নাটোরে খেজুরের গুড় সংগ্রহের জন্য গাছ পরিচর্যায় ব্যাস্ত গাছিরা
মোঃ রাসেল, নাটোর
প্রকাশ: Sunday, 27 October, 2024, 4:51 PM
শীত আসতে না আসতে নাটোরের নলডাঙ্গায় আগাম খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিরা। দিনে কিছুটা গরম হলেও সন্ধ্যা হলেই শীতের আগমন বার্তা চলে এসেছে। সকালেও শিশির ভেজার পথ। যা শীতের আগমনের বার্তা জানান দিচ্ছে। এরই মধ্যে নলডাঙ্গা উপজেলার গাছিরা আগাম খেজুর গাছ ঝুড়তে শুরু করেছে।
আগাম রস পাবার আশায় উপজেলার খেজুরের গুড় উৎপাদনকারী গাছিরা গাছের পরিচর্যা শুরু করেছে। শীতের মৌসুম শুরু হতে না হতেই খেজুরের রস আহরণের জন্য গাছিরা খেজুর গাছ প্রস্তত করতে শুরু করেছে। গাছিরা হাতে দা, হাসুয়া,বাটাল, নিয়ে ও কোমরে ডোঙ্গা বেঁধে নিপুণ হাতে গাছ চাছাছোলা করছে। শীত মৌসুমে খেজুরের রস দিয়ে গ্রামীণ জনপদে শুরু হয় শীতের আমেজ। শীত যত বাড়বে খেজুরের রসের স্বাদ তত বাড়বে।
সুস্বাদু পিঠা ও পায়েস তৈরিতে আবহমান কাল থেকে গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে খেজুরের গুড় ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখানকার গাছিদের দানা গুড়, পাটালি গুড় তৈরিতে ব্যাপক সুনাম থাকায় খেজুরের পাটালি গুড়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। উপজেলার হরিদাখলসী গ্রামের গুড় উৎপাদন কারী গাছি মোঃ রুবেল,মির্জাপুর দীঘা তেঘড়পাড়া গ্রামের মোঃ কামাল,মোঃ আসাদুল, সমসখলসী গ্রামের মোঃ জিল্লু তারা বলেন, হালকা হালকা শীতের আভাস পেতেই আগেই খেজুর গাছ থেকে রস আহরণের জন্য গাছকে আগাম প্রস্তত করে রেখেছি। তারা আরও বলেন, আমরা কোন কেমিক্যাল ছাড়াই ভেজাল মুক্ত স্বাস্থ্য সম্মত গুড় উৎপাদন করে থাকি। আমাদের গুড়ের মান ভালো হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সরাসরি নগদ টাকায় ও ন্যায্য মুল্যে কিনে নিয়ে যায়।এছাড়াও অনলাইনে গুড় ব্যাবসা ব্যাবসা করে, এমন ব্যাবসায়ীরা ও আমাদের কাছে থেকে গুড় সংগ্রহ করে থাকে।
তারা জানান আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তারা খেজুরের গুড় বাজারজাত করবেন। গাছিরা আরও জানান গড়ে ৭০-৮০ টি গাছ একজন গাছি গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যে রস সংগ্রহ করে থাকেন। এতে করে প্রতি মৌসুমে খরচ বাদ দিয়ে ৮০হাজার টাকা থেকে ১লক্ষ টাকা আয় করে থাকেন।
নলডাঙ্গা উপজেলায় মোট ৭১৭৫ টি খেজুরের গাছ আছে বলে জানান নলডাঙ্গা উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ মোঃ কিশোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, আসন্ন শীত মৌসুমে ৩৬৮ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।তিনি বলেন, উপজেলায় ভেজাল মুক্ত খেজুরের গুড় উৎপাদনের লক্ষে ইতি মধ্যে গুড় উৎপাদনকারীদের সচেতনতা বৃদ্ধি করার লক্ষে প্রতিটি গ্রামে গ্রামে ব্যাপক ভাবে প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, কেউ ভেজাল গুড় তৈরি করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।