রুব ওরফে দেবা নামের এক ডাকসাইটে মাদক ব্যবসায়ি। ভদ্রতার খোলসে বহুজাতিক একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও তার মূল বাণিজ্যই হচ্ছে মাদক ও নারী সরবরাহ। নানা তরুণিদের মোটা আয়ের প্রলোভন দিয়ে সে নিকেতনের বিভিন্ন স্পা সেন্টারে নিয়ে যায় এবং তার আঙ্গুলী ইশারায় তারা মূলত সেখানে বন্দী হয়ে পড়ে। ইচ্ছা অনিচ্ছায় ওই দেবাশীষের নির্দেশে ওই তরুণিরা যেমন পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য হয় তেমনি বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় বেড়ানোর নামে নিয়ে তাদেরকে মাদক আনা নেয়ার কাজে যুক্ত করিয়ে থাকে। তার বিরুদ্ধে টেকনাফ সীমান্তে নিয়ে বিভিন্ন তরুণি দেহপসারিণীদের মিয়ানমারে পাঠিয়ে তাদের বিনিময়ে হাজার হাজার পিস ইয়াবা আনারও অভিযোগ রয়েছে। ওই মেয়েদের ভাগ্যে কি নির্মমতা ঘটে, তারা কেউ আর দেশে ফিরতে পারেন কি না- সে ব্যাপারে আর কিছুই জানা সম্ভব হয় না। দেবাশীষ সিং কখনো নিজেকে গোয়েন্দা কর্মকর্তা আবার কখনও মাদক অধিদপ্তরের গোয়েন্দা ইউনিটের ইনচার্জ বলেও পরিচয় দিয়ে থাকে। তার গ্রামরে বাড়ি মানকিগঞ্জরে পল¬ীতে বলে জানা গেছে। 

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status